আর কেউ যেন মবের হাতে মারা না যায়
- আপলোড সময় : ১৬-০৬-২০২৫ ০৬:৪৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-০৬-২০২৫ ০৬:৪৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যমতে, গত ১০ মাসে দেশের আটটি বিভাগে ১৭২ জন মানুষ মবের হাতে নিহত হয়েছেন। এগুলো নিছক জনরোষ নয়, এটি স্পষ্টতই এক ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- - যা সভ্য সমাজের জন্য একটি ভয়াবহ বার্তা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসানের মতেই, এই হত্যাকা-গুলো পরিকল্পিত এবং আইনের ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদ-ের শামিল অপরাধ। তবুও বারবার দেখা যাচ্ছে, জনতা ‘চোর’, ‘মাদককারবারি’ কিংবা ‘দলদ্রোহী’ অপবাদ দিয়ে মানুষকে হত্যা করছে। এদের অনেকের বিরুদ্ধে তো কোনো মামলাও ছিল না।
মব মানসিকতা কেবল একটি সমাজকে সহিংস করে তোলে না, বরং গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। তবে আশার আলোও কিছু রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকার ধানমন্ডি, সিলেট, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি স্থানে মব প্রতিরোধে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশের সদর দপ্তর থেকেও কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, এবং ৯৯৯-এ যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এসব পদক্ষেপ আরও সুসংহত, নিয়মিত ও কার্যকর হতে হবে।
আমরা মনে করি, এমন বর্বরতা বন্ধে শুধু আইন প্রয়োগ যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে। একই সঙ্গে গুজব ছড়ানো ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি, দ্রুত তথ্য যাচাই ও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যায় না’ - এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে পাঠ্যক্রম, ক্যাম্পেইন ও জনমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে।
সর্বোপরি, রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে- অপরাধী হোক যত শক্তিশালী, বিচার তার জন্যই হবে আদালতে, রাস্তায় নয়। পাশাপাশি প্রতিটি গণপিটুনির ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের প্রত্যাশা- দেশে আর কেউ যেন মবের হাতে মারা না যায়। সবাই যেন আইনের আশ্রয়ে নিরাপদে বাঁচতে পারে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ