হাওরবান্ধব বাজেট : সময়ের দাবি ও হাওরবাসীর প্রত্যাশা

বাংলাদেশের হাওরাঞ্চল বহু বছর ধরেই উন্নয়নের মূল স্রোতধারা থেকে পিছিয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জসহ বৃহত্তর হাওরাঞ্চলের মানুষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগসহ মৌলিক নাগরিক সেবায় এখনও বহু বাধা ও সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এমতাবস্থায় দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে ঘিরে হাওরবাসীর প্রত্যাশা এখন অনেক। দীর্ঘ ১৭ বছরের রাজনৈতিক পালাবদলের পর এবার প্রথমবারের মতো একটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রণীত বাজেটটি যেন হাওরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের বাস্তব সমস্যাগুলো নিরসনের দিকেই মনোযোগী হয় - এমনটাই প্রত্যাশা।
হাওরের কৃষকরা চাচ্ছেন ধানের ন্যায্য মূল্য, কৃষি উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং মাঠ থেকে খেতখামার পর্যন্ত যোগাযোগের টেকসই ব্যবস্থা। শিক্ষাবিদরা চাইছেন শিক্ষা খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ, অবকাঠামোর উন্নয়ন ও প্রযুক্তিসমর্থিত শিক্ষা পরিবেশ। চিকিৎসা খাতে রয়েছে চিকিৎসক ও ওষুধের সংকট, যার সমাধানে জরুরি বরাদ্দ প্রয়োজন। পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, হাওরের জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মৎস্যজীবীদের কল্যাণে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা প্রয়োজন।
এ অঞ্চলের মানুষের মতে, অতীতের বাজেট অনেক সময়ই ছিল দলীয় স্বার্থ, লুটপাট এবং দুর্নীতির ফাঁদে আবদ্ধ। এবার তারা চাইছেন একটি কার্যকর, স্বচ্ছ ও জনকল্যাণমূলক বাজেট- যেখানে হাওরের মানুষ বিশেষ গুরুত্ব পাবে। হাওরাঞ্চল জাতীয় অর্থনীতির টেকসই অগ্রগতির জন্য এক অনিবার্য অনুষঙ্গ। কারণ হাওর বাংলাদেশের খাদ্যশস্য, মৎস্যস¤পদ ও জলজ পরিবেশের এক গুরুত্বপূর্ণ ভা-ার।
আমরা আশা করি, আসন্ন বাজেটে হাওরাঞ্চলের জন্য থাকবে যথাযথ বরাদ্দ, সুপরিকল্পিত কর্মসূচি এবং বাস্তবায়নের কার্যকর রূপরেখা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য হাওরের উন্নয়ন একটি পরীক্ষার ক্ষেত্র - এখানে ব্যর্থতার সুযোগ নেই। হাওরবান্ধব বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই সরকার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে হাওরবাসীর প্রত্যাশা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ