সুনামগঞ্জ , রবিবার, ১১ মে ২০২৫ , ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সীমান্তে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে ভারত পূর্ব নির্ধারিত স্থানে সুবিপ্রবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ছাতক-দোয়ারাবাজারে লিচুর বাম্পার ফলন, চাষীদের মুখে হাসি জেলা জামায়াতের লিডারশীপ ট্রেনিং ক্যাম্প অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ সেলিনা হায়াৎ আইভী কারাগারে ধানের পর খড়ের জন্য কৃষকের ব্যস্ততা সংগ্রহ হবে আড়াইশ কোটি টাকার গো-খাদ্য সুরমা গিলছে বসতভিটা-কৃষিজমি আতঙ্কে মাছিমপুর গ্রামের মানুষ জামালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আনফর আলী গ্রেফতার হাওরের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী উদ্যোগ নেয়া হবে : যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল আরিফ আ.লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপি’র সদস্য হতে বাধা নেই : রিজভী দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিশ্বম্ভরপুর ইউএনও’র পদত্যাগ দাবিতে লংমার্চ হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে গেল স্বামী চলতি মাসে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশে ২৩টি মিটিং করেছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেলা পুলিশের কল্যাণ ও অপরাধ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত গোলা ভরে ধান তুলে স্বস্তিতে কৃষক সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত ও পাকিস্তান

ধানের পর খড়ের জন্য কৃষকের ব্যস্ততা সংগ্রহ হবে আড়াইশ কোটি টাকার গো-খাদ্য

  • আপলোড সময় : ১০-০৫-২০২৫ ০৩:১৮:৩৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৫-২০২৫ ০৩:১৮:৩৯ অপরাহ্ন
ধানের পর খড়ের জন্য কৃষকের ব্যস্ততা সংগ্রহ হবে আড়াইশ কোটি টাকার গো-খাদ্য
স্টাফ রিপোর্টার :: হাওরাঞ্চলের কৃষি ও কৃষক এখনও গৃহপালিত গবাদি পশুর ওপর নির্ভরশীল। যেমন বোরো ধান, তেমনি গরু-মহিষসহ গৃহপালিত পশুরাও তাদের মূল্যবান সম্পদ। তাই প্রতিবারের মতো এবারও ধান কাটার পাশাপাশি গো-খাদ্য (খড়) সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার লাখ লাখ কৃষক। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় প্রায় ৮ লাখ গবাদি পশুর জন্য হাওর থেকে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন খড় সংগ্রহ করছেন কৃষকরা, যার বাজারমূল্য প্রায় আড়াইশ কোটি টাকারও বেশি। হাওরাঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনও অনেক এলাকায় গরু-মহিষ দিয়ে চাষাবাদ, ধান মাড়াই ও পরিবহন কাজ চালানো হয়। পাশাপাশি কৃষাণীরা ছাগল ও ভেড়া পালন করে থাকেন, যা থেকে দুধ, মাংস ও জরুরি সময় অর্থনৈতিক সহায়তা পাওয়া যায়। বর্ষায় খড় না পাওয়ায় আগেভাগেই বছরের প্রয়োজনীয় গো-খাদ্য সংগ্রহে মনোযোগ দেন তারা। এবার ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ১০০০টি কম্বাইন হার্ভেস্টার ও ১৫০-২০০টি রিপার ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে ধান কাটা সহজ হলেও খড় সংগ্রহে বাড়তি শ্রম, সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। আগে শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে খলায় এনে মাড়াই করা হতো, তখন খড় সংগ্রহ সহজ ছিল। এখন মেশিনে মাড়াই করার পর খড় জমিতেই পড়ে থাকে, যা আবার শ্রমিক দিয়ে তুলতে হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, জেলায় প্রায় ৪ লাখ পরিবার বোরো চাষাবাদের সাথে জড়িত। এর মধ্যে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৭৭ জন কার্ডধারী কৃষক। জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ছোট বড় ১৩৭টি হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৫লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৫ হাজার ২ শত কোটি টাকার বেশি। আরও জানাগেছে, জেলায় স¤পূর্ণ ধান কাটা প্রায় শেষের পথে। তবে হার্ভেস্টারে ধান কাটতে গিয়ে প্রাকৃতিক গো-খাদ্য (খড়) সংগ্রহের সুযোগ পাননি কৃষক। তাই এখন গো-খাদ্য সংগ্রহ চলছে। হাওরপাড়ের বাসিন্দাগণ জানান, বর্ষার সময় প্রাকৃতিক খড় খাইয়ে চাষাবাদের গবাদিপশুকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। কোন কারণে হাওরের ফসল ডুবি হলে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দেয়। খরচার হাওর পাড়ের কৃষক শামীম মিয়া জানান, মেশিনে হাওরের গভীরেই ধান কেটে মাড়াই করে বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে খলায় নিয়ে আসায় ধান কাটার পর অবশিষ্ট অংশ (খড়) জমিতেই থেকে যায়, আনা হয়নি। পূর্বে ধান কেটে শ্রমিক, ট্রলি দিয়ে খলায় এনে মাড়াই করা হত এতে করে খড় আনার ঝামেলা ছিল না। এখন এই খড় শ্রমিক দিয়ে জমি থেকে আবার খলায় আনতে হচ্ছে। শনির হাওর পাড়ের কৃষক সাদেক আলী জানান, মেশিনের সাহায্যে হাওরের ধান কাটা ও মাড়াই সহজ হলেও খড় সংগ্রহ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। মেশিনে ধান কাটার পর নতুন করে শ্রমিক লাগিয়ে জমি থেকে খড় সংগ্রহ করায় একদিকে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয়, সেই সাথে খড়ের গুণও থাকছে না। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওমর ফারুক জানিয়েছেন, এ বছর ফলন ভাল হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। হাওরে ১৫ লক্ষধিক মেট্রিক টন উৎপাদিত ধানের মূল্য ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। জেলায় ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান এবং ৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চাল ঘরে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত ৯ মে পর্যন্ত ১৩ লক্ষ ৪ হাজার মেট্রিক টন ধান ও ৮ লক্ষ ৬০ হাজার ৮শত মেট্রিক টন চাল তোলা হয়ে গেছে। উৎপাদিত ধান থেকে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টনের বেশি চাল পাওয়া যাবে। যা স্থানীয় চাহিদার ৬ লাখ টন মিটিয়ে আরও ৩ লাখ টনের বেশি চাল উদ্বৃত্ত থাকবে। সুনামগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, জেলার হাওরপাড়ের কৃষকগণ নিজেদের খাবার ধান তোলার পাশাপাশি এবার ৫ লাখ মেট্রিক টন গবাদি পশুর খাবার খড় (যার মূল্য আড়াই কোটি টাকা) নির্বিঘেœ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকগণ চাহিদামত খড় সংগ্রহ করেছেন, যা দিয়ে বর্ষা মৌসুমে ৫ লক্ষাধিক গরু মহিষ, ১ লাখ ৩৫ হাজার ভেড়া ও ৫২ হাজার ছাগলসহ ১ লক্ষাধিক অন্যান্য গবাদি পশুর খাদ্যের চাহিদা মিটবে। আর খড় সংগ্রহ করতে আরও কিছু দিন তারা ব্যস্ত সময় পার করবেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স