তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিরসন প্রসঙ্গে
- আপলোড সময় : ২০-০৪-২০২৫ ১২:২৮:২০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২০-০৪-২০২৫ ১২:২৮:২০ পূর্বাহ্ন

সম্প্রতি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ অচিরেই হামলে পড়তে যাচ্ছে পৃথিবীর উপর, এই আশঙ্কায় কেউ কেউ রীতিমত আতঙ্কের অস্বস্তিতে কালযাপন করছেন। আপাতত বিশ্ব রাজনীতির বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে যুদ্ধের অনিবার্যতা নিয়েও কোনও সন্দেহের উদ্রেক হচ্ছে না। কারও কারও মতে আমেরিকার অতিসম্প্রতি ঘোষিত শুল্কনীতি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধেরই ইঙ্গিত বহন করছে।
যুদ্ধ সম্পর্কে সর্বজনের একটি জানা কথা হলো : রাষ্ট্র উদ্ভবের পর থেকেই রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক সম্পর্কের ইতিহাস সশস্ত্র সংঘর্ষ ও যুদ্ধের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য হয়ে আছে। ১৯৪৪ সালের এক হিসাব অনুযায়ী বিগত ৩৩৫৭ বছরের মধ্যে যুদ্ধসঙ্কুল ও শান্তিপূর্ণ বছরের সংখ্যা যথাক্রমে ৩১৩০ ও ২৫৭।
এবংবিধ তথ্যের ভিত্তিতে তৃতীয় বিশ^যুদ্ধের অনিবার্যতাই সতঃসিদ্ধতা লাভ করে। এই স্বঃসিদ্ধতার নির্গলিতার্থ এই যে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসলেই লাগনো হবে, হয় তো ফেরানো যাবে না, যেমন প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগানো হয়েছিল, ফেরানো যায় নি। কারণ যুদ্ধ হচ্ছে রাজনীতির চূড়ান্ত পর্যায়। বলা হয়, সহিংস উপায়ে রাজনীতিকে অব্যাহত রাখার নামান্তরই যুদ্ধ। পুঁজিতন্ত্রের অধীনে যুদ্ধটা শুরু করে এবং চালায় ক্ষমতাসীন শক্তি ও বিবিধ শ্রেণির রাজনীতিক প্রতিনিধিরা। তারা যুদ্ধ করে ও চালায় ইউক্রেনকে ভাগাভাগি করে নিতে কিংবা গাজাকে দখল করে নিয়ে তাতে বাগানবাড়িমতো বিলাসিতার স্বর্গভূমি বানাতে অনুপ্রাণিত হয়ে। এই অনুপ্রেরণা কোনও হাসপাতাল বানানোর মতো যে-কোনও মানবকল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কহীন। অথবা বিশ্বশান্তি ও জননিরাপত্তা এর মূলে কাজ করে না, কাজ করে অস্ত্র প্রয়োগের দ্বারা জাতিসত্তা নির্মূলের ও বিশ্বজুড়ে আধিপত্য বিস্তারে দানবিক মনোবাসনা চরিতার্থকরণে।
এবংবিধ রাজনীতিক কর্মকান্ড পুঁজিবাদের সাধারণ সঙ্কট বলে বিবেচিত হয়ে আসছে বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের ভাবনা-চিন্তায়। তাঁরা বলেন যে, যুদ্ধ হলো শোষণভিত্তিক যাবতীয় সামাজিক-আর্থনীতিক সংগঠনের নিত্যসঙ্গী।
সমাজ পরস্পরবিরোধী ও আপসহীন স্বার্থসংশ্লিষ্ট শ্রেণিসমূহে বিভাজিত এবং এই বিভাজন থেকেই বস্তুত যুদ্ধের উদ্ভব। সুতরাং শ্রেণি বিভাজনের রাজনীতিকে জিইয়ে রেখে, বিশ্ব জুড়ে বৈষম্যের বিস্তার ঘটিয়ে, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শত্রুতার নিরসন না করে কখনওই যুদ্ধকে প্রতিহত করা যাবে না, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ তাই অনিবার্য অথবা চলছে। কেউ কেউ তো চলছে বলেই অভিমত পোষণ করেন। তাই সর্বাগ্রে সমাজকে শ্রেণিহীন সমাজে রূপান্তরিত করতে হবে। অন্যথায় ট্রাম্পের শুল্কনীতি বিশ্ব অর্থনীতিকে যুদ্ধের অর্থনীতিতে পর্যবসিত করবেই। ফেরানো যাবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ