সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫ , ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হাওরের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী উদ্যোগ নেয়া হবে : যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল আরিফ আ.লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপি’র সদস্য হতে বাধা নেই : রিজভী দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিশ্বম্ভরপুর ইউএনও’র পদত্যাগ দাবিতে লংমার্চ হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে গেল স্বামী চলতি মাসে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশে ২৩টি মিটিং করেছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেলা পুলিশের কল্যাণ ও অপরাধ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত গোলা ভরে ধান তুলে স্বস্তিতে কৃষক সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত ও পাকিস্তান অত্যন্ত বিনয়ী মানুষ ছিল মুবিন শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণসহ ১১দফা দাবিতে স্মারকলিপি নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের শুনানি ১৩ মে ঈদে টানা ১০ দিন ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি, বেসরকারি অফিসও বন্ধ দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া, বিএনপি দেখাল শক্তি-সমর্থন জুবাইদার ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান জামালগঞ্জ-জয়নগর সড়ক এক যুগেও সংস্কার হয়নি : দুর্ভোগে লাখো মানুষ মাদকাসক্ত যুবকের ছুরিকাঘাতে প্রতিবেশী খুন এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ : দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু

ধর্ষণ’কে ‘ধর্ষণ’ই বলতে হবে

  • আপলোড সময় : ১৮-০৩-২০২৫ ০৪:২৯:৪১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০৩-২০২৫ ০৪:২৯:৪১ পূর্বাহ্ন
ধর্ষণ’কে ‘ধর্ষণ’ই বলতে হবে
আমাদের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। সাংবাদিকদেরকে তিনি ‘ধর্ষণ’ শব্দের বদলে ‘নারী নির্যাতন’ বা ‘নারী নিপীড়ন’ লেখার সদুপদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি যেসব ঘটনা জনমনে আতঙ্ক বা ভয় সৃষ্টি করে তা কম দেখানোর অনুরোধ করতেও ভুলেন নি। বলেছেন, ‘এটা আপনারা করবেন, আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব।’ তবেই নাকি বিষয়টিকে ‘একটু রিজনেবল” করে দেখানো যায়।’ অর্থাৎ ‘ধর্ষণ’ শব্দটির ব্যবহার ভাবপ্রকাশের ক্ষেত্রে ‘যুক্তিসঙ্গত’ নয়। একই বলে প্রশাসনিক বৈয়াকরণত্ব। এইভাবে ‘যুক্তিসঙ্গতি’র মোহে বুঁদ হয়ে থেকে কাঠামোগত সহিংসতাকে বরদাস্ত করে নিলেই সমাজ আপাদমস্তক ভয় এবং আতঙ্ক মুক্ত হয়ে উঠবে। এর নির্গলিতার্থ এটাই যে, ভয় ও আতঙ্ক গ্রস্ত হয়ে উঠার মতো বীভৎস যতোসব কা- সমাজ পরিসরে ক্রমাগত ঘটতে থাকবে কিন্তু সমাজসদস্য কাউকেই ভীত ও আতঙ্কিত হওয়া চলবে না। কিন্তু, সম্ভবত প্রশাসক হিসেবে তিনি ভয় ও আতঙ্কের উৎস ‘ধর্ষণ’ বা অন্যবিধ নির্যাতন, নিপীড়ন উৎখাতে কোনও কার্যকর ভূমিকা রাখতেও যথারীতি অপারগ হবেন, তাঁর পূর্বসূরিদের মতো। এই পরিপ্রেক্ষিতে সমাজসদস্যদের দায়িত্ব হলো, ঝড় আসতে দেখে আতঙ্কিত উট পাখির মতো মাথা মরুভূমির বালির ভেতরে গোঁজে দিয়ে স্থবির ঠোঁটুজগন্নাথ হয়ে থাকা। দেখতে না পেলে ঝড় বিলীন হয়ে যায়, উটপাখির এমন দর্শন মানুষের জন্য আসলেই ‘চমৎকার’ একটি দর্শন। একবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের সিঁড়ি ডিঙ্গানোর সময়েও এবংবিধ প্রশাসনিক দর্শনচর্চার মধ্যে একটা আমলাতান্ত্রিক চমৎকারিত্ব আছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ইংরেজি ‘রিজনেবল’ শব্দটার ব্যবহারে তাঁর সে চমৎকারিত্ব আরও বেশি করে প্রকটিত হয়েছে। ‘চকার’ কিংবা ‘মকার’ সহযোগে অর্থাৎ খাস বাংলায় না বলে ‘ইন্টারকোর্স’ ও ‘রেপ’ বলার মতো, যাকে বলে, বাংলায় উপজিত লজ্জাকে আড়াল করে ইংরেজিতে উপজিত নির্লজ্জ হয়ে উঠা। একেই বলে ‘রিজনেবল’-এর চামৎকারিত্ব, থুড়ি ‘যুক্তিসঙ্গতি’। এ প্রসঙ্গে বিদগ্ধজনের অভিমত এই যে, ‘ধর্ষণ’ শব্দটি বাংলা অভিধান থেকে বাদ দিলে অথবা ‘ধর্ষণ’ শব্দটির ব্যবহার রহিত করলে যদি ‘ধর্ষণ’ অর্থে ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী অথবা প্রাপ্তবয়স্ক অসম্মত নারীর সঙ্গে পুরুষ কর্তৃক বলপ্রয়োগে যৌনসঙ্গম’-এর ঘটনা আর না ঘটে, তবে ‘ধর্ষণ’ শব্দটি বাংলা ভাষা থেকে বাদ দেওয়া যায়, অন্যথায় নয়। কারণ, ধর্ষণ শব্দটি ব্যবহার বহির্ভূত করে দিলে সমাজপরিসরে ধর্ষণ বন্ধ হয়ে যাবে না। প্রতিষ্ঠিত এই জঘন্য পুরুষতান্ত্রিক সমাজ অপরাধটি করতেই থাকবে। সমাজে ধর্ষক থাকবে ও ধর্ষণ চলবেই। অথচ এই জঘন্য অপরাধটিকে ‘নারী নির্যাতন’-এর মুখোশ পরিয়ে পলকে ও হালকা করে দেখানোর নিহিতার্থ আপরাধীকে আরও বেশি করে অপরাধ করতে উৎসাহিত করা ভিন্ন অন্য কীছু হতেই পারে না। এমন হলে, এবন প্রকার অবিমৃষ্যকারিতাকে বরদাস্ত করার কোনও সার্থকতা নেই, বরং সেটা প্রতারণা ও ভ-ামির নামান্তর। সুতরাং ধর্ষককে ধর্ষক এবং ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে এবং তার প্রতিষ্ঠিত অর্থও বদলে যাবে না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স