সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫ , ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দুর্ঘটনার ঝুঁকি, যাত্রীবাহী বাসে ভারী পণ্য পরিবহন! ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষের দাবি প্রত্যাখ্যান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৩ ছাতকে দুই জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় নতুন দেশ গড়তে হবে : জামায়াত আমির ফাঁসি চাই বলে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল শাহবাগীরা : শিবির সভাপতি বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের কাঁচা ধান কেটে নেয়ার অভিযোগ টাঙ্গুয়ার হাওরে অযত্নে মরছে বন বিভাগের বৃক্ষ সিলেটে চিকিৎসকদের কমপ্লিট শাটডাউন, ব্যাহত চিকিৎসাসেবা জামালগঞ্জে যৌথবাহিনীর তৎপরতা লুটপাট থেকে রক্ষা পেল জলমহালের মাছ ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে সভা পবিত্র রমজান হচ্ছে, ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম, জামায়াতের আমির তোফায়েল খান ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব : এসপি তোফায়েল আহাম্মেদ জামালগঞ্জের বড়চাটুয়া গ্রুপ জলমহাল ইজারাদারের ‘কৌশলে’ জলমহালের সর্বনাশ আগামী ১৫ মার্চ ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কিশোরীকে দুই দফা ধর্ষণ, ইমাম গ্রেফতার সিরিয়ায় বাড়ি-ঘরে ঢুকে হত্যা, মাঠে পড়ে আছে মরদেহ

হোলি ও দোলযাত্রার ইতিহাস ও তাৎপর্য

  • আপলোড সময় : ১২-০৩-২০২৫ ১০:১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০৩-২০২৫ ১০:১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
হোলি ও দোলযাত্রার ইতিহাস ও তাৎপর্য
এস ডি সুব্রত দোলপূর্ণিমা বা হোলি রঙের উৎসব তথা আনন্দ উদযাপনের উৎসব। হোলি একটি সনাতনী উৎসব যা ভারতের প্রতিটি অংশে অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে উদযাপন করা হয়। হোলির দিনে মানুষ তাদের বন্ধুদের এবং পরিবারের সাথে রং খেলে এবং সন্ধ্যায় আবির মাখিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। হোলি এবং দোলযাত্রা অনুষ্ঠান একসাথে পর পর দুদিন সারা ভারতবর্ষে উদযাপন করা হলেও দুটি উৎসবের আলাদা মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য রয়েছে। হোলি সাধারণত সারা ভারতবর্ষে ও নেপালে খেলা হয় আর তার ঠিক একদিন আগে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ, আসাম ও ওড়িশায় পালন করা হয় দোল পূর্ণিমা উৎসব। দুটো উৎসব পালন করার যেমন কিছু মিল আছে, আবার তেমনি আছে বেশ কিছু অমিল। দোলযাত্রার ইতিহাস নিয়ে প্রথমে আলোচনা করছি। দোল পূর্ণিমার দিনটি শ্রীকৃষ্ণের জন্য উৎসর্গকৃত। দোলপূর্ণিমাকে মনে করা হয় রাধা এবং কৃষ্ণের দিন। এই দিন কৃষ্ণ তার রাধার প্রতি ভালবাসা নিবেদন করেন। দোলযাত্রার সময়টা সাধারণত পূর্ণিমার দিন দেখেই নির্ধারণ করা হয় বলে এটি দোলপূর্ণিমা বলেও জানা যায়। এই দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে চলে লক্ষ্মী ও নারায়ণ পুজো। ফুল আর আবিরের খেলা চলে নানা জায়গায় এবং সাথে থাকে শ্রীকৃষ্ণের গান ও পালা। এটা বাঙালিদের মধ্যে “বসন্ত উৎসব” হিসেবেও পরিচিত। বসন্ত উৎসবটি নোবেল বিজয়ী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শান্তিনিকেতনে শুরু করেছিলেন। দোলপূর্ণিমা বাঙালিদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটিই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মদিন। তিনি রাধা ও কৃষ্ণের আবেগ ও প্রেমকে এক অনন্য আধ্যাত্মিক মর্যাদা দান করেছেন। সাধারণ লোকজন ওই দিন ন্যাড়াপোড়া ও হরির লুটের আয়োজন করেন এবং ভাবেন ওই ন্যাড়াপোড়ার মধ্য দিনে সকল অশুভ শক্তিকে তারা শেষ করে দিচ্ছেন। দেউলের দ্বিতীয় দিন ভোর-দেউল নামে পরিচিত - যার প্রধান অর্থ দোল। ভোর দেউল চৈত্রমাসে একদিনের জন্য এবং ফালগুন মাসে তিনদিনের জন্য পালিত হয়। দোল পূর্ণিমার শেষ ও চতুর্থ দিনটি সুরি নামে পরিচিত। সেই দিন, ভগবান কৃষ্ণ ঘুনুচের ঘর থেকে মা লক্ষ্মীর ঘরে ফিরে যান। বৈষ্ণবেরা খোল করতাল বাজিয়ে কীর্তন করেন, আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে দেন বিভিন্ন রঙের আবির। বলা হয় , যখন কৃষ্ণকে নিয়ে অনুগামীদের মিছিল মা লক্ষ্মীর দুয়ারে পৌঁছায়, মা লক্ষ্মী বাঁশ নিয়ে গেট রুখে দাঁড়ান, কারণ তিনি কৃষ্ণের ওপর রাগান্বিত হয়েছিলেন, কারণ তিনি এই দিনগুলোতে ঘুনুছের স্থানে অবস্থান করেছিলেন। কিন্তু মা লক্ষ্মীর শত চেষ্টা ব্যর্থ করে, শ্রীকৃষ্ণ ভেতরে প্রবেশ করেন এবং কীর্তন ঘরের সাত বার পরিক্রমণ করেন। এরপর সাথে আনা মণি মুক্ত স¤পদ দিয়ে মা লক্ষ্মীর মান ভাঙান। এই দিন শেষ হয় দোল উৎসব। এবার আলোচনা করা যাক হোলি উৎসব নিয়ে। হোলি উৎসব ভারতের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে পালিত হয়। এটি কখনও কখনও “প্রেমের উৎসব” হিসাবেও পরিচিত হয়। হোলির দিনে লোকেরা একে অপরের প্রতি ক্ষোভ ও খারাপ অনুভূতি ভুলে একত্রিত হয়। ভারতীয় উৎসব একটি দিন ও রাতের জন্য স্থায়ী হয়, যা ফালগুন মাসে পূর্ণিমা বা পূর্ণ চাঁদ দিবসে শুরু হয়। উৎসবের প্রথম সন্ধ্যায় হোলিকা দহন নামে এটি উদযাপন করা হয়। হোলি উৎসবের আগের দিন সন্ধ্যেতে শুরু হয় হোলিকা দহন। যেখানে মানুষ একত্রিত হয়ে অগ্নিকু-র চারিপাশে পূজা করে ও প্রার্থনা করেন নিজের ভেতরের অশুভ শক্তি থেকে মুক্তির জন্য। ঠিক যেভাবে, হোলিকা, হিরণ্যকিশিপুর বোন অগ্নিকু-ে নিজের জীবন ত্যাগ করেন। হিন্দু ধর্মমত অনুসারে, হোলি উৎসব হোলিকা নামক এক অশুভ শক্তিকে বিনাশের এক উৎসব। যেখানে ভগবান বিষ্ণু, প্রলহাদকে বাঁচাতে হোলিকাকে বধ করেন। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে শুভ শক্তির জয় ও অশুভ শক্তির হার মনে করা হয়। তাই ভক্তরা অগ্নিকু-ের এক একটি কাঠ প্রদান করেন, প্রসাদ বিতরণ হয় ও হোলিকা দহন এর পর নাচ-গানের অনুষ্ঠানও হয়। কথিত আছে, হোলিকাকে ব্রহ্মা বর প্রদান করেন যে, সে আগুনের মধ্যে গেলেও তার কোনো ক্ষতি হবে না। হিরণ্যকশপু বলে এক রাজা তাঁর রাজ্যে কেবল তাঁরই উপাসনা চেয়েছিলেন, কিন্তু তার পুত্র প্রলহাদ, ভগবান বিষ্ণু অর্থাৎ নারায়ণের ভক্ত ছিলেন। সেই কারণে তিনি নিজের পুত্রকে অনেক বার মেরে ফেলার চেষ্টা করেও সফল হননি। তখন তিনি নিজের বোন হোলিকাকে আদেশ দেন প্রলহাদকে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করতে। হোলিকা ভেবেছিলো, তার বর আছে যেহেতু তার কোনো ক্ষতি হবে না, কিন্তু সে এ জানতো না, তার এই বর শুধুমাত্র তখনই কাজ করবে যখন সে একা আগুনে প্রবেশ করবে। তার কাছে ব্রহ্মা প্রদত্ত একটি শাল ছিল, যেটা পরিধান করলে তাকে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু আগুনে প্রবেশের সাথে সাথেই প্রলহাদ, ভগবান বিষ্ণুর প্রার্থনা শুরু করেন এবং ভগবান বিষ্ণু প্রলহাদকে বাঁচিয়ে নেন এবং হোলিকা আগুনে ভস্ম হয়ে যান। হোলি উৎসবকে শ্রীকৃষ্ণর মহিমা ও বলা হয়ে থাকে। যা ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে উদ্ভূত, প্রধানত ভারত ও নেপালের মধ্যে উদযাপন করা হয়, তবে এটি এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে এবং পশ্চিম বিশ্বের বিভিন্ন অংশেও আজ ছড়িয়ে পড়েছে। লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
দুর্ঘটনার ঝুঁকি, যাত্রীবাহী বাসে ভারী পণ্য পরিবহন!

দুর্ঘটনার ঝুঁকি, যাত্রীবাহী বাসে ভারী পণ্য পরিবহন!