জানমাল ও সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা
সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার :: জানমাল ও সহায়-সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধানে প্রধান উপদেষ্টার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করে সুনামগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম বাজারস্থ দৈনিক সুনামগঞ্জ প্রতিদিন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ ছামছুন নাহার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে আমার সন্তানদের নামে আমাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর মৌজার ৮৯ নং এসএ জেএলস্থিত, ১২৬ নং খতিয়ানের ১২৮/১ নং দাগভুক্ত সাড়ে ১৬ শতক জমি ৫০ টাকার ৪টি ননজুডিসিয়াল স্টাম্পে পূর্বের ক্রেতা আঃ মালিকের কাছ থেকে বায়নাপত্র সম্পাদন করি। ২০২০ সালে আমার মেয়ে সেবিনা ইয়াছমিন, স্বপ্না আক্তার ও ছেলে শহিদুল ইসলাম এবং নাতি সেলিম মাহবুব মামুনের নামে যথারীতি ২৫৮২/২০, ২৫৬৯/২০ ও ২২৫৫/২১ নং দলিল রেজিস্ট্রির পর থেকে ঐ জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০২১ সালে এরুয়াখাই গ্রামের মোস্তফা মিয়ার পুত্র আবুল কাশেম ও তার সহযোগীরা জাল পরচা ও ভুয়া দলিল সংগ্রহ করে আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা তার দাবি করে আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে। জাল পরচা ও ভুয়া দলিল সংগ্রহকারী আবুল কাশেম গংদের বিরুদ্ধে আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দোয়ারাবাজার জোনে বাংলাদেশ দন্ড বিধির ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯/৪৪৭/৩২৩/৩৫৪/৪২৭/৫০৬ ধারায় সিআর ২১৮/২১ (দোয়ারাবাজার) মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কাছে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ২৩/১১/২০২১ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে বিবাদী আবুল কাশেম গংদের বিরুদ্ধে একখানা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে বিবাদীদের বিরুদ্ধে পরচা ও দলিল জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপরও আবুল কাশেম মুরাদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানকে আমাদের জায়গা তার দাবি করে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একখানা কাগজ করে দেয়। সেই সূত্রে হাবিবুর রহমানও আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় আবুল কাশেমের সহযোগী হাবিব ও তার দোসররা কোর্ট, থানা ও ভূমি অফিসে এ পর্যন্ত ১০/১২টি কাউন্টার হয়রানিমূলক মামলা ও অভিযোগ দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করে যাচ্ছে। দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমি ৬৫ বছরের একজন বৃদ্ধ মহিলা, হাসপাতালে কর্মরত আমার মেয়ে স্বাস্থ্যসেবিকা স্বপ্না আক্তারসহ আমার পরিবারের নিরীহ নারী ও অসুস্থ পুরুষদেরকে কাউন্টার মিথ্যা মামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ছামছুন নাহার আরো বলেন, বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন থাকাবস্থায় দলিল জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলার আসামি আবুল কাশেম জাল আরএস খতিয়ান দিয়ে বিএনপি নেতা আব্দুল বারী, হাবিবুর রহমান ও নাজিম উদ্দিনগং দের ক্রেতা সাজিয়ে অতি সম্প্রতি ২২/২০২৫ নং দলিল সম্পাদন করে আমাদের পূর্বের ক্রয়কৃত ও দীর্ঘদিনের ভোগদখলকৃত ৫ শতক জায়গা জোরপূর্বক অবৈধ দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা পিবিআই এর তদন্তে প্রমাণিত জাল পরচা দিয়ে দলিল সৃজনের অভিযোগে আবারও চিহ্নিত চক্রের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতের দ্বারস্থ হবো। ছামছুন নাহার বলেন, বেআইনী দখলবাজির প্রতিবাদ করায় ফারুক মিয়া জোরপূর্বকভাবে আমাদের জায়গা দখল করে গত ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে আমি ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে এবং অপপ্রচার চালায়। এরই অংশ হিসেবে আমার বিরুদ্ধে “দোয়ারাবাজারে ভূমিখেকো নারীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন” শিরোনামে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন কল্পকাহিনী সাজিয়ে এমনকি আমাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আওয়ামী লীগের তকমা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন ওয়েবপোর্টালে গুজব ছড়ায়। কিন্তু আমি বা আমার পরিবারের কেউ কখনও আওয়ামী লীগ করিনি, বর্তমানেও আমরা রাজনীতির সাথে জড়িত নই। আমরা তাদের কবল থেকে আমাদের সম্পত্তি রক্ষার জন্য বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে (দোয়ারাবাজার) স্বত্ত মামলা নং ১৪১/২০২১ এবং স্বত্ত মামলা নং ০২/২০২৫ দায়ের করে আইনগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। তারপরও আবুল কাশেম পিতা মোস্তফা মিয়া এরুয়াখাই, হাবিবুর রহমান পিতা লালা মিয়া, নাজিম উদ্দিন পিতা মৃত জমির আলী, ফারুক মিয়া পিতা মৃত মঞ্জুর আলী সাং মুরাদপুর, গুরুদাস দে ও কমলকান্ত দে উভয়ের পিতা মৃত রবীন্দ্র কুমার দে, সাং : দোয়ারাবাজার, মেহেদী হাসান পিতা কামাল পাশা, সাং : পশ্চিম মাছিমপুর, আব্দুল বারী পিতা বশির আলী, সাং নৈনগাও, ইমন উদ্দিন পিতা সাফি উদ্দিন, সাং টেংরাটিলা, সর্বথানা : দোয়ারাবাজার, জেলা সুনামগঞ্জগং বর্তমানে আমাদের সহায় সম্পত্তি আগ্রাসন ও জানমালের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত রয়েছে। তাদের কবল থেকে আমাদের জানমাল ও সহায় সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধানের জন্য আমরা সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ