সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ বইমেলা আমাদের সংস্কৃতি আর জ্ঞানের প্রতীক- জেলা প্রশাসক ২০১৮ সালে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ৩৩ ডিসিকে ওএসডি বিএনপির বর্ধিত সভা এবার সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের পরিকল্পনা সভা আল-আকসা কিন্ডারগার্টেন উদ্বোধন সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসনাত কাওসার গ্রেফতার শিক্ষকের মারধরে ছাত্র আহত অ্যাড. নূরুল ইসলামের সমর্থনে প্রচার সভা ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ এখনো অনেক কাজ বাকি এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে! জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন জগন্নাথপুরে ৩ দোকান থেকে নগদ অর্থসহ অর্ধকোটি টাকার মোবাইল চুরি মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধের দাবি জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে রাণীগঞ্জ মাদ্রাসায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন চালু : স্বল্প মূল্যে সেবা পাবেন রোগীরা ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার
ভালো নেই শহীদ হৃদয় মিয়ার পরিবার

ঘুম ভাঙলেই বাবার জন্য কান্না করে দুই অবুঝ শিশু

  • আপলোড সময় : ১৮-০২-২০২৫ ০৯:৩৭:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০২-২০২৫ ১০:১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
ঘুম ভাঙলেই বাবার জন্য কান্না করে দুই অবুঝ শিশু
শহীদনূর আহমেদ ::
নুসরাতের বয়স মাত্র দেড় বছর আর আব্দুল্লাহ’র সাড়ে তিন। এতোটুকু বয়সে বাবাহারা এই অবুঝ দুই শিশু। রোজ রাতে বিছানায় বাবার অপেক্ষায় থাকে তারা। বাবার সাথে ঘুমাতে চায় দু’জনই। সকালে ঘুম ভাঙলে বাবাকে না পেয়ে রোজই কান্না করে এই এতিম ভাইবোন। বলছিলাম জুলাই বিপ্লবে পুলিশের গুলিতে শহীদ হওয়া শহীদ হৃদয় মিয়ার অবুঝ সন্তান নুসরাত ও আব্দুল্লাহ’র কথা। বাবাহারা সন্তানদের একমাত্র সঙ্গী অসহায় মা শিরিনা আক্তার। স্বামীকে হারিয়ে দুই শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে এই নারী। স্বামী কিংবা বাবার বাড়িতে আর্থিক সক্ষমতা না থাকা শিশু সন্তানদের ভরনপোষণ ও ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার।

২০ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ মোড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে নিহত হন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের হৃদয় মিয়া। তিনি এলাকার ছফেদ আলীর ছেলে ছিলেন।
জানা যায়, বাবা-মায়ের দাম্পত্য দ্বন্দ্বের কারণে ছোটবেলা থেকে নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকায় নানীর কাছেই থাকতেন হৃদয়। ২০২০ সালে ভালোবেসে শিরিনা আক্তারকে বিয়ে করেন। পেশায় সিলিং মিস্ত্রি হৃদয় মিয়া দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করছিলেন।
ঘটনার দিন সকালে কাজের সন্ধানে ঘর থেকে বের হলেও রাতে ফিরেন লাশ হয়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন বিকাল ৫টার দিকে বাসায় ফিরছিলেন হৃদয়। আসার পথে সিদ্ধিরগঞ্জ মোড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন।
​​​​এসময় বিপরীত পাশ থেকে ছোঁড়া পুলিশের গুলি এসে লাগে হৃদয়ের কপালে। তৎক্ষণাৎ সড়কে লুটিয়ে পড়েন হৃদয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে নিয়ে আসলে বাঁচানো যায়নি তাকে। পুলিশের ভয়ে প্রতিবেশীরা রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কবরস্থানে তাকে দাফন করেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হৃদয়কে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তার স্ত্রী শিরিনা আক্তার। স্বামীর মৃত্যুর পর বাবার ভাড়া বাসায় উঠলেও অসুস্থ বাবার পরিবারে যেন বোঝা হয়ে রয়েছেন। কোনো উপার্জন না থাকায় অভাব-অনটনে দিন কাটছে তার। এছাড়া বাবাকে দেখতে প্রতিদিন আবদার করে সন্তানরা। চায় মজাদার খাবার। অবুঝ সন্তানদের আবদার মেটাতে না পারায় কষ্টের শেষ নেই শিরিনার। শহীদ হৃদয়ের স্ত্রী শিরিনা আক্তার বলেন, আমার স্বামীর কলিজা ছিল তাঁর দুই সন্তান। প্রতিদিন কাজ থেকে ফেরার সময় তাদের জন্য ফলমূলসহ মজাদার খাবার নিয়ে আসতো। ছেলেমেয়েকে বুকে জড়িয়ে ঘুমাতেন। আমার ছেলে রাতে এখনো বাবার অপেক্ষা করে। বার জিজ্ঞাসা করে বাবা কবে আসবে। সকাল ঘুম থেকে উঠলে বাবাকে দেখতে চায় তারা। আমি এই কষ্ট আর নিতে পারছি না। তিনি বলেন, হৃদয়ের পরিবারে তেমন কেউ নেই। আমার বাবার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। দুই সন্তানকে নিয়ে আমি অকূল সাগরের মধ্যে আছি। হৃদয়কে হারিয়ে আমি বড় অসহায়। আমার আর্থিক কোনো সংস্থান নেই। ছোট ছোট বাচ্চাকে রেখে কোথায় কাজ করবো। কি করে বাকি দিনগুলো পার করবো সেই চিন্তায় রাতদিন কাটে না। এদিকে শহীদ হৃদয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সরকার সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। সুনামগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা উসমান গণী বলেন, শহীদ হৃদয় দেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। সরকারকে অবশ্যই হৃদয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। হৃদয়ের পরিবার খুব মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা সব সময় তাঁর খোঁজখবর নিচ্ছি। সামর্থ্য অনুযায়ী পাশে থাকছি। আমরা দাবি করবো হৃদয়ের মতো সুনামগঞ্জের যে বাসিন্দারা আহত অথবা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে স্থায়ী পুনর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসবে সরকার। অপরদিকে, শহীদ হৃদয়ের পরিবারকে ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
পরবর্তী সরকারি সকল সহযোগিতার আওতায় হৃদয়ের পরিবারকে আনার আশ্বাসের কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ

গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ