সুনামগঞ্জ , রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
খেলাফত মজলিসের জেলা কমিটি গঠন গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ বইমেলা আমাদের সংস্কৃতি আর জ্ঞানের প্রতীক- জেলা প্রশাসক ২০১৮ সালে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ৩৩ ডিসিকে ওএসডি বিএনপির বর্ধিত সভা এবার সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের পরিকল্পনা সভা আল-আকসা কিন্ডারগার্টেন উদ্বোধন সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসনাত কাওসার গ্রেফতার শিক্ষকের মারধরে ছাত্র আহত অ্যাড. নূরুল ইসলামের সমর্থনে প্রচার সভা ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ এখনো অনেক কাজ বাকি এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে! জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন জগন্নাথপুরে ৩ দোকান থেকে নগদ অর্থসহ অর্ধকোটি টাকার মোবাইল চুরি মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধের দাবি জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে রাণীগঞ্জ মাদ্রাসায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন চালু : স্বল্প মূল্যে সেবা পাবেন রোগীরা ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

শান্তিগঞ্জে পলিমাটিতে ভরাট জলমহাল সেচ সংকটে বিপাকে কৃষক

  • আপলোড সময় : ১৭-০২-২০২৫ ০৮:০২:০৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০২-২০২৫ ০৮:০২:০৬ পূর্বাহ্ন
শান্তিগঞ্জে পলিমাটিতে ভরাট জলমহাল  সেচ সংকটে বিপাকে কৃষক
হোসাইন আহমদ :: শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের জীবদাড়া বাজারের দক্ষিণের হাওরের কয়েক শত হেক্টর বোরো জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে ফেটে গেছে ফসলি জমি। এতে বোরো আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। তারা জানান, হাওরের জলমহাল পলিমাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে স্বল্প সময়ে জলমহালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জমিতে সেচ করা যাচ্ছে না। স্থানীয় কৃষকরা আরো জানান, সেচের ব্যবস্থা না থাকায় এবং চলতি মৌসুমে হুমকির মুখে পড়েছে কয়েক শত হেক্টর বোরো জমির ফসল। স্থানীয়রা বলছেন, হাওরের জলমহালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই হাওরে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। জলমহালগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে খনন না করলে আগামীতে এই হাওরের ফসলি জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়বে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিমুলবাক ইউনিয়নের উকারগাঁও মৌজার এসএ জেল নং-১৪৫, আরএস জেএল নং-০৫, ২৭৬ নং দাগে মোট ১৩.৩০ একর নিয়ে সুরাইয়া বিল জলমহালটি বিদ্যমান রয়েছে। ০৫/০৯/২০২৩ ইং তারিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ৮৯৪ নং স্মারকে জলমহালটি ১৪৩০-১৪৩২ বাংলা সনের জন্য জীবদাড়া আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জীবদাড়া বাজারের দক্ষিণের হাওরজুড়ে কয়েকশত হেক্টর জমিতে বোরো ফসলের মাঠ, সবুজ রঙের ধান গাছগুলো বাতাসে দুল খাচ্ছে। বিস্তীর্ণ হাওরজুড়ে বোরো ফসল রোপণ করেছেন কৃষকরা। তবে জমিতে চরম সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। হাওরের মধ্যখানে ‘সুরাইয়া বিল’ জলমহালটিতে কোন পানি নাই, বিল আর জমি চেনা বড় দায়? বিলটি হাওরের পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। তাই জমি ও জলমহাল একেবারেই সমান্তরাল হয়ে গেছে। কোথাও পানি নেই, যা পানি ছিলো তা, কৃষকরা ব্যবহার করে ফেলেছেন গত কয়েকদিনে। অপরদিকে, সুরাইয়া বিল জলমহালের সমিতির লোকজন কিছু কিছু জায়গায় নিজ উদ্যোগে খনন করে ডোবা তৈরি করছেন, তবে সেটি খুবই সীমিত। জলমহালটির বিগত বছরগুলোতে সমিতির লোকজন যে কয়েকটি ডোবা তৈরি করেছিলেন তার অধিকাংশই ভরাট হয়ে গেছে। আর যেগুলোতে কিছুটা পানি ছিলো সেগুলো একেবারেই শুকিয়ে গেছে। হাওরের কৃষক মো. এনামুল হক জানান, এই হাওরের আমার অনেক জমি আছে। নিজে অনেক ব্যয় করে জমিগুলো চাষাবাদ করেছি। এখন আমাদের হাওরে চরম সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের হাওরের সুরাইয়া বিল জলমহালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এই হাওরের কৃষি জমিগুলো বাঁচাতে সুরাইয়া বিল জলমহালটি খনন করতে হবে। বিলের ইজারাদাররাও প্রতি বছর খনন করেন। তবে এটি খুবই সামান্য। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপকভাবে এই জলমহালটি খনন করা হলে, একদিকে কৃষি জমিও বাঁচবে, অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। জীবদাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল মিয়া জানান, জলমহলটি একেবারেই ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের জমি আর বিল সমান্তরাল হয়ে গেছে। এইবছর বৃষ্টি না হলে আমাদের রোপণকৃত ফসল ঘরে তোলা অনিশ্চিত। হাওরের এই জলমহালটি খনন করা হলে, আমাদের জমিতে ধান ফলাতে পারবো, না হয় আগামীতে এই হাওরের সব জমিই অনাবাদি থেকে যাবে। গ্রামের লোকজন এই বিলটি ইজারা নিয়েছেন, ভরাট হওয়ার কারণে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিলটি খনন করলে সরকার ও কৃষকের লাভ হবে। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে আর কৃষকরা সোনালী ফসল ফলাতে পারবেন। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, এই জলমহালটি যেন খুব দ্রুত খনন করা হয়। সুরাইয়া বিল জলমাহালের ইজারাদার জীবদাড়া আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সাজিরুল ইসলাম জানান, বোরো মৌসুমের শুরুতেই হাওরের কৃষকরা আমাদের বিলের পানি দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। কিন্তু জলমহালটি একেবারেই ভরাট হয়ে গেছে। আমরা প্রতি বছরই নিজেদের অর্থে বিলের কিছু কিছু অংশ খনন করে ডোবা তৈরি করি। কিন্তু এটায় কুলায় না। বৃহৎভাবে এই জলমহালটি খনন করা প্রয়োজন। বিলটি ইজারা এনে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। খনন করলে সরকারেরও রাজস্ব আয় বাড়বে। বিলেও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ থাকবে। কৃষরাও ফসলী জমিতে চাষাবাদ করতে পারবেন। চলতি বছরেও আমরা এই বিলে পানি ধরে রাখার জন্য আমাদের সীমানায় একটি বাঁধ নির্মাণ করছি। সম্পূর্ণ আমাদের টাকায় সেটি বাস্তবায়ন করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, এই হাওরের আমাদের প্রচুর পরিমাণে বোরো জমি চাষাবাদ হয়েছে। এখান সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অবহিত করবো, সেই সাথে সেচ সংকট নিরসনের জন্য বিএডিসিকেও অবগত করবো। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অজ্যন করতে হলে নির্বিঘেœ বোরো চাষাবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সুকান্ত সাহা জানান, বিলটি ভরাট হওয়ার ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত আবেদন করেননি। তবে প্রতিটি জলমহালই খনন করা প্রয়োজন। এলাকার লোকজন বিলটি খননের জন্য আবেদন করলে আমরা তা যাচাই-বাছাই করে খননের জন্য অনুমতি দিতে পারবো বা কোন প্রকল্পের মাধ্যমে সেটি খনন করাতে পারবো। সবার আগে আমাদের কৃষিকে বাঁচাতে হবে। সরকারও সেদিকে খুবই আন্তরিক।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ

গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ