পাটলাই নদীতে নাব্যতা সংকট : নৌজটে দুর্ভোগ, লোকসান
- আপলোড সময় : ১২-০২-২০২৫ ০৮:১৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-০২-২০২৫ ০৮:১৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

শহীদনূর আহমেদ ::
তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদীতে নাব্যতা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিনিয়ত নৌযানজটে পড়ে আটকা পড়ছে পাথর-কয়লবোঝাই নৌকা। নির্ধারিত সময়ে পণ্য পাঠাতে না পেরে কোটি টাকার লোকসানের মুখে ব্যবসায়ীরা। প্রায় দেড় যুগ ধরে শুষ্ক মৌসুমে পাটলাই নদীতে নৌজট দেখা দিলেও এ সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। নৌযানজট নিরসনের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে পাটলাই নদীতে গভীর খনন চান নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।
জানাযায়, তাহিরপুর উপজেলার বড়চড়া, বাগলী, চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত চুনাপাথর, কয়লা উপজেলার পাটলাই নদী দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ সারাদেশে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। সড়কপথের তুলনায় নদী পথে এসব পণ্য পরিবহন সহজ হওয়ায় নৌপথ ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীরা। বর্ষায় স্বাভাবিক থাকলেও শীতকালে একদিকে যেমন নদীর পানি কমে যায়; অন্যদিকে ভারতের পাহাড় থেকে আসা পলিতে ভরাট হয় নদীর তলদেশ। এতে নাব্যতা সংকটের কারণে নৌজট সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েন কয়লা ও চুনাপাথরবোঝাই নৌকা ও বাল্কহেড। নৌজটের কারণে দিনের পর দিন আটকে থেকে লোকসানের মুখে পড়েন নৌশ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা।
বড়চড়া শুল্ক স্টেশন এলাকার নৌশ্রমিক নেতা উকিল আলী বলেন, নদীর তলদেশ একেবারে ভরাট হয়ে গেছে। ঘাটে ঘাটে নৌকা আটকা পড়ছে। এক স্থানে আটক পড়লে সপ্তাহ দশ দিন সময় লাগে বের হতে। নৌকায় দিনের পর দিন থাকতে হয়। ফলে কারোরই পোষায় না।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাটলাই নদীর সুলেমানপুর অংশে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নৌজটের সমস্যার তীব্রতা বেশি। গেল দুই সপ্তাহ ধরে নদীর এই অংশে আটকা পড়েছে বিপুল সংখ্যক পণ্যবোঝাই নৌকা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য নিয়ে যেতে না পারায় আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েন তারা। নদীর নাব্যতা সংকট ফিরিয়ে আনতে স্থায়ীভাবে নদী খননের দাবি তুলেছেন।
পাথর ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বলেন, পণ্য পরিবহনে সড়ক পথের চেয়ে নৌপথ উপযোগী হওয়ায় উপজেলার তিনটি শুল্ক স্টেশন বড়চড়া, চারাগাঁও, বাগলীর দিয়ে আমদানিকৃত কয়লা, চুনাপাথর পাটলাই নদী দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। গত এক দশক সময় ধরে এই নদীতে নৌজট সমস্যায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর এই শুল্ক স্টেশন হতে সরকারকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব দিলেও নৌজট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। গভীরভাবে নদী খননের দাবি জানানো হলেও উপেক্ষিত থাকছে দাবিটি।
তাহিরপুর কয়লা আমদানি গ্রুপের সভাপতি মো. খসরুল মিয়া বলেন, নৌজট নিরসনের স্থায়ী সমাধান হচ্ছে নদী খনন। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় নদী খনন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আমরা একাধিকবার দাবি জানিয়েছি। আশা করবো ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে নদী খননে সরকার উদ্যোগী হবেন।
পাটলাই নদীর নাব্যতা সংকট দূর করতে স্থায়ীভাবে খননের একটি প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া রয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার। তিনি বলেন, জেলার ১৯ নদী খননের প্রকল্পের আওতায় পাটলাই নদীও রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই প্রকল্প অনুমোদন হলে বৃহৎ পরিসরে নদী খননের কাজ শুরু হবে। বর্তমানে নদীর যে অংশে নৌকা আটকা পড়ছে সে অংশে বিডাব্লিউটিএ ভেকুর সাহায্যে মাটি কেটে দিচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ