ধর্মপাশায় মৎস্য কর্মকর্তাকে প্রাণনাশের হুমকি
- আপলোড সময় : ০৮-০২-২০২৫ ১০:৩৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৮-০২-২০২৫ ১০:৩৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে অশালীন আচরণ, কার্যালয় ঘেরাও ও তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বৃহ¯পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে উপজেলার জালধরা জলমহালটি ইজারা পাওয়া নিয়ে অনৈতিক সুপারিশ রক্ষা করতে রাজি না হওয়ায় উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের খয়েরদিরচর গ্রামের মো. জাকির হোসেন (৪২) নামের এক ব্যবসায়ী এই হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান (৪৩) ধর্মপাশা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
ধর্মপাশা থানায় করা সাধারণ ডায়েরি ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের খয়েরদিরচর গ্রামের বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন প্লাস্টিকের মালামাল ব্যবসায়ী। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ উপজেলার ২০একর পর্যন্ত ছয়টি জলমহাল ইজারার দাখিল করা আবেদনের বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলার জালধরা জলমহালটি ১৪৩২বঙ্গাব্দ থেকে১৪৩৪ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ৩ বছরের জন্য ইজারা পাওয়ার জন্য উপজেলার পাঁচটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাঁর নিজ কার্যালয়ের কক্ষে বসে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মো. শাহীন আলম (৩৩), ভারপ্রাপ্ত উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা রুহুল আমিন (৩৫)-কে নিয়ে ছয়টি জলমহাল ইজারা পাওয়ার জন্য দাখিল করা আবেদনগুলোর কাগজপত্রাদি যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছিলেন। ওইদিন রাত ১০টা বেজে ৪০মিনিটের সময় উপজেলার খয়েরদিরচর গ্রামের জাকির হোসেন ওই কার্যালয়ে ঢুকেন। এ সময় তিনি বড় কামদিঘি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের অনুকূলে জালধরা জলমহালটি ইজারা প্রদানের জন্য জোর সুপারিশ করেন এবং যেভাবেই হোক এই জলমহালটির তার লোকজন ইজারা পেতে নানা অনৈতিক প্রস্তাব দেন। কিন্তু এতে পাত্তা না দিয়ে নীতিমালা অনুযায়ী এই জলমহালটি ইজারা দেওয়া হবে এবং তিনি যে সমিতির পক্ষে সুপারিশ করতে এসেছেন সেই সমিতির আবেদনের কাগজপত্রে নানা গড়মিল রয়েছে বলে তাঁকে জানানো হয়। এ কথা শোনার পর জাকির হোসেন উত্তেজিত হয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের টেবিলে থাপ্পর মেরে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে ধমক দিয়ে বলেন যে, এই জলমহালটি বড় কামদিঘি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের অনুকুলে ইজারা দেওয়া না হলে সে তার লোকজন নিয়ে উপজেলা মৎস্য কার্যালয় ঘেরাও, কীভাবে মৎস্য কর্মকর্তা এই উপজেলায় চাকরি করে তা দেখে নেওয়া এবং কার্যালয়ের বাইরে গেলে প্রাণনাশ করবে বলে হুমকি দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলে জাকির হোসেন সেখান থেকে চলে যান।
উপজেলার খয়েরদির গ্রামের বাসিন্দা অভিযুক্ত জাকির হোসেন বলেন, আমি বড় কামদিঘি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে জাল ধরা জলমহাল ইজারা পেতে কোনোরকম সুপারিশ বা অনৈতিক প্রস্তাব দিইনি। আমি ব্যক্তিগত কাজে ওই কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলাম। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়াসহ আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
উপজেলার বড় কামদিঘি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. মুসাহিদ (৪০) বলেন, জাকির হোসেন আমাদের সমিতির কেউ নয়। তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা যাতে বৈধভাবে জালধরা জলমহালটি ইজারা পাই এ নিয়ে তিনি নানা অফিসে যোগাযোগ করছেন। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, উপজেলার জালধরা জলমহালটির ইজারা পাওয়ার বিষয়ে অনৈতিক সুপারিশ মানতে অপারগতা প্রকাশ করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি ধর্মপাশা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। জাকির হোসেনের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনোরকম স¤পর্ক নেই।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি অতীব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ