সুনামগঞ্জ , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা প্রশাসনের জব্দকৃত বালুভর্তি বাল্কহেড উধাও! তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় হাওরে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি নারীনেত্রী দিপালী চক্রবর্তী’র ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ভারী বর্ষণ ও ঢলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বড় বন্যার আশঙ্কা নেই সাবেক প্রেমিকাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতের পর আত্মহত্যার চেষ্টা ছাত্রলীগ নেতার রঙ্গারচরে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণ জেলা প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগ : সবুজের সন্ধানে নতুন যাত্রা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন : তারেক রহমান গণতন্ত্র পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া তাহিরপুরের ৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই জনবল সংকট, চরম ভোগান্তিতে মানুষ সুনামগঞ্জসহ ৬ জেলায় বন্যার শঙ্কা দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ এবার সুনামগঞ্জ সীমান্তে ১৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ : সতর্ক অবস্থানে বিজিবি ঠিকাদারের দখলে বিদ্যালয়ের মাঠ, প্রায় তিন বছর ধরে খেলাধুলা বন্ধ সুনামগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়ন ও সংস্কারে নানা উদ্যোগ গৃহীত সহকারী শিক্ষকের নানা ‘অপকর্মের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ দোয়ারাবাজার সীমান্তে ৩ অনুপ্রবেশকারী আটক ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উদ্যোগে দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন

​আমার ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল

  • আপলোড সময় : ২২-০৮-২০২৪ ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৮-২০২৪ ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
​আমার ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল
“লাশ দেইখ্যা তো আমি বেহুশ। অত গুলি কি-লা করল। ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল। আমার ছেলের বুকখান চোখও লাগি রইছে। আমরা অখন কিলা চলমু, আমারে ওষুধের টেখা দিব কেটায়।”

কথাগুলো বলেই ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন ষাটোর্ধ্ব আবুল কালাম (৬৪)। ছেলের কথা মনে হলেই নীরবে কাঁদেন তিনি। হতদরিদ্র আবুল কালাম ছেলেকে হারিয়ে এখন দিশেহারা। তাঁর আফসোস, ছেলেটা দেনার চাপে ছোটভাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছিল। বলেছিল, সেই ঋণ শোধ করে আবার গ্রামের আসবে। কিন্তু সেই আসা আর হলো না, তাকে আসতে হলো লাশ হয়ে।

গত ৫ আগস্ট আবুল কালামের ছেলে সোহাগ মিয়া (২৪) ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরদিন গ্রামের বাড়িতে এনে তাঁর লাশ দাফন হয়। আবুল কালামের বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামে। এক সময় এলাকায় রিকসা চালাতেন। এখন বয়স হওয়া ও রোগেশোকে আর কাজ করতে পারেন না। বাড়িতেই থাকেন।

আবুল কালামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, তাঁর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বড়, বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে সোহাগ মিয়া দ্বিতীয়। চার বছর আগে সোহাগ সৌদিআরবে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। এরপর জমি, ঘরের গরু আর মহাজনি সুদে ঋণ করে প্রায় চার লাখ টাকা জোগার করে দেন দালালকে। কিন্তু সব টাকা খোয়া যায়। এরপর সুদের টাকার চাপে ছোটভাই শুভ মিয়াকে (২০) নিয়ে গ্রাম ছাড়েন সোহাগ। ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেন দুই ভাই। থাকতেন বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায়। যা আয় করতেন মাসে মাসে সেখান থেকে কিছু টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করছিলেন বাবা। হৃদরোগে আক্রান্ত আবুল কালামের চিকিৎসার খরচও দিতেন সোহাগ।
৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে কারখানায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন দুই ভাই। ঘটনাস্থলেই সোহাগ মিয়া মারা যান। শুভ মিয়া এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ৬ আগস্ট সোহাগের লাশ এলাকায় নিয়ে দাফন করা হয়। শুভ মিয়ার চিকিৎসা নিয়েও চিন্তায় পরিবার।

আবুল কালাম বলেন, একটা ভাঙা ঘরে থাকি। বেড়া নাই, টিন নাই। মেঘ আইলে (বৃষ্টি হলে) পানি পড়ে। একবেলা খাইলে, দুই বেলা উপাস যায়। ছেলেটা মাসে মাসে কিছু টেখা দিত। এই টেকা দিয়া চলতাম। অখন ত হে নাই, আমরারে কে দেখব।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সোহাগের পরিবার খুবই দরিদ্র। যে গাড়িটা লাশ নিয়ে এসেছিল সেটার ভাড়ার টাকাও গ্রামের লোকজন দিয়েছেন।
গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী মো. শাহিনুর রহমান বলেন, সোহাগ মিয়া মারা যাওয়ায় এই দরিদ্র পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়ল। এখন আহত শুভ মিয়ার চিকিৎসা ও পরিবারটি কিভাবে চলবে এটি চিন্তার বিষয়। তাদের পাশে সরকারের দাঁড়ানো উচিত।



নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা

রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা