সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ , ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তরুণকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের সেতু নির্মাণের এক যুগেও হয়নি সংযোগ সড়ক জামালগঞ্জে কাবিটা মনিটরিং কমিটির বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পৌর ডিগ্রি কলেজ আজ স্বমহিমায় উদ্ভাসিত বালুভর্তি ১২টি নৌকা ও ড্রেজার মেশিন আটক তিনি ছিলেন সহজ-সরল মানুষ ১০৩তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি আব্দুস সামাদ আজাদ : মাটি থেকে মহিরুহ দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে আন্দোলন : অলি আহমদ সার্বিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার এলে : ভারতের সেনাপ্রধান অর্থ ছাড়ে গড়িমসি: এক মাসেও শুরু হয়নি অনেক বাঁধের কাজ সুনামকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর বালু সরিয়ে মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে ফসলরক্ষা বাঁধ ৭২’র সংবিধান বাতিল করা যাবে না, ৩৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিবাদ জামালগঞ্জে তরুণকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা সকলের সহযোগিতায় আমরা দেশের উন্নয়ন করবো : জেলা প্রশাসক ইতিহাসের সেরা নির্বাচনের পরিকল্পনা করছি : প্রধান উপদেষ্টা কী পরিবর্তন, কিসের নতুন বাংলাদেশ হলো? সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস ভোটের দাবিতে শিগগির মাঠে নামছে বিএনপি বদলে যাওয়া পার্কে দর্শনার্থীর ভিড়, পার্কটিকে জেলার একমাত্র বৃহৎ পার্কে রূপান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সবজির দরে ধস: ভোক্তারা স্বস্তিতে, চাষীরা হতাশায়

​আমার ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল

  • আপলোড সময় : ২২-০৮-২০২৪ ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৮-২০২৪ ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
​আমার ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল
“লাশ দেইখ্যা তো আমি বেহুশ। অত গুলি কি-লা করল। ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল। আমার ছেলের বুকখান চোখও লাগি রইছে। আমরা অখন কিলা চলমু, আমারে ওষুধের টেখা দিব কেটায়।”

কথাগুলো বলেই ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন ষাটোর্ধ্ব আবুল কালাম (৬৪)। ছেলের কথা মনে হলেই নীরবে কাঁদেন তিনি। হতদরিদ্র আবুল কালাম ছেলেকে হারিয়ে এখন দিশেহারা। তাঁর আফসোস, ছেলেটা দেনার চাপে ছোটভাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছিল। বলেছিল, সেই ঋণ শোধ করে আবার গ্রামের আসবে। কিন্তু সেই আসা আর হলো না, তাকে আসতে হলো লাশ হয়ে।

গত ৫ আগস্ট আবুল কালামের ছেলে সোহাগ মিয়া (২৪) ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরদিন গ্রামের বাড়িতে এনে তাঁর লাশ দাফন হয়। আবুল কালামের বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামে। এক সময় এলাকায় রিকসা চালাতেন। এখন বয়স হওয়া ও রোগেশোকে আর কাজ করতে পারেন না। বাড়িতেই থাকেন।

আবুল কালামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, তাঁর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বড়, বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে সোহাগ মিয়া দ্বিতীয়। চার বছর আগে সোহাগ সৌদিআরবে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। এরপর জমি, ঘরের গরু আর মহাজনি সুদে ঋণ করে প্রায় চার লাখ টাকা জোগার করে দেন দালালকে। কিন্তু সব টাকা খোয়া যায়। এরপর সুদের টাকার চাপে ছোটভাই শুভ মিয়াকে (২০) নিয়ে গ্রাম ছাড়েন সোহাগ। ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেন দুই ভাই। থাকতেন বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায়। যা আয় করতেন মাসে মাসে সেখান থেকে কিছু টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করছিলেন বাবা। হৃদরোগে আক্রান্ত আবুল কালামের চিকিৎসার খরচও দিতেন সোহাগ।
৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে কারখানায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন দুই ভাই। ঘটনাস্থলেই সোহাগ মিয়া মারা যান। শুভ মিয়া এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ৬ আগস্ট সোহাগের লাশ এলাকায় নিয়ে দাফন করা হয়। শুভ মিয়ার চিকিৎসা নিয়েও চিন্তায় পরিবার।

আবুল কালাম বলেন, একটা ভাঙা ঘরে থাকি। বেড়া নাই, টিন নাই। মেঘ আইলে (বৃষ্টি হলে) পানি পড়ে। একবেলা খাইলে, দুই বেলা উপাস যায়। ছেলেটা মাসে মাসে কিছু টেখা দিত। এই টেকা দিয়া চলতাম। অখন ত হে নাই, আমরারে কে দেখব।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সোহাগের পরিবার খুবই দরিদ্র। যে গাড়িটা লাশ নিয়ে এসেছিল সেটার ভাড়ার টাকাও গ্রামের লোকজন দিয়েছেন।
গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী মো. শাহিনুর রহমান বলেন, সোহাগ মিয়া মারা যাওয়ায় এই দরিদ্র পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়ল। এখন আহত শুভ মিয়ার চিকিৎসা ও পরিবারটি কিভাবে চলবে এটি চিন্তার বিষয়। তাদের পাশে সরকারের দাঁড়ানো উচিত।



নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স