সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫ , ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা বজ্রপাতের ঝুঁকিতে সুনামগঞ্জ শীর্ষে বন্ধ করা হলো সেই গ্যাস পাইপ লাইনের লিকেজ আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছে সুনামগঞ্জের ইমা হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে গ্রাহক হয়রানি, বছরের পর বছর ঘুরেও মিলছে না বীমার টাকা পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলায় ১৬ সেনা নিহত টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষায় কাজ করবে সরকার: মহাপরিচালক শহরে সক্রিয় মাদক কারবারিরা চোখের সামনে বিলীন হচ্ছে ভিটেমাটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন অ্যাড. নুরুল ইসলামকে ফতেপুর বিএনপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন আধিপত্য নিয়ে লড়াইয়ের অবসান চান গ্রামবাসী কাজ না করেই তিন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সুনামগঞ্জকে শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে আলোচনায় বিএনপি’র দুই হেভিওয়েট প্রার্থী কৃষকরা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছেন : অতিরিক্ত কৃষি সচিব নদী ভাঙন রোধের দাবিতে ভাদেরটেক গ্রামবাসীর মানববন্ধন গ্যাসের পাইপ লাইনে লিকেজ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা জামালগঞ্জে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ

​আমার ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল

  • আপলোড সময় : ২২-০৮-২০২৪ ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৮-২০২৪ ০১:৫৮:২৮ অপরাহ্ন
​আমার ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল
“লাশ দেইখ্যা তো আমি বেহুশ। অত গুলি কি-লা করল। ছেলেটার বুক গুলিতে ঝাঁজরা আছিল। আমার ছেলের বুকখান চোখও লাগি রইছে। আমরা অখন কিলা চলমু, আমারে ওষুধের টেখা দিব কেটায়।”

কথাগুলো বলেই ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন ষাটোর্ধ্ব আবুল কালাম (৬৪)। ছেলের কথা মনে হলেই নীরবে কাঁদেন তিনি। হতদরিদ্র আবুল কালাম ছেলেকে হারিয়ে এখন দিশেহারা। তাঁর আফসোস, ছেলেটা দেনার চাপে ছোটভাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছিল। বলেছিল, সেই ঋণ শোধ করে আবার গ্রামের আসবে। কিন্তু সেই আসা আর হলো না, তাকে আসতে হলো লাশ হয়ে।

গত ৫ আগস্ট আবুল কালামের ছেলে সোহাগ মিয়া (২৪) ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরদিন গ্রামের বাড়িতে এনে তাঁর লাশ দাফন হয়। আবুল কালামের বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামে। এক সময় এলাকায় রিকসা চালাতেন। এখন বয়স হওয়া ও রোগেশোকে আর কাজ করতে পারেন না। বাড়িতেই থাকেন।

আবুল কালামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে জানা যায়, তাঁর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বড়, বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে সোহাগ মিয়া দ্বিতীয়। চার বছর আগে সোহাগ সৌদিআরবে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। এরপর জমি, ঘরের গরু আর মহাজনি সুদে ঋণ করে প্রায় চার লাখ টাকা জোগার করে দেন দালালকে। কিন্তু সব টাকা খোয়া যায়। এরপর সুদের টাকার চাপে ছোটভাই শুভ মিয়াকে (২০) নিয়ে গ্রাম ছাড়েন সোহাগ। ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেন দুই ভাই। থাকতেন বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায়। যা আয় করতেন মাসে মাসে সেখান থেকে কিছু টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করছিলেন বাবা। হৃদরোগে আক্রান্ত আবুল কালামের চিকিৎসার খরচও দিতেন সোহাগ।
৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে কারখানায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন দুই ভাই। ঘটনাস্থলেই সোহাগ মিয়া মারা যান। শুভ মিয়া এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ৬ আগস্ট সোহাগের লাশ এলাকায় নিয়ে দাফন করা হয়। শুভ মিয়ার চিকিৎসা নিয়েও চিন্তায় পরিবার।

আবুল কালাম বলেন, একটা ভাঙা ঘরে থাকি। বেড়া নাই, টিন নাই। মেঘ আইলে (বৃষ্টি হলে) পানি পড়ে। একবেলা খাইলে, দুই বেলা উপাস যায়। ছেলেটা মাসে মাসে কিছু টেখা দিত। এই টেকা দিয়া চলতাম। অখন ত হে নাই, আমরারে কে দেখব।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সোহাগের পরিবার খুবই দরিদ্র। যে গাড়িটা লাশ নিয়ে এসেছিল সেটার ভাড়ার টাকাও গ্রামের লোকজন দিয়েছেন।
গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী মো. শাহিনুর রহমান বলেন, সোহাগ মিয়া মারা যাওয়ায় এই দরিদ্র পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়ল। এখন আহত শুভ মিয়ার চিকিৎসা ও পরিবারটি কিভাবে চলবে এটি চিন্তার বিষয়। তাদের পাশে সরকারের দাঁড়ানো উচিত।



নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স