সুনামগঞ্জ , রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫ , ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে লক্ষ্য পূরণ হয়নি, বিদেশ সফরেই প্রকল্প সারা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল : আউটসোর্সিংয়ে কর্মী নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ আজ পবিত্র আশুরা সিলেটে ৫ দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট বিগত সময়ে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাকে অবহেলা করা হয়েছে : ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম খাসিয়ামারা নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ, আতঙ্কে শত শত পরিবার পৌর শহরে রিকশা ভাড়ায় নৈরাজ্য : বিপাকে সাধারণ মানুষ আলোচনায় জামায়াত, জমিয়ত, এনসিপি, খেলাফত ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরাও ফেব্রুয়ারি ঘিরেই বিএনপি’র প্রস্তুতি ছয়মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৭৭৮ জন দিরাইয়ে দুই পদের বিপরীতে বিএনপির ১৬০ জনের আবেদন ‘মব’ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয় দেড় কোটি টাকার বরাদ্দে নয়ছয় জনগণের স্বার্থবিরোধী বিষয়ে কোনো ছাড় নয় : তারেক রহমান পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু জনউদ্যোগের জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন জেলা খেলাফত মজলিসের তরবিয়তী মজলিস অনুষ্ঠিত শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদন্ড সীমান্তে চার বাংলাদেশি নাগরিক ও দুই পাচারকারী আটক

দেখার হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধে ধস

  • আপলোড সময় : ০৩-০২-২০২৫ ১২:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০২-২০২৫ ১২:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন
দেখার হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধে ধস
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি :: শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা। স্থানীয়রা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ছাত্রলীগের এক নেতা এই বাঁধের পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করার কারণে প্রতিবছর এমনটি হচ্ছে। অন্যদিকে হাওরের পানি অপরিকল্পিতভাবে নামার ফলেও নতুন আরো ৩টি প্রকল্পের ৩টি স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলা দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তার বাঁধ ৫৫নং পিআইসি কমিটির অধীনে। পিআইসি নং-৫৫ এর অধীনে ১২২৫ মিটার বাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্প এলাকার উত্তর পাশ্বে ছাইয়া কিত্তা নামক জায়গায় গত তিন বছর আগে বর্ষা মৌসুমে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ছাত্রলীগের এক নেতা অসাধু ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে মহাসিং নদী ও বাঁধের পশ্চিমে বালি মাটি ও ভিট বালি উত্তোলন করে। এতে বাঁধের দুই পাশে মহাসিং নদীর অংশে ও হাওরের অংশে বড় বড় দুইটি ডোবার সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২৭ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ছাইয়া কিত্তা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে। গত ৭-৮ দিন ধরে বাঁধের দুই পাশে বড় বড় ফাটল দিয়ে বাঁধে ধস নামা শুরু হয়। এতে বাঁধের সব মাটি দুই পাশে গভীর ডোবায় ধসে পড়ছে। দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসলরক্ষা বাঁধের দুই পাশে ভাঙন শুরু হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে ফসলরক্ষা বাঁধ। একই সাথে দেখার হাওরের ৪৯, ৫৩ ও ৫৪ নং প্রকল্পেও নতুন করে বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এই বাঁধগুলোর প্রতিটিতে একটি করে বাঁধের পাশে মহাসিং নদীর তীর ঘেঁষা ডোবা রয়েছে। এই কারণে বাঁধগুলোতে এমনটি হচ্ছে। হাওরের পানি অপরিকল্পিতভাবে প্রতি বছর নেমে যাওয়ার কারণে নদীর তীরে এমন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এখন নদীর পানি কমে যাওয়ায় বাঁধগুলোতে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। আগে থেকেই বাঁধগুলো রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ না নিতে পারলে পুরো হাওরের বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তার বাঁধ ৫৫নং পিআইসি কমিটির সাধারণ স¤পাদক আখতার হোসাইন নোমান জানান, আমাদের কাজের বাইরে এই বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের এই অংশে আমাদের তেমন কোন কাজ ধরা ছিলো না। কিন্তু বাঁধটি ফাটল দিয়ে ধসে পড়ার কারণে এখানে নতুন করে আমাদের কাজ করতে হবে। এই জায়গাটি প্রতি বছরই ধসের সৃষ্টি হয়। এখানে বিগত তিন বছর আগে বর্ষা মৌসুমে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ছাত্রলীগের এক নেতা অসাধু ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে মহাসিং নদী ও বাঁধের পশ্চিমে বালি মাটি ও ভিট বালি উত্তোলন করেছিল। সে সময় এই বাঁধটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর থেকে প্রতি বছরই এই বাঁধে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এই হাওরের ৪৯নং পিআইসি কমিটির সভাপতি সফিকুর রহমান জানান, হাওরের পানি অপরিকল্পিতভাবে নেমে যাওয়ার কারণে আমার প্রকল্পের পাশে নদীর তীরে বড় একটি গর্ত হয়েছে। এখন নদীর পানি কমে যাওয়াই আমার বাঁধের বড় একটি অংশ ফাটল দেখা দিয়ে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই ফাটল বন্ধ করতে আমাদেরকে অতিরিক্ত বরাদ্দসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসারদের সাথে কথা বলেছি, তারা আমাদের প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করে গেছেন। এই হাওরের ৫৩ নং প্রকল্পের সাধারণ স¤পাদক আঙ্গুর মিয়া ও ৫৪ নং প্রকল্পের সাধারণ স¤পাদক জাবেদ হোসেন জানান, আমাদের হাওরে পানি নামার জন্য স্থায়ীভাবে পরিকল্পিত ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে। অপরিকল্পিতভাবে পানি নেমে যাওয়ার ফলে আমাদের বাঁধের পাশে নদীর তীরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই গর্তগুলোতে গাছের ভল্লি ও জিও ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত এসব স্থানে বাঁশ, বস্তা বা জিআই ব্যাগের বরাদ্দ দেননি। বাঁধগুলো রক্ষায় দ্রুত সময়ে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন। শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মমিন মিয়া জানান, দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা বাঁধটি আসলে হুমকির মুখে এবং ইতিমধ্যে বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। এই বাঁধগুলোতে যে ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে, ইতোমধ্যেই আমরা আবার সার্ভে করেছি। এগুলোতে আমরা গাছের ভল্লি ও জিও ব্যাগসহ যা যা প্রয়োজন সকল প্রকারের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোন অবহেলার সুযোগ নাই। প্রথম সার্ভে করার সময় এই জায়গাগুলো অক্ষত ছিল, নদীর পানি কমে আসায় নদীর তীরে ধস দেখা দিয়েছে। পুনরায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সার্ভে করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশাকরি ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই আমরা সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করতে পারবো।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে লক্ষ্য পূরণ হয়নি, বিদেশ সফরেই প্রকল্প সারা

জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে লক্ষ্য পূরণ হয়নি, বিদেশ সফরেই প্রকল্প সারা