সুনামগঞ্জ , শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ , ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি এনসিপি ও চার বাম দল এইচএসসিতে ফল বিপর্যয়, অভিভাবকরা হতাশ যাদুকাটা নদীর তীরে গ্রামবাসীর মানববন্ধন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পাড়কাটা বন্ধের দাবি শাল্লায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে রাস্তা নির্মাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দেওয়া সম্ভব না : নির্বাচন কমিশনার সই হল ‘জুলাই সনদ’ বালু লুটের অভিযোগে মামলা,আসামির তালিকায় প্রতিবাদকারীদের নাম জেলা প্রশাসককে পেয়ে গ্রামবাসী উচ্ছ্বসিত সুনামগঞ্জে দৈনিক কালবেলা’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মহিলা দলের সমাবেশ সিলেট বোর্ডে ইংরেজিতেই ফল বিপর্যয় ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : মিজান চৌধুরী খাসিয়ামারা নদীতে বালুখেকো সিন্ডিকেট বেপরোয়া যাদুকাটার বালু লুটের সময় ‘টুঁ শব্দ’ না করলেও কাজ শেষে প্রতিবাদ যাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন: ৩৭ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা ঋণ পরিশোধের পরও বৃদ্ধার বসতঘরে সুদখোরের তালা সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের দাবি শহীদ মিনার ভাঙায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি ‘মব’ সৃষ্টি করে যাদুকাটার বালু লুট জড়িত একাধিক সিন্ডিকেট যাদুকাটায় ‘মব সৃষ্টি করে’ বালু লুট, বন্ধ না হলে নদী ভাঙন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে

ছাতকে সুরমা নদীর ভাঙন, বিলীন হচ্ছে বাড়ি, জমি

  • আপলোড সময় : ০১-০২-২০২৫ ১০:৫০:২১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০২-২০২৫ ১০:৫০:২১ পূর্বাহ্ন
ছাতকে সুরমা নদীর ভাঙন, বিলীন হচ্ছে বাড়ি, জমি
মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী :: ছাতকে বছরের পর বছর ধরে ভাঙনের তা-ব চালাচ্ছে সুরমা নদী। সবচেয়ে ভয়াবহ তা-বলীলা চলছে ছাতক সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর, আন্ধারীগাও, কেশবপুর ও বাউসা এলাকায়। বহুকাল ধরে চলে আসা নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে এই এলাকার ঘরবাড়ি, স্কুল, মসজিদ, বাজার, সড়ক ও কয়েক শত একর ফসলি জমি। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এখানকার বহু পরিবারকে ৩/৪ বার করে ঘরবাড়ি ভিন্ন স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। এদিকে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কেশবপুর গ্রামের মানুষ। সরকারি ভূমি মানচিত্রে কেশব মৌজার নাম লিখা থাকলেও, টানা কয়েক যুগ ধরে বহমান নদী ভাঙনে বাস্তবে অস্তিত্ব নেই কেশবপুর মৌজার। পুরো মৌজার জমি ও মানুষের ঘরবাড়ি গিলে খেয়েছে সুরমা। একইভাবে সুরমা নদীর ভাঙনে আন্ধারীগাও, কড়িরগাও, বাউসা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার হয়েছে গৃহহারা। সুরমা নদীর ভাঙ্গনের ফলে ছাতক-সুনামগঞ্জ ভায়া দোহালিয়াবাজার সড়কটির একাধিকবার দিক পরিবর্তন করতে হয়েছে। এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি অতিগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির। মল্লিকপুর, আন্ধারীগাও, কড়িরগাও, কেশবপুর ও বাউসা এলাকায় অব্যাহত নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে ছাতক-সুনামগঞ্জ ভায়া দোহালিয়াবাজার সড়ক। এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন ৪ থেকে ৫টি উপজেলার মানুষ। আদিকাল থেকে ছাতক পাথর, বালু ও চুনাপাথর ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ। যেখানে কর্মসংস্থান চালিয়ে নেন কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষ। আর এই ব্যবসার ডা¤িপং সাইটের জন্য খুবই উপযোগী হলো ছাতক সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর থেকে বাউসা এলাকা। কিন্তু সুরমা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে। কেউ কেউ ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এজন্য অনেকে আবার ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে দিশেহারা। সবকিছু মিলিয়ে শত শত মানুষকে বেকারত্বের খাতায় নাম লিখিয়ে নিতে হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া না হলে আবারো এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কার রয়েছে। কেশবপুর গ্রামের অনেক পরিবারের বসতঘর ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত বাউসা বড় মসজিদের দেয়াল ও ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানান, মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এক বছর আগেই এখানে নামাজ পড়া বন্ধ করে গ্রামের অন্যত্র আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন গ্রামবাসী। নদীর তীব্র ভাঙ্গনে নদী তীরে স্থাপিত শতাধিক পাথর ভাঙ্গার মেশিন ঝুঁকিতে থাকায় অনেক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নদী ভাঙ্গন স্থানে একাধিকবার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন। তারপরও থামানো যাচ্ছে না নদী ভাঙ্গন। বর্ষাকালে নদী ভর্তি পানি থাকায় ভাঙ্গন কম হয়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করে। বর্তমানে বাউসা গ্রামের অংশে ছাতক-সুনামগঞ্জ ভায়া দোহালিয়াবাজার সড়ক, বাউশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাতক সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার নূরুল হক জানান, প্রায় অর্ধশত বছর ধরে দেখে আসছি সুরমা নদীর তীব্র ভাঙ্গন। প্রতি বছর চোখের সামনেই ভেঙ্গেছে মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, স্কুল, মসজিদ ও সড়ক। তিনি নিজেও সুরমা নদীর ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন বলে জানান। স্থানীয় পাথর, বালু ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান শাওন জানান, ক’বছর আগে তিনি একটি কারখানা স্থাপনের জন্য জমি কিনেছিলেন। এরপর থেকে ভাঙ্গনে তাঁর প্রায় ২বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জনস্বার্থে সরকারিভাবে নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান আতিকুর রহমান শাওন। ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি শামছু মিয়া জানান, সুরমা নদীর ভাঙ্গন কবলে পড়ে ব্যবসায়ীরাসহ স্থানীয় লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীগণ ব্যবসার জন্য নেয়া ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ছাতকে সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার আলী হোসেন জানান, নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভাঙ্গন রোধে পাউবো কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বাউসা এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে উদ্যোগ নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সই হল ‘জুলাই সনদ’

সই হল ‘জুলাই সনদ’