বুঙ্গার কারবার ঠেকানো একটি কর্তৃপক্ষীয় কর্তব্য
- আপলোড সময় : ২২-০১-২০২৫ ০৮:৩১:১৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২২-০১-২০২৫ ০৮:৩১:১৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদে প্রকাশ (২১ জানুয়ারি ২০২৫), সীমান্তে কর্তব্যরত সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি-এর সদস্যরা কোটি টাকার মাল আটক করেছেন। এমন বুঙ্গার মাল মাঝে মাঝেই নয় বরং বলা ভালো প্রতিনিয়ত আটক করা হয়। সীমান্তে এমন ঘটনা নিত্যদিনের এবং সেখানকার মানুষের জীবনের অপরিহার্য বাস্তবতা।
প্রকৃতপ্রস্তাবে সীমান্তকে চোরাচালানের আর্থনীতিক কর্মকা- থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার কোনও অবকাশ নেই। বুঙ্গা কিংবা চোরাচালান সংশ্লিষ্ট দুই দেশের সীমান্তে সংঘটিত অবৈধ ব্যবসায় ভিন্ন অন্য কীছু নয়। এমন ভাবনা যে কেউ করতেই পারেন যে, এই ব্যবসাকে সংশ্লিষ্ট দুই দেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনি পদ্ধতিতে বৈধ করে নিলেই হয়, কোনও ঝামেলা থাকে না। সাদামাটাভাবে দেখলে সাধারণত দুই দেশের মধ্যে এমনটাই হয়ে থাকে, পারস্পরিক সুবিধাজনক বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে কোনও একটা কারবারি চুক্তির মাধ্যমে। কিন্তু সীমান্ত সংলগ্ন অথবা অসংলগ্ন দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন রাজনীতিক, অর্থনীতিক কারণে এমন বাণিজ্যচুক্তি সচরাচর সম্পন্ন হয়ে উঠে না এবং মাঝপথে দুই দেশের সাধারণ মানুষের চাহিদার যোগান দিতে বুঙ্গার কারবারের উদ্ভব ঘটে, কীছুতেই প্রতিহত করা যায় না।
বলা হচ্ছে- সুনামগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় ৪০টি ‘বুঙ্গার ঘাট’ (যে স্থান দিয়ে দুই দেশের অবৈধ মালামাল আনা-নেওয়া করা হয়) সচল আছে। এটা কী করে সম্ভব? আসলে সম্ভব এজন্য যে, সীমান্তরক্ষীরা বুঙ্গার কারবার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার জন্যে ঊর্ধ্বতনের পক্ষ থেকে আদিষ্ট নন।
সংবাদে বলা হয়েছে, “বিশ^ম্ভরপুর সীমান্তের শিলডোয়ার ও গামাইতলা গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় রতনের ঘাটের সীমানা। এই ঘাটের সোজাসুজি এলাকায় সীমান্তের কাঁটা তারের বেড়া প্রায় সবসময়ই কাটা (ছেঁড়া) থাকে, এদিক দিয়ে যাতায়াত করা যায় অবাধে। বিজিবি-বিএসএফ’র পতাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঝে মধ্যে বন্ধ করা হলেও এক-দুইদিন পরই আবার কেটে পথ করেন চোরাকারবারিরা।”
এমতাবস্থায় শেষ পর্যন্ত প্রতিপন্ন হয় যে, কর্তৃপক্ষীয় প্রতিরোধের ভেতরে অপ্রতিরোধ্যতার প্রক্রিয়া সচল থাকে। মুক্তবাজার অর্থনীতির পতাকা তলে এমন বুঙ্গার কারবার নিতান্ত স্বাভাবিক, বিশ^জুড়া পুঁজির প্রভুত্বকে উৎখাত না করে বুঙ্গার কারবার প্রতিহত করা যাবে না।
সুনামগঞ্জের ৯৫ কিলোামিটার সীমান্তজুড়ে বুঙ্গার কারবার হচ্ছে এবং হবে, এটা ঠেকানোর জন্য কর্তৃপক্ষীয় কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা কর্তৃপক্ষকেই নির্ধারণ করতে হবে। এখানে গায়ে পড়ে পরামর্শ দেওয়ার কোনও অবকাশ নেই।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ