সুনামগঞ্জ সীমান্তে এক বছরে ১০ মৃত্যু আটক দেশি-বিদেশি ৪৪ নাগরিক
- আপলোড সময় : ২১-০১-২০২৫ ০৮:১৮:০৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২১-০১-২০২৫ ০৮:১৮:০৫ পূর্বাহ্ন
শহীদনূর আহমেদ ::
গত এক বছরে সুনামগঞ্জ সীমান্তে ১০ বাংলাদেশীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বা ভারতীয় খাসিয়াদের আক্রমণের শিকার, অবৈধভাবে কয়লা আনতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পথে মাটি চাপা কিংবা পাথর চাপাসহ সিন্ডিকেট চক্রের ফাঁদে ভারতে অনুপ্রবেশকালে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুসহ বিভিন্ন কারণে এই মৃত্যু সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ২৮ বিজিবি।
সর্বশেষ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর গামারীতলা সীমান্তে সাইদুল ইসলাম (২২) নামের এক বাংলাদেশী যুবক বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত হয়। এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে বিজিবি। গুলি করে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ের চলমান নানা বিষয় নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রতি কড়া প্রতিবাদ জানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ান-২৮ বিজিবি সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশকালে বিএসএফের গুলি, খাসিয়াদের মারধর, কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গর্তে মাটি চাপা, চোরাই পণ্য সংগ্রহে অসুস্থ হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুরসহ জেলার বিভিন্ন সীমান্তে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ জন বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যু হয়। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। বিএসএফের গুলিবিদ্ধ হয়ে ১ জন নিহত ও ২ জন আহত এবং ভারতীয় খাসিয়া কর্তৃক মারধরে ১ জন নিহত ও অসুস্থ হয়ে ১ জন নিহত হন। তাছাড়া ভারত সীমান্তে অবৈধভাবে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গর্তে মাটিচাপায় ৭ জন নিহত এবং ১ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া অনুপ্রবেশের সময় দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ ৪৪ জনকে আটক করেছে বিজিবি। এসময় বিদেশি অস্ত্র ২টি এবং ১২টি বিস্ফোরক দ্রব্য জব্দ করা হয়।
বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্তে নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে হত্যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তবে সুনামগঞ্জ সীমান্তে হতাহতের ঘটনার পেছনে রয়েছে অনুপ্রবেশ ও ভারতের নাগরিকদের সঙ্গে অবৈধ লেনদেন এবং কয়লা সংগ্রহে ঝুঁকিপূর্ণ গর্তে প্রবেশ অন্যতম। এ জন্য সীমান্ত এলাকার অধিবাসীদের অবৈধভাবে দেশের সীমানা অতিক্রম না করার বিষয়ে সচেতন করার কথা জানিয়েছে বিজিবি।
নিহতের শিকার বাংলাদেশিদের পরিবারের দাবি আক্রান্ত ব্যক্তিরা কাঠ সংগ্রহ, গরু চড়ানো বা কৃষিকাজ করার সময় সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় নাগরিক বা বিএসএফের আক্রমণের শিকার হন। তবে একাধিক সূত্র বলছে, দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার শক্তিশালী চোরাই সিন্ডিকেটের হয়ে ভারত থেকে চোরাইপণ্য পরিবহন করতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন নি¤œআয়ের এসব মানুষ। চোরাকারবারে জড়িত ভারতের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে স্বার্থ নিয়ে বিরোধের জেরেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া ঝুঁকি নিয়ে কয়লাখনিতে প্রবেশকালে মাটি চাপায় ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। নিহতদের অনেকেই কিশোর বা দিনমজুর।
সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ান ২৮ বিজিবি’র অধিনায়ক এ কে এম জাকারিয়া কাদির বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বম্ভরপুর সীমান্তে হত্যাকা-ের জন্য পতাকা বৈঠক করে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান রোধে স্থানীয়দের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সভা ও কাউন্সিলিং করা হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ