সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫ , ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিশিষ্ট সমাজসেবক নূরুল হক মহাজন স্মরণে সভা ধর্মপাশায় প্রথম কিস্তির টাকা না পাওয়ায় বিপাকে পিআইসিরা উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ সুনামগঞ্জ সীমান্তে এক বছরে ১০ মৃত্যু আটক দেশি-বিদেশি ৪৪ নাগরিক বিজিবি’র অভিযানে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো ব্যবহারে সতর্কতা জারি দ্রুত গতিতে চলছে উড়াল সড়ক প্রকল্পের ৯ প্যাকেজের কাজ রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য ছাড়া সংস্কার প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না : ফখরুল আ.লীগকে নিষিদ্ধের পরিকল্পনা সরকারের নেই: প্রেস সচিব এক বছরে ৩১০ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, ৪৬ শতাংশই স্কুল-পড়ুয়া জেলা পর্যায়ে আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন যা সংস্কার করা দরকার, তা রাজনৈতিক সরকারই করবে : আসাদুজ্জামান রিপন হাওরে কমছে দেশি ধান চাষ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সে সিদ্ধান্ত জনগণের : মির্জা ফখরুল আগাছা রয়ে গেছে, আবারও যুদ্ধের প্রস্তুত নিন : জামায়াত আমির সরস্বতীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের জমি প্রভাবশালীর দখলে জেলা পর্যায়ে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন দোয়ারাবাজার সীমান্তে ভারতীয় দুই নাগরিক আটক নির্বাচন করতে এত সংস্কার দরকার নেই : জয়নুল আবদিন ফারুক ঘোষণাপত্র নিয়ে ‘তড়িঘড়ি’ করার বিপক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো

পথে যেতে যেতে পথচারী

  • আপলোড সময় : ১৩-০১-২০২৫ ১১:১৬:০৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৩-০১-২০২৫ ১১:১৬:০৫ অপরাহ্ন
পথে যেতে যেতে পথচারী
প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় কতো খবর আসে। আমরা তা পড়ে উজ্জীবিত হই, দুঃখ-বেদনায় কখনোবা ভুলে যাই। সেদিন সংবাদপত্রের পাতায় এমনই একটি খবর আসে যা পাঠ করে আনমনা হয়ে যাই। ভাবনা এলো, সমাজটা কী হয়ে গেল? ভারতের কাশিতে ৮০ বছরের বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর। দুর্ভাগা ব্যক্তির নাম শ্রীনাথ খন্ডেলওয়াল। তিনি বাস করতেন সেখানকার একটি বৃদ্ধাশ্রমে। বৃদ্ধাশ্রম মানে দেখভাল করার লোকের অভাবের দরুণ বয়স্ক ব্যক্তিদের বসবাসের স্থান - এক সময় এমনই ভাবতাম। সংসারে যাদের সহায়-সম্বল নেই এমন ব্যক্তিরা বৃদ্ধাশ্রমে শেষ বয়সে ঠাঁই পায়। কিন্তু, সম-সাময়িককালে দেখাযায়, সহায়-সম্বল আছে এমন ধনিক শ্রেণির মানুষরাই বৃদ্ধাশ্রমে বসবাস করছে। মি. শ্রীনাথ খন্ডেলওয়াল এমনই একজন ব্যক্তি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। সংবাদপত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি ৮০ কোটি রুপির মালিক ছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তার সন্তানেরা এই সম্পত্তি কৌশলে নিজেদের নামে লিখিয়ে নিয়েছিলেন। শ্রীনাথ খন্ডেলওয়ালের দুই ছেলে উভয়ই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, আর একমাত্র মেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ভদ্রলোক ছিলেন একজন লেখক। প্রায় ১০০টিরও অধিক গ্রন্থ তিনি লিখেছিলেন। ভারত সরকার তার লেখালেখির জন্য ২০২০ সালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে তাঁকে ভূষিত করেছিল। যে ব্যক্তি তাঁর সমস্ত সম্পদ, শ্রম আর সময় দিয়ে সন্তানদের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাঁকেই শেষ বয়সে থাকতে হয়েছিল বৃদ্ধাশ্রমে। প্রিয় পাঠক, লক্ষ করলে দেখবেন যে, আধুনিক সমাজ প্রতি বছর ঘটা করে পালন করে বিশ্ব মা দিবস, বাবা দিবস। প্রত্যেক বছর মে মাসের ২য় রোববার পালিত হয় বিশ্ব মা দিবস আর জুন মাসের ৩য় রোববার বাবা দিবস। ঐদিন সন্তানেরা স্মরণ করে তাদের পিতা-মাতাকে। ঠিক জানিনা মি. শ্রীনাথ খন্ডেলওয়াল-এর ভাগ্যে এমনটি জুটেছিল কি-না। সন্তান জন্ম দিয়ে পিতা-মাতা অকৃপণভাবে তাদের লালন-পালন করে বড় করে তোলেন। স্বাভাবিক নিয়ম হচ্ছে শেষ বয়সে পিতা-মাতা সন্তানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা লক্ষ করি ঠিক তার উল্টোটা। অর্থ-সম্পদ থাকার পরও পিতা-মাতা হয়ে ওঠে সন্তানের বোঝা। এই বাবার মতো নির্মম জীবনকে উপলক্ষ করে কিছু সচেতন মানুষ ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুন সূচনা করে বিশ্ব বাবা দিবসের। উইলিয়াম স্মার্ট নামে মার্কিন পিতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে পালন করা হয় বিশ্ব বাবা দিবস আর মে মাসের ২য় রোববার পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস। বাবা-ছেলের অভিব্যক্তি নিয়ে নির্মিত ছবির কথা মনে পড়ে। ‘ভিত্তোরিও দ্য সিকা’ পরিচালিত ছবি ‘বাইসাইকেল থিভস্’, সত্যজিত রায়ের ‘অপুর সংসার’, ‘অপরাজিত’, ইরানী চলচ্চিত্রকার ‘মাজিদ মাজেদী’র চলচ্চিত্র ‘মাদার’ দেখলে এ সকল কাহিনীর কথা মনে পড়ে। ২০১২ সালের একটি ঘটনা। ভারতের রাজস্থান রাজ্যের ভারতপুরে এক রিকসাচালক বাবলু জাতাভ তার দুধের শিশুকন্যাকে বিশেষ কায়দায় বুকে জড়িয়ে ধরে রিকসা চালান। দৃশ্যটি অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বাবলু জাতাভ ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন শান্তি দেবীকে। বিয়ের ১৫ বছর পর এই সন্তান হয়। অতীব দুঃখের বিষয় হলো এই যে, সন্তান জন্মের পরপরই মারা যায় মা। বাবলু জাতাভ পেশায় একজন রিকসা চালক। তিনি আর দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাননি। তার একমাত্র লক্ষ্য মেয়েকে মানুষ করা। এটাই স্বাভাবিক। এখন সন্তান বড় হয়ে যদি পিতা-মাতার দুঃখটা না বুঝে তবে আর কী বলা যাবে? মোগল সম্রাট বাবর তার পুত্র হুমায়ুনকে দুরারোগ্য ব্যধি থেকে বাঁচানোর জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজের জীবন দান করতে চেয়েছিলেন। এমন আরও অনেক ঘটনার কথা ইতিহাসে জানাযায়। কিন্তু, সেই সন্তান বড় হয়ে যদি তার জন্মদাতা পিতা-মাতাকে ভুলে যায় তাহলে দুঃখের আর সীমা-পরিসীমা থাকে না। ভারতের শ্রীনাথ খন্ডেলওয়াল এমনই একজন দুঃখিত পিতা। সমাজে লেখকের মর্যাদা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যদি হতো তাহলে ‘পদ্মশ্রী’ পাওয়া একজন লেখকের জীবনে এমন দুর্দশা নেমে আসতো না। শেষ জীবনে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে হতো না। আজকাল আমরা বৃদ্ধাশ্রমের কথা শুনি। এটি যে কত বড় নির্মম আর দুঃখের তা বলে শেষ করা যায় না। প্রায়ই শোনা যায় পিতা-মাতার দুর্ভোগের কাহিনী। সন্তান আয়-রোজি করে দিব্যি চললেও পিতা-মাতার জীবন চলে অর্থকষ্টে। আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় বলা চলে তাকে। তাই অনুরোধ- সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলুন, যাতে তারা বড় হয়ে বাবা-মাকে ভুলে না যায়।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
বিশিষ্ট সমাজসেবক নূরুল হক মহাজন স্মরণে সভা

বিশিষ্ট সমাজসেবক নূরুল হক মহাজন স্মরণে সভা