সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ বইমেলা আমাদের সংস্কৃতি আর জ্ঞানের প্রতীক- জেলা প্রশাসক ২০১৮ সালে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ৩৩ ডিসিকে ওএসডি বিএনপির বর্ধিত সভা এবার সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের পরিকল্পনা সভা আল-আকসা কিন্ডারগার্টেন উদ্বোধন সাবেক কাউন্সিলর আবুল হাসনাত কাওসার গ্রেফতার শিক্ষকের মারধরে ছাত্র আহত অ্যাড. নূরুল ইসলামের সমর্থনে প্রচার সভা ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসির উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ এখনো অনেক কাজ বাকি এবারও হাওরের মাটি কাটা হচ্ছে কলমে! জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন জগন্নাথপুরে ৩ দোকান থেকে নগদ অর্থসহ অর্ধকোটি টাকার মোবাইল চুরি মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধের দাবি জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে রাণীগঞ্জ মাদ্রাসায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন চালু : স্বল্প মূল্যে সেবা পাবেন রোগীরা ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মাদ্রাসা সুপারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার

সুনামকণ্ঠের জন্মদিনে প্রত্যাশা

  • আপলোড সময় : ০১-০১-২০২৫ ০১:০২:৪৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০১-২০২৫ ০১:০২:৪৯ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠের জন্মদিনে প্রত্যাশা
অনুপ তালুকদার ২০১১ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি কোন একদিন সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জের অফিস কক্ষে বসে আছি। অফিস সহকারী জনাব সজল বাবুর টেবিলে চোখ রাখতেই নজরে এলো ডাকটিকেট লাগানো একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা, নাম সুনামকণ্ঠ। অনুমতি নিয়ে পত্রিকার পাতায় লেখাগুলো পড়তে শুরু করলাম। সেই দিন হতে আজ অবধি সুনামকণ্ঠের সঙ্গেই আছি। পত্রিকাটির সম্পাদক জনাব বিজন সেন রায়, তিনি অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে পত্রিকাটি চালু রেখেছেন এবং সাপ্তাহিক থেকে দৈনিকে রূপান্তরিত করেছেন। শ্রীসেন সুনামগঞ্জের সাংবাদিকতা জগতে পথিকৃৎ সম্পাদক। তিনি তাঁর পত্রিকা সুনামকণ্ঠকে মনের মাধুরি মিশিয়ে তৈরি করেছিলেন, যার নির্যাস এখনও পাঠকের মুগ্ধতাকে ধরে রেখেছে। সুনামকণ্ঠ এযাবৎকালের সুনামগঞ্জের দীর্ঘস্থায়ী পত্রিকা, আশা থাকছে পত্রিকাটির আয়ুষ্কাল আরও দীর্ঘ হবে। সম্প্রতি পত্রিকাটিতে ‘কণ্ঠসাহিত্য’ নামে একটি পাতা সংযোজিত হয়েছে, যা অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়। নবীন-প্রবীণ কবি লেখকদের লেখা এখানে প্রকাশবঞ্চনা থেকে মুক্তি লাভ করে, যা সুনামগঞ্জের সাহিত্য-ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করবে, একজন পাঠক হিসেবে এমনটাই আশা রাখছি। সম্পাদক বিজন সেন রায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, যার নিদর্শন সুনামকণ্ঠ পত্রিকার পাতায় প্রস্ফোটিত হয়। হাওর বাঁচাও আন্দোলন, যা সুনামগঞ্জ জেলা তথা সমগ্র হাওরাঞ্চলের কৃষক সমাজের প্রাণের সংগঠন। হাওরের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়লে সুনামগঞ্জ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার সংকটগ্রস্ত স্থানে পর্যবসিত হবে এবং এখানকার মানুষের যাপিত জীবন টিকে থাকার কঠিন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে অতিবাহিত হবে। এমনটা না এই কামনা করছি, কিন্তু হলে সুনামগঞ্জের মানুষের জন্যে সেটা কোনও ভালো কীছু বয়ে আনবে না। হাওর আন্দোলনে বিজন সেন রায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন, যার প্রতিফলন পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে প্রতিফলিত হয় বা হচ্ছে। কথা তো অনেক। বললে লেখার বহর বেড়ে গিয়ে পাঠককে হয় তো বিরক্তির তিক্ত স্বাদ গ্রহণে বাধ্য করবে। সে বেয়াদপিটা করতে চাই না। কেবল সাম্প্রতিককালে হাওর নিয়ে কয়েকটি সম্পাদকীয়র প্রসঙ্গ এখানে যৎকিঞ্চিৎ উল্লেখ করছি। ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের সম্পাদকীয়র শিরোনাম, “হাওর ও বালি-পাথর মহাল ইজারা দেওয়া বন্ধ করুন ”। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “...ইতোমধ্যে টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাণবৈচিত্র এতোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সেটাকে এখন জলের মরুভূমি বলে বিবেচনা করা যায়। ...কেবল টাঙ্গুয়া নয় বলতে গেলে সমগ্র ভাটি অঞ্চলের প্রতিটি বিল-নদীই মৎস্যশূন্য হয়ে পড়েছে। হাওরাঞ্চলে কেবল জলজ প্রাণিকূলই নয় উদ্ভিদকূলও প্রজাতি বিলুপ্তির শিকারে পরিণত হয়েছে ও হচ্ছে। প্রসঙ্গক্রমে এখানে উল্লেখ্য যে, ‘জলের মরুভূমি’ শব্দবন্ধের উদগাতা হলেন কবি ইকবাল কাগজী। তিনি সুনামগঞ্জের হাওরঞ্চলের প্রাণবৈচিত্যহীনতার প্রবণতাকে এই চিত্রকল্পময় শব্দবন্ধের দ্বারা প্রকাশ করে থাকেন। ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের সম্পাদকীয়র শিরোনাম, “হাওরকে হাওরের মতো থাকতে দিন”। এতে উদ্ধৃত আছে, “... উন্নয়নের নামে, হাওররক্ষার নামে প্রকৃত প্রস্তাবে হাওরকে ক্রমাগত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছেন, তারপর এখন বলছেন, পানি না নামার কারণে বাঁধ নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে এবং বাঁধে মাটি দেওয়ার জন্য মাটি পাচ্ছেন না। যেখানে সেখানে অপ্রয়োজনীয় ও হাওরবিনাশী বাঁধ নির্মাণের কারণে যে এইসব সংকটের সৃষ্টি হয়েছে সেটা কখনও তাদের চোখে পড়ে না, বরাদ্দ মেরে খাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে কেবল এই সংকট সৃষ্টির ব্যাপারে তারা চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে যান।” ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের সম্পাদকীয়র শিরোনাম, “হাওরকে হারানো ঐশ্বর্য ফিরিয়ে দিতে হবে, তবেই ফিরবে পরিযায়ী পাখিরা”। উপরিউক্ত তারিখে সুনামকণ্ঠ পত্রিকা প্রথম পাতায় তিনটি শিরোনাম এরকম : “হাওরে পানি নিষ্কাশনে ধীর গতি, কৃষক বিপাকে”, “পাকনার হাওরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের দাবি” এবং “টাঙ্গুয়ার হাওরের শিকারীরা বেপরোয়া”। এইসব সংবাদপ্রতিবেদন পাঠ করে বোঝা যাচ্ছে যে, শ্রীসেন হাওর নিয়ে সর্বদাই ভাবিত হন। হাওরপাড়ের সন্তান হিসেবে হাওরের সংবাদগুলো আমার কাছে খুবই হৃদয়গ্রাহী হয়। এ প্রসঙ্গে হাওরাঞ্চলে মনীষী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানের বয়ানে পাই, “ফসল রক্ষা হয় যেভাবে / সেই ব্যবস্থা করতে হবে / খাইতে হবে বাঁচতে হবে / উপায় নাই কৃষি ছাড়া।” কৃষিপ্রধান আমাদের এই সুনামগঞ্জের বর্তমান সমাজ বাস্তবতার পরিসরে উদ্ভূত সবধরণের সমস্যাসঙ্কট বয়ানপূর্বক তার সমাধানের পথ বাতলে দিয়ে সুনামকণ্ঠ তার সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখবে এবং সেইসঙ্গে শাসক-শোষক শ্রেণির মানুষ কর্তৃক শাসিত-শোষিত মানুষকে আরও আরও শোষণ করা ও বঞ্চিত রাখার বিরুদ্ধে পত্রিকাটির অবস্থান অতীতের মতো ভবিষ্যতে সমুন্নত থাকবে আশা করছি। সুনামকণ্ঠের জন্মদিনে এও প্রত্যাশা থাকছে যে, হাওরবাসীর বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার পথে যেন পত্রিকাটি সারথি হিসেবে কাজ করে। সুনামকণ্ঠ পরিবার ও সুনামকণ্ঠের জন্য শুভ কামনা। লেখক : সাধারণ সম্পাদক, সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ

গণশিক্ষা উপদেষ্টার সাথে সুবিপ্রবি স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সাক্ষাৎ