ধোপাজানে ফের সক্রিয় সিন্ডিকেট : এবার রুট পাল্টে বালু পাচার
- আপলোড সময় : ১৯-১২-২০২৪ ১১:৫১:৪৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-১২-২০২৪ ১১:৫১:৪৪ পূর্বাহ্ন

শহীদনূর আহমেদ ::
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টায় ধোপাজান-চলতি নদী বালুমহালে বন্ধ হয় বালু লুট। কিছুদিন যেতে না যেতেই ধোপাজানে ফের সক্রিয় হয়ে পড়েছে বালুখেকো সিন্ডিকেট। নৌপথে বালু পাচার বন্ধ থাকলেও রুট পাল্টে সড়ক পথে ট্রাকের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে বালু। সদর উপজেলার ডলুরা-হালুয়ারঘাট সড়কটি বালু পাচারের নতুন রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। দিনেরবেলায় ঢিলেতালে বালু পাচার হলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে সড়ক পথ দিয়ে দেদারসে বালু পাচার করছে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্র। ইজারাবিহীন সরকারের এই বালুমহাল থেকে প্রতি রাতে শত শত ট্রাক বালু লুট হলেও রহস্যজনক কারণে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এতে সরকারি মহাল থেকে একদিকে যেমন বালু লুট হচ্ছে, অন্যদিকে অবৈধ এই ব্যবসার মাধ্যমে রাতারাতি কালো টাকার মালিক বনে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার সুরমার ইউনিয়নের ডলুরা-হালুয়ারঘাট সড়কের বেড়িগাঁও পয়েন্টে ঘণ্টা সময় অপেক্ষা করে বালু পাচারের হালচিত্র দেখতে পাওয়া যায়। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে অসংখ্য ট্রাক, পিকআপ, ট্রলি প্রবেশ করতে থাকে ডলুরা সীমান্তের নদী তীরের দিকে। সেখানে স্তূপ করে রাখা বালু বোঝাই করে একে একে নিয়ে আসতে থাকে এসব ভারি যানবাহন। যা হালুয়ারঘাট ও মইনপুর এলাকায় সুরমা নদীর পাড়ে স্তূপে ফেলে ফের বালু আনতে যায় এই পরিবহনগুলো। স্তূপে রাখা এসব বালু রাতভর বডি কিংবা বাল্কহেডে বোঝাই করে পাচার করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বলে জানান স্থানীয়রা।
বালু বহনকারী জুয়েল নামে এক ট্রাক চালক বলেন, আমরা কেবল বালু নদীর পাড়ে ফেলে আসি। ট্রাক প্রতি আমাদের টাকা দেয়া হয়। সারারাত এই বালু বহনের কাজ করার কথা জানান তিনি।
বালুর মালিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে জুয়েল বলেন, এই বালু মইনপুর এলাকার জহুর নামের একজনের। এর চেয়ে তিনি কিছু বলতে পারবো না।
এভাবে অন্তত ১০টি ট্রাকের চালককে জিজ্ঞাসা করা হলে বেশিরভাগই বালুর মালিকের নাম বলতে নারাজ। তবে তিনটি ট্রাকের চালক জানান, তাদের ট্রাকে বহনকৃত বালুর মালিক ডলুরা এলাকার আবুল কালাম।
বালু পাচারের দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করার সময় এ প্রতিবেদককে বাধা দিতে আসেন আজাদ নামের বেড়িগাঁও গ্রামের বালুখেকো সিন্ডিকেটের সদস্য। সাংবাদিকের সাথে অসদাচরণ করতে চাইলে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করায় তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
স্থানীয়রা জানান, সুরমার উত্তরপাড়ের মইনপুর, কাইয়ারগাঁও, বেড়িগাঁও, ডলুরাসহ বিভিন্ন গ্রামের একাধিক প্রভাবশালী চক্র এই বালু পাচারের সাথে যুক্ত রয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে ট্রাক ও ট্রলির সাহায্যে বালু পাচার হয়ে থাকে।
এদিকে প্রতিনিয়ত বালুভর্তি ভারি যানবাহন চলাচল করায় ডলুরা-হালুয়ারঘাট সড়কের বিভিন্ন স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে বেড়িগাঁও সেতু। অবৈধভাবে এই বালু পাচার দ্রুত বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন বলেন, ডলুরা-হালুয়ারঘাট সড়কে ছোট ছোট পিকআপ ও ট্রলির মাধ্যমে বালু পরিবহনের অভিযোগ পেয়েছি। এটি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ