খরচার হাওরের রাবার ড্যামে লিকেজ, সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
- আপলোড সময় : ১২-১২-২০২৪ ০৮:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-১২-২০২৪ ০৮:১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
জিয়াউর রহমান ::
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত খরচার হাওরটির সাথে জড়িয়ে আছে লাখো মানুষের স্বপ্ন। এই হাওরে বছরে একটি মাত্র ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে সেটা হলো বোরো ধান। এই হাওরে পৌষ মাসে ধান রোপণ করা হয় আর বৈশাখ মাসে কাটা হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এখন মাত্র অগ্রহায়ণ মাস, এখনই খরচার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে রাবার ড্যাম নষ্ট হওয়ার কারণে।
স্থানীয়রা জানান, রাবার ড্যামে লিকেজের কারণে হাওরের পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। পানি না পেলে কৃষকের চাষ করবেন কিভাবে? এভাবে পানি কমতে থাকলে হাওরে ধান চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মল্লিকপুর হাজিবাড়ির বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, আমি একজন গৃহস্থ। আমাদের হাওরে ১০/১২ হাল ধানের জমি আছে। কিন্তু পানি কমে গেলে ধান চাষাবাদ করতে পারবো না। ফলে আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে অসুবিধা হবে।
একই গ্রামের আব্দুল্লাহ, মালেক, জাহাঙ্গীর সহ অনেকেই সমস্যার সমাধান চান দ্রুতই। পদ্মনগর গ্রামের বাসিন্দা সোলেমান মেম্বার, সুবল, বদিউজ্জামালসহ আরও অনেকে বলেণ, আমাদের হাওরের পানি রক্ষার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
মুক্তিখলা নিবাসী ব্যাংক কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, এভাবে পানি কমতে থাকলে আমাদের হাওরপাড়ের বাসিন্দারা নানা দুর্ভোগের মধ্যে পড়বো। এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখাযায়, রাধানগর, পিয়ারিনগর, ধরেরপাড়, বাগগাঁওসহ অন্যান্য এলাকায় হাওরের পানি ক্রমেই শুকিয়ে যাচ্ছে।
ঘাগটিয়া পানি ব্যবস্থপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড (পাবসস)-এর সাবেক সভাপতি বর্তমানে সদস্য আব্দুল গণি আনছারি বলেন, রাবার ড্যামটি এলজিইডি সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করে। এর জাবতীয় খরচ সমিতিকে বহন করতে হয়। আমরা কৃষকের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে এই ড্যামটির খরচ বহন করে থাকি। বর্তমানে এর খরচ বহন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সরকার এই রাবার ড্যামের পরিচালনার সমস্ত খরচ বহন করুক নয়তো আগের মতো স্লুইচ গেইট নির্মাণ করা হোক। এই রাবার ড্যামটির কাজ শুরু হয় ৭/৮ বছর হয়, তার আগে এখানে স্লুইচ গেইট ছিলো। গত পাচ বছর ধরে রাবার ড্যামের পা¤প হাউজ নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বর্তমানে রাবার লিক হয়ে যাওয়ায় খরচার হাওরের পানি ধরে রাখা যাচ্ছে না। সেই সাথে হাওর শুকিয়ে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এটির জরুরি মেরামত করা দরকার, নইলে হাওরবাসীর অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। আমরা এটি মেরামতে জন্য একটি প্রাক্কলন ব্যয় অফিসে জমা দিয়েছি।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ স¤পাদক বিজন সেন রায় বলেন, কৃষকের এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা অতীব জরুরি। নইলে খরচার হাওরপাড়ের কৃষকগণ বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন, সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। এজন্য কৃষকের সমস্যা দ্রুত সমাধান করা দরকার। হাওরের পানি কমে গেলে সময়মতো জমিতে সেচ দেয়া যাবে না। তাই রাবার ড্যামটি মেরামতে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, আমি কৃষকের কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। রাবার ড্যামটির দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবো।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ