২৮টি ছাত্র সংগঠনের মতবিনিময়, ছিল না শিবির-সমন্বয়করা
- আপলোড সময় : ০৭-১২-২০২৪ ০৯:৪০:৩৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-১২-২০২৪ ০৯:৪০:৩৫ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেছে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ২৮টি ছাত্র সংগঠন। বৃহ¯পতিবার রাজধানীর কাটাবনে একটি রেস্তোরাঁয় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, মূলত ছাত্রদলের আহ্বানে এ বৈঠক হয়। তবে এ বৈঠকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। সভায় শিবিরের রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের সমালোচনা করেন বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অনেকে আবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ধরেন।
বৈঠকে অংশ নেয়- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জেএসডি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ভাসানী ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্রসমাজ (পার্থ), ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র মজলিস, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগ (নুর আলম), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজ এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ স¤পাদক সৈকত আরিফ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
মতবিনিময় সভায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ - এর ভূমিকাসহ সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
মতবিনিময় সভায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। গণঅভ্যুত্থানে দুই হাজারের অধিক মানুষ শহীদ ও ৩০ হাজারের অধিক মানুষ আহত হয়েছে। ভারত রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে এখন নানা ধরনের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা তারই প্রকাশ বলে আমরা মনে করি। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করছি, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত এদেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে হলেও মোকাবেলা করবে।
মতবিনিময় সভায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার, আহতদের সুচিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। দেশে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক যেকোনো পদক্ষেপ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে। একইসাথে, দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ ক্যা¤পাস, শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র ও সংগঠনের অধিকার চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলব। সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যে (১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ও ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্রের সংস্কার শেষে) সংস্কার কমিশন গঠন করে সংস্কার শেষে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ভূমিকার সমালোচনা করে নেতৃবৃন্দ বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র সংগঠনগুলোকে অপরাধের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অভ্যুত্থানে হাজারো জনতার রক্তের উপরে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিলো গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহারের কারণে তা ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা মনে করি, অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠা এই জাতীয় ঐক্যে যদি ভাঙনের সৃষ্টি হয় তার দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বরা কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ