হেফাজতের সমাবেশে নেতারা
ইসকন নিষিদ্ধ করে আ.লীগ ও ভারতকে বার্তা দিতে হবে
- আপলোড সময় : ৩০-১১-২০২৪ ০৮:২৮:০৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩০-১১-২০২৪ ০৮:২৮:০৮ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ভারতের কোনো ‘সেবাদাসকে’ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবে না বলে উল্লেখ করেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, ইসকন নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ও ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। ভারতের কোনো ‘লেসপেন্সার’ (অনুগত সহযোগী) বাংলার ক্ষমতার মসনদে আর আসতে পারবে না।
শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। ‘উগ্রবাদী, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠন ইসকন কর্তৃক মসজিদ ও আদালতের স্থাপনা ভাঙচুর এবং বিচারালয় প্রাঙ্গণে অ্যাডভোকেট শহীদ সাইফুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যাসহ র’এর ইশারায় দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ এই সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখা।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ স¤পাদক মাওলানা মামুনুল হক অভিযোগ করেন, সুপরিকল্পিতভাবে উসকানির মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙা লাগানোর পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। আইনজীবী সাইফুলকে হত্যার ঘটনায় যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, শুধু তাঁদের বিচারের আওতায় আনলে হবে না; এ ঘটনার নেপথ্যে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। সাইফুল হত্যার ঘটনায় মদদদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে আসামি করার দাবি জানান তিনি।
কোনো রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ না করে মামুনুল হক বলেন, ভারতের অনুক¤পা নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে কেউ কেউ। তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভারতকে নয়, দেশের জনগণকে খুশি করুন। ভারত গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে জনগণকে আহত-ক্ষতবিক্ষত করেছে। বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের রাষ্ট্রীয় নীতি পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক স¤পর্ক ছিন্ন করতে মানুষ বাধ্য হবে। ভারত যদি এখনো বাংলাদেশের মানুষের “পালস” (অনুভূতি) বুঝতে ব্যর্থ হয়, বাংলাদেশের মানুষের বিপ্লবকে, ক্ষমতাকে নেগলেট (অবজ্ঞা) করার চেষ্টা করে, অসম্মান করার চেষ্টা করে, তাহলে ভারত “খান খান” হয়ে যাবে।
মামুনুল হক অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ভিনদেশি গুপ্তচর হিসেবে ভূমিকা পালন করছিলেন। ভারতের নির্দেশনা নিয়ে এসে দেশের ভেতরে তিনি নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়েছেন। ইসকনকে ‘সন্ত্রাসী-জঙ্গি সংগঠন’ উল্লেখ করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যদি এই দাবি আদায়ে সরকার অথবা বিচার বিভাগ গড়িমসি করে, তাহলে হেফাজতে ইসলাম বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
প্রতিবেশী কোনো দেশের সঙ্গে ভারত সুস¤পর্ক রক্ষা করতে পারেনি, উল্লেখ করে হেফাজতের এই নেতা বলেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে ভারত সার্ক (দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা) থেকে একঘরে হয়ে গেছে। তাদের পাশে কোনো দেশ নেই। চারপাশ থেকে ক্ষুদ্র শক্তিগুলো হাত-পা, নাক চেপে ধরলে তারা দম নিতে পারবে না। তিনি বলেন, পলাতক শেখ হাসিনা অসংখ্য হত্যা মামলার আসামি। তাঁকে প্রশ্রয়-আশ্রয় দিয়েছে ভারত। ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনা ইসকনের পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আইনজীবী সাইফুল হত্যাকা-ের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে রক্তের হোলি খেলানো, এটাই বাংলাদেশবিরোধী শক্তির অভিন্ন টার্গেট (লক্ষ্য) ছিল বলে মনে করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না তাঁরা। শান্তি হবে হাতিয়ার। ধৈর্য হবে সৌন্দর্য। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করবেন তাঁরা। চিন্ময় দাসকে রিমান্ডে নিয়ে ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের তথ্য নিয়ে উদ্ঘাটন করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে হেফাজতের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা জাবের কাসেমী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা ফজুলল করীম কাসেমী, মাওলানা লোকমান মাজহারী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম, ইসলামি বক্তা আবু ত্ব–হা আদনান প্রমুখ। সমাবেশে সঞ্চালক ছিলেন মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ