সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে শান্তিগঞ্জে সভা আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে জিরো টলারেন্স অরাজকতা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী : কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান ঐতিহ্যের কুস্তিখেলায় সদর উপজেলা চ্যাম্পিয়ন দখলকৃত খাল প্রসঙ্গে জামালগঞ্জে বিএনপি’র কর্মীসভা হাওর মহাপরিকল্পনা মূল্যায়ন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত যুগ যুগ ধরে উন্নয়নবঞ্চিত টাঙ্গুয়ার পাড়ের অর্ধশতাধিক গ্রাম ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট, ছেলেকে পুলিশে দিলেন বাবা ‘হাওরের ১০০ বছর এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা বিশ্বম্ভরপুর পিএফজি’র মতবিনিময় সভা উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে ধন্যবাদ চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদেরকে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন বালু-পাথর মহাল বন্ধ থাকলে বারকি শ্রমিকরা যাবে কোথায়? ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল কিশোরী গণমাধ্যমসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে মব জাস্টিস কঠোর হস্তে দমনের আহ্বান মেডিকেলে ভর্তি: মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনির কোটা বাতিল আবারও বিপ্লব হলে সেটা ভয়াবহ হবে : মুয়ীদ চৌধুরী সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির

অরাজকতা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী : কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান

  • আপলোড সময় : ২৯-১১-২০২৪ ০৩:১১:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-১১-২০২৪ ০৩:১১:২২ পূর্বাহ্ন
অরাজকতা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী : কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী অনাকাক্সিক্ষত অরাজকতা প্রতিরোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেনা সদরের কর্নেল-স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম স¤পর্কিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, বিদেশি কূটনীতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কলকারখানাগুলোকে সচল রাখা, রাষ্ট্রের কেপিআই এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাগুলোকে রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। মূল সড়কগুলোকে বাধামুক্ত রাখা, অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। বিভিন্ন চিহ্নিত অপরাধী ও নাশকতামূলক কাজের ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা; কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান এবং সার্বিকভাবে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাতে তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে, সেজন্য স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান অভিযান নিয়ে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির হাত থেকে স্থানীয় নিরীহ জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ যৌথ অভিযান গত এপ্রিল ২০২৪ থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে মানবাধিকার রক্ষা করে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ১৭৯ জন কেএনএ সক্রিয় সদস্য/সহায়তাকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ মোট ৬০টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণে গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জামাদি (দূরবীন, ম্যাপ, আইডি সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি, ইউনিফর্ম, ল্যাপটপ ইত্যাদি) উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠনটির পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণ এবং অতর্কিত হামলায় এ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সাতজন সদস্য শহীদ হয়েছেন। তিনি বলেন, গত ১৩ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪টি অবৈধ অস্ত্র এবং ৩৬৫ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ৪০টি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং ১৮টি সড়ক অবরোধ নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। কারখানাগুলোকে চালু রাখার জন্য মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। শিল্পাঞ্চল ছাড়াও ৬৩টি বিভিন্ন ধরণের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। যার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত ঘটনা ছিল ১৬টি। সরকারি সংস্থা/অফিস সংক্রান্ত ১টি, রাজনৈতিক কোন্দল ৬টি এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরণের ঘটনা ৪০টি। যৌথ অভিযানে ২২৮ জন মাদক ব্যবসায়ী অথবা মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, বিভিন্ন ধরণের অপরাধের সাথে স¤পৃক্ত মোট ১ হাজার ৩২৮ জন ব্যক্তিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সারাদেশে সদ্যসমাপ্ত বৌদ্ধদের দেশব্যাপী কঠিন চীবরদান উৎসব যেন নিরাপদে পালিত হতে পারে। সেজন্য সেনাবাহিনী অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট বৌদ্ধ সংগঠন ও ধর্মীয় নেতাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী মোট ৪৪৪টি বৌদ্ধ বিহারে কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই কঠিন চীবরদান উৎসব পালিত হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, নভেম্বর মাসের ১৫-১৬ এবং ২০ তারিখে সনাতন ধর্মাবলম্বী মতুয়া গোষ্ঠীর রাসমেলা ও নবান্ন উৎসব উদযাপনের জন্য গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী জেলায় নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, এবং উভয় অনুষ্ঠান অত্যন্ত আনন্দ-উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়েছে। এছাড়াও ১০-১২ নভেম্বর প্রায় ৫০ হাজার দর্শনার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত বরিশালের জগদ্ধাত্রী পূজাতেও নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে। কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, সেনাবাহিনীর এসব কর্মকা- বিনা বাধায় স¤পন্ন হয়নি। গত ২০ জুলাই থেকে অদ্যাবধি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর ১২৩ জন সদস্য হতাহত হয়েছেন। এরমধ্যে ১ জন অফিসার শাহাদৎবরণ করেছেন এবং ৯ জন অফিসারসহ ১২২ জন সেনাসদস্য বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয়েছেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব পদবির অফিসারদের সরকার যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করা হয়, তা গত ১৫ নভেম্বর পুনরায় ৬০ দিনের জন্য বর্ধিত করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার সুষ্ঠু এবং নিয়মতান্ত্রিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সকল পর্যায়ের সদস্যরা সচেষ্ট রয়েছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী অদ্যাবধি ৩ হাজার ৪৩০ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। যার মধ্যে ৩৫ জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০-এরও বেশি বিভিন্ন ধরণের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫৩টি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ৪ জন গুরুতর আহত রোগীকে উন্নত সুচিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দেশের জনগণের জানমাল এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স¤পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা প্রদানসহ সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী প্রধানের দিকনির্দেশনাকে অনুসরণ করে দেশের ৬২টি জেলায় সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম এবং সাধারণ জনগণের সাথে স¤পৃক্ত হয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। এই সমন্বয় ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করে কর্মধারা অব্যাহত রাখতে সেনাবাহিনী অঙ্গীকারাবদ্ধ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স