রমজান শুরু হয়েছে। দাম বাড়ছে ইফতার সংশ্লিষ্ট পণ্যের, অন্যান্য দ্রব্যের দামের লাগাম টানাও সম্ভব হচ্ছে না। অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি মতো প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যনিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের দেশে রমজান মাসে এমনটাই হয়। রমজানকে নিয়ে এক শ্রেণির মানুষÑ যারা আসলে মানুষ নয়, তারা কেবল ব্যবসায়ী, মুনাফা ভিন্ন অন্য কীছু তাদের কাছে কোনও গুরুত্ব পায় নাÑ লাভজনক ব্যবসার প্রতিযোগিতায় নামে। তারা কেউ দাম কমায় না, বরং গলাকাটা দামে পণ্য বিক্রি করে।
ঈদকে সামনে রেখে ক্রমে সব কীছুর দাম বাড়বে; কেবল বাড়বে না মানুষের দাম, মানবিকতার মূল্যবোধ ও নৈতিকতা; পুঁজিবাদের মুনাফার আগুনে পুড়তে পুড়তে ছাই হয়ে যাবে সবকীছু, এমনকি ধর্ম পর্যবসিত হবে অধর্মে। ‘মসজিদে ইফতার না পাওয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ’ (দৈনিক সুনামকণ্ঠের গতকালের একটি সংবাদ শিরোনাম) ঠেকানো যাবে না, ধর্মস্থানে অধর্ম ঘটতেই থাকবে।
তাছাড়া আমরা পত্রিকায় প্রতিবেদন পড়বো স্থানে স্থানে এবারও যথারীতি ঘুষ, চাঁদা, তোলা, হপ্তা-কিস্তি আদায় ইত্যাদি কেবল বাড়ছে। আসলে যা হবার তাই হবে, পুঁজিবাদী সমাজের মুনাফা শিকারের রমরমা অবস্থা সারা রমজান মাসব্যাপী বিরাজ করবে, যেমন প্রতি বছর করে।
জানা কথা, পৃথিবী অশান্ত হয়ে উঠেছে, শান্তির পথে আরও বেশি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত, অশান্তি-অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমাগত। ইউক্রেন-ফিলিস্তিনের যুদ্ধাবস্থা তার প্রমাণ।
বাংলাদেশে যুদ্ধ নেই বটে কিন্তু অশান্তি এখানেও নানা মূর্তিতে দৃশ্যমান, সেটা যুদ্ধাবস্থার দুর্গতির চেয়ে খুব বেশি একটা কম কীছু নয়। শেখ হাসিনার শত চেষ্টার পরও পিছু ছাড়ছে না মূল্যস্ফীতি, দুর্নীতি, মানুষ নামের অমানুষের দুর্বৃত্তায়ন, সাধারণ মানুষের যাপিত জীবনে নেমে আসা দুর্বিষহ দুর্গতিÑ তার ফিরিস্তি এখানে কহতব নয়। কেবল জেনে ভালো যে, মুক্তির মাস রজমানেও মুক্তি মিলছে না অশান্তি-অসুখ থেকে।
রমজানের মাসে আমরা মানুষের শান্তি কামনা করছি। মানুষের মধ্যে বিরাজিত অমানুষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।