গতকালের সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ॥ মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে কেঁদে ফিরছেন হাওরাঞ্চলের নারীকর্মীরা’। কেঁদে ফিরছেন মানে নির্যাতিত হয়েছেন। নির্যাতনের অর্থ কেবল শারীরিক নির্যাতন নয়, কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক না পেয়ে নিঃস্ব হয়ে ফিরেছেন। একজন বলেছেন, ‘আমি সৌদির রিয়াদে ছিলাম। আমি দুই বছরের জন্য যে বাড়িতে কাজের জন্য গিয়েছিলাম সেখানে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে ওরা মারধর করেছে, সম্পূর্ণ বেতন দিত না।’ বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের এই ঘটনা কোনও নতুন কথা নয়। এমন কি কেউ কেউ বিদেশে গিয়ে বিদেশে অবস্থানরত বাঙালি দালালদুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি হয়ে দেশে অবস্থিত স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায়ের সুযোগ করে দিয়েও মুক্তি পাচ্ছেন না। ক্ষেত্র বিশেষে মৃত্যুবরণ করছেন, দেশেও ফিরতে পারছেন না।
অন্যদিকে কেউ কেউ সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। এসব জানার পরও লোকে বিদেশে যাচ্ছেন এবং প্রশাসন আটকাতে পারছে না। এর প্রথম কারণ দেশে কর্মসংস্থান নেই, ফলে বেকার মানুষেরা জীবনে একটু স্বাচ্ছন্দ্য আনয়নের আশায়, বিদশে গিয়ে রোজিরোজগারের লোভে সহজেই দালালদের খপ্পরে পড়ছেন এবং স্থাবরসম্পদ বিক্রি করে জোগাড় করা বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে বৈধ-কিংবা অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। দ্বিতীয় কারণ দেশ থেকে কোনও না কোনও ছিদ্রপথে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়ে আছে, সে-ছিদ্র প্রশাসন বন্ধ করতে পারছেন না। তৃতীয় কারণ জনসচেতনতা তৈরি সম্ভব হয় নি, প্রচেষ্টা চালানোর পরও প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া আরও কারণ আছে এখানে তার ফিরিস্তি নাইবা দিলাম।
অভিজ্ঞমহলের ধারণা : বিদেশে কর্মী প্রেরণ বিষয়ে প্রশাসনের আরও সচেতন হওয়াই কেবল যথেষ্ট নয় বরং এইসব অঘটন না ঘটার জন্য বিদেশে কর্মী প্রেরণের বিষয়ে এমন নীতি ও আইন অনুসরণ করা দরকার যাতে এবিংবিধ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা প্রতিরোধ করা যায় বা আর না ঘটে।