1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

পক্ষপাতে দুষ্ট যখন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল : বিশ্বজিৎ দত্ত

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৪

মানবাধিকার সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে বড় ধরনের সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ। এই বিশেষজ্ঞ দল কিন্তু বাংলাদেশের প্রতি সুনজর রেখে যে এই আহ্বান জানিয়েছেন তা কিন্তু নয়। তারা বরং ক্ষণে ক্ষণে এই কাজ করে। এই কাজ তারা করবে এটাও স্বাভাবিক। কিন্তু এর মধ্যে অস্বাভাবিকতা কোথায়? অস্বাভাবিকতা হলো, এই বিশেষজ্ঞ দল সব দেশেই কি এই ধরনের আহ্বান জানান? এর উত্তর দেওয়ার আগে আমরা একটু পেছনে ফিরতে চাই।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। সেই সময় কালো মানুষদের ওপর কুকুর লেলিয়ে দিয়েছিল সাদা মানুষ। এই প্রতিবেদন যখন প্রচারিত হয়েছিল তখন আমি বেশ হতবাক হয়েছিলাম। আমার মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছিল, এই সময়েও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশেও এই ঘটনা ঘটে! পরে জানলাম, এটি তাদের দেশের স্বাভাবিক ঘটনা। এবং শুধু যে স্বাভাবিক তা নয়, এই ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিজেও বন্ধ করতে পারেননি। ওবামা নিজেও একজন কালো মানুষ, এই লড়াই তারও।
এই যে বর্ণাবাদী চিন্তা বা মানসিকতা যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের, তারা কি নিজেদের দেশে কালো মানুষদের অধিকার বা মানবাধিকার এখনো নিশ্চিত করতে পেরেছে? উত্তরটা দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
জর্জ ফ্লয়েডের কথা কি কারও মনে আছে? জর্জ ফ্লয়েড যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাকে দিনের আলোয় হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে একজন সাদা রঙের পুলিশ হত্যা করেছিল ২৫ মে ২০২০। এটা মনে করলেই কেমন যেন হতাশা জাগে মনে। বর্ণবাদ এখনো প্রবল সেই দেশে।
বর্ণবাদের বাইরে গিয়ে এইবার ফিরি স্কুলের শিশুদের বিষয়ে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশুদের স্কুলে আততায়ী হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা সবচেয়ে জঘন্য ঘটনার মধ্যে অন্যতম। এই ঘটনাগুলো সবচেয়ে বেশি ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। এগুলো কি মানবাধিকার কমিশন বা জাতিসংঘ দেখে না? আশা করি এর উত্তরও দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
এইবার ফিরি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। জাতিসংঘ যখন বাংলাদেশের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছে ঠিক সেইসময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিনির যুদ্ধ প্রবল থেকে প্রবল আকার ধারণ করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ দেখেছে কীভাবে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা করে শিশুসহ অসংখ্য নারী, পুরুষদের হত্যা করেছে। জাতিসংঘ কি এইখানে সরব ছিল? যদি কার্যকরভাবে জাতিসংঘ সরব থাকে তবে এত এত হত্যাকা- হয় কীভাবে? ইসরায়েলি বাহিনীর নিধনযজ্ঞে কেউ দাঁড়াতে পারেনি। জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস বা যুক্তরাষ্ট্র তো নাই-ই। তারা গোটা পৃথিবীকে পায়ে ঠেলে দিয়ে হত্যাযজ্ঞের উৎসবে মেতে ছিল। গোটা পৃথিবী ছি ছি করলেও ইসরায়েলি বাহিনী তা কি শুনেছে? তাদের দেশের কি মানবাধিকার ছিল?
শুধু কি ইসরায়েল, সৌদি আরবে যখন নারীদের বিভিন্নভাবে হেয় করা হয় বছরের পর বছর বা আফগানিস্তানে তালেবানরা যখন মেয়েদের পড়া বন্ধ করে তাদের ঘরে বন্দি করে রাখতে চায় তখন কি জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস বা যুক্তরাষ্ট্র সরব থাকে? তাদের উচ্চারণ কি ইসরায়েল, সৌদি আরব বা আফগানিস্তানের কানে পৌঁছায়? না। আরও বড় উদাহরণ হলো, মিয়ানমারের এত বড় জনগোষ্ঠী নিয়ে যে বাংলাদেশের নাভিশ্বাস, এই শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরানোর বিষয়ে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস বা যুক্তরাষ্ট্র কেউই জোরালো ভূমিকা পালন করতে পারেনি। বরং এইক্ষেত্রেও তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শুরুতেই বলছিলাম, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল সব দেশেই কি এই ধরনের আহ্বান জানান? উত্তর হলো, না। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল সেইসব দেশেই নিজেদের খেয়াল খুশি মতো মানবাধিকার সুরক্ষা বা মানবাধিকার বিষয়ক বক্তব্য দেয় বা সেইসব দেশে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় যেখানে তারা আসলে কথা বলে আরাম পায় বা তাদের সুযোগ দেওয়া হয়। যদি তাই না হয় তবে বর্ণবাদ ইস্যু যুক্তরাষ্ট্রে এখনো ভয়াবহ আকার ধারণ করতো না, ইসরায়েলি বাহিনী কবেই জাতিসংঘের আহ্বানে যুদ্ধ থামিয়ে দিত। এইসব কিছুই হয়নি। তা যে হবে তাও অমূলক। কারণ জাতিসংঘ ঠিকভাবে কাজ করে না। তাই জাতিসংঘের সেই বিশেষজ্ঞ দলের প্রতি আহ্বান, যদি মানবাধিকার ইস্যুতে সরব থাকেন তবে সবদেশেই সরব থাকবেন। বেছে বেছে পক্ষ নিয়ে মানবাধিকার সুরক্ষার কথা বলে আসলে শোভন নয়। এতে বরং জাতিসংঘের ওপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাবে।
[বিশ্বজিৎ দত্ত, গণমাধ্যমকর্মী]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com