1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শিশুদের বডি শেমিং বা বুলিং এবং আমাদের সমাজ

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

:: জুবায়ের রহমান চৌধুরী ::
বডি শেমিং নিয়ে কিছু বলতে গেলে খুব সহজেই প্রশ্ন জাগে বডি শেমিং মানে কি? পাঠ্যপুস্তকের ভাষায় বলতে গেলে, কোনও ব্যক্তির শারীরিক অবস্থাকে উপহাস করা বা উপহাস করার মত কিছু কাজই হলো বডি শেমিং। আর বুলিং মানে হলো অপমান বা উপহাস করা। অনেকের কাছে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নাও হতে পারে। বিষয়টি আরও একটু পরিষ্কার করা যেতে পারে, স্কুল কলেজে আমরা অনেক সময়ই ঠাট্টার ছলে বন্ধুদের বলে থাকি “তুই অনেক মোটা, কিংবা তুই তো অনেক পাতলা, বাতাসের সাথে উড়ে যাবি।” এই বিষয়গুলো বডি শেমিং বা বুলিং এর অংশ হতে পারে।
শিশুদের বডি শেমিং নিয়ে কেন কথা বলা দরকার? কারণটা সহজ ভাবে বুঝানো যাবে, অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করে থাকেন, বডিং শেমিংয়ের প্রবণতা একজন মানুষের মধ্যে আসে স্কুল কিংবা কলেজ থেকে। স্কুলে হয়তো বা আমরা মজার ছলেই বন্ধু-বান্ধবকে বডি শেমিং করে থাকি। এক্ষেত্রে অভিভাবকেরও কোনো দৃষ্টি নেই। কারণ এই ধরণের বডি শেমিং আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এবং এটাকে বিনোদনের একটা অংশ হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে অভিভাবক ছাড়াও শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ে না। কিন্তু দিনশেষে এই বিষয়টি যে হাস্যরসাত্মক থাকছে না তার উদাহরণ পাওয়া যায় এই বছরের ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আজওয়াদ আহনাফ করিমের মৃত্যুতে। কি দোষ ছিলো তার, প্রশ্ন করলে একটাই উত্তর মিলবে অন্যদের তুলনায় একটু মোটা ছিলো, ওজন ছিলো ৯০ এর কাছাকাছি। ধারণা করা হচ্ছে তার সহপাঠী-শিক্ষকদের বডি শেমিংয়ে (শারীরিক গড়ন, বর্ণ নিয়ে কাউকে হেয় বা উৎপীড়ন করা) অ্যানোরেক্সিয়া এবং বুলিমিয়ায় শিকার হয়ে তাকে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে। সহপাঠী আর শিক্ষকদের বুলিং ভুলতে পারেনি সে। ইউটিউবের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে ওজন ৬০ কেজিতে নিয়ে এসেছিলো। ১৬ বছরের আহনাফ তো চলে গেছে যেতে যেতে রেখে গেছে কিছু ক্ষোভ আর বলে গেছে আর কেউ যেন বুলিং এর শিকার না হয়।
২ বছর আগের অরিত্রির কথা ভুলে গেছেন? ভুলে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। পরীক্ষা হলে মোবাইল পাওয়া গিয়েছিল তার কাছে, শাস্তি ছিল বহিষ্কার আর অভিভাবকের অপমান। বহিষ্কার হওয়াটা মেনে নিতে পারলেও নিজের সামনে অভিভাবকের অপমান মানতে পারেনি। পরবর্তীতে শিক্ষককে বরখাস্ত করা হলেও অরিত্রিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি আর। সেও চলে গেছে যেতে যেতে বলে গেলো- নিয়মের সংস্কার চাই। সেই সংস্কারটা হয়তো সে পাবে না পাবে পরবর্তী মানুষগুলো।
দুইটি ঘটনার মাধ্যমে একটা বিষয় পরিষ্কার, আমরা যেই বিষয়টি অনেক বেশি কৌতুকময় মনে করছি এটা আসলে একটি জঘন্যতম অপরাধ। তবে এর সমাধান কি? এই দুইটি ঘটনার পরও কি আমরা বডি শেমিং কিংবা বুলিং বন্ধ করে দিয়েছি? উত্তরটি হলো- না। আজও বন্ধুমহলে কিংবা স্কুল কলেজে, আমাদের আশেপাশে অনেকেই শিকার হচ্ছে বডি শেমিং বা বুলিং এর। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পারিবারিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা এবং অভিভাবকদের দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমরা আর আহনাফ কিংবা অরিত্রিকে হারাতে চাই না। কারণ তারাই তো গড়বে আগামী পৃথিবী। উপন্যাসের ভাষায় বলতে গেলে- এই সকল বয়সের কিশোর-কিশোরীরা নরম মাটির মতো। অভিভাবক, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাকে যে আকৃতি দিবেন তারা ঐ আকৃতিতেই গড়ে উঠবে।
এই বয়সের কিশোর-কিশোরীদের আবেগ অনেক বেশি থাকে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। তাই তাদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করা উচিত। অভিভাবকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনার সন্তানের সাথে যত্নশীল আচরণ করুন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com