সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতায় সুনামগঞ্জের অবদান অত্যন্ত অনন্য। সাংবাদিকতার উন্মেষ ও বিকাশ সাধনের যুগ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই ধারা সগৌরবে অব্যাহত আছে। সুনামগঞ্জের কৃতী সাংবাদিকগণ জাতীয় পর্যায়ের অনন্য অবদান রেখে স্মরণীয়-বরণীয় হয়েছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকতার পরিমণ্ডলেও সুনামগঞ্জের অবদান সর্বজনবিদিত। এখন সুনামগঞ্জ থেকে আর কোনো সাপ্তাহিক পত্রিকা বের হয় না। সাপ্তাহিক পত্রিকার দিন ও চাহিদা শেষ হয়ে গেছে। এখন সুনামগঞ্জ থেকে বেশ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে।
সুনামগঞ্জের মতো প্রান্তকোণের জেলা শহর থেকে একদিন দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হবে এটা ছিল কল্পনার অতীত। সুনামগঞ্জে দৈনিক পত্রিকার মধ্যে ‘সুনামকণ্ঠ’ একটি স্বনামধন্য পত্রিকা। সাপ্তাহিক হিসেবে দীর্ঘ ১৪ বছর প্রকাশনা অব্যাহত রাখার পর দৈনিক হয়েছে সুনামকণ্ঠ। দৈনিক হিসেবে নিয়মিত পত্রিকাটি বের হয়। পত্রিকায় জেলায় সংঘটিত ঘটনাসমূহের বিবরণ ছাড়াও জেলার মানুষের সুখ-দুখ, অভাব-অভিযোগ, হাসি-কান্না, মানুষের পাওয়া, না পাওয়ার ব্যথা-বেদনা সুনিপুণভাবে তুলে ধরা হয়।
যেকোনো পত্রিকা বা মিডিয়ার মূলনীতি হলো দেশ-মাটি-মানুষ ও প্রগতি। এই নীতিগুলোর সাথে সম্পৃক্ত থেকে যে কোন পত্রিকা বের হলে তাতে জনগণের আকর্ষণ ও গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। সুনামকণ্ঠ সংবাদ প্রকাশে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ। এতে সুনামকণ্ঠ মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। এটা বলা যায় এসব নীতিমালা অব্যাহত রেখে পত্রিকা চালালে পত্রিকার ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল না হয়ে পারে না।
আমি পেশাগতভাবেই সাংবাদিক ছিলাম। আমি অত্যন্ত ভালোভাবেই উপলব্ধিই করি পত্রিকা প্রকাশ ও প্রকাশনা অব্যাহত রাখা কঠিন ও দুরূহ। পত্রিকার প্রাণশক্তি বিজ্ঞাপন। কিন্তু জেলা শহরে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপনের অভাব। বিজ্ঞাপন না পেলে পত্রিকার আর্থিক সংকটের সম্মুখিন হয়। এতে সংবাদপত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পাদকসহ কারো অবস্থা খুব ভালো নেই বা থাকার কথা নয়। এরপরেও সম্পাদক বিজন সেন রায় অত্যন্ত কষ্ট করে এবং পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হকের আন্তরিক সহযোগিতায় পত্রিকার নিয়মিত প্রকাশনা অব্যাহত রেখেছেন।
এই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আমি পত্রিকার সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানাই। আমার বিশ্বাস একটি পত্রিকা সমবেত প্রচেষ্টার সোনালী ফসল। তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আমি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছি। সুনামকণ্ঠ’র ৭ম বর্ষে পদার্পণলগ্নে আমি সুনামগঞ্জের কয়েকজন কৃতী সাংবাদিককে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। তারা হলেন ফজলুল হক সেলবর্ষী, মকবুল হোসেন চৌধুরী, শাহেদ আলী, প্রজেশ কুমার রায়, মুহাম্মদ আব্দুল হাই, হাসান শাহরিয়ার, সালেহ চৌধুরী, পীর হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
[লেখক : হোসেন তওফিক চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী ও কলামিস্ট]