সুনামগঞ্জ , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ , ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার বন্ধে একসাথে কাজের আহ্বান শান্তিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, রোগীদের চরম ভোগান্তি বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালিত নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়ক সুনামগঞ্জে ২ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসী কনফারেন্স অনুষ্ঠিত নদ-নদীর পানি বাড়লেও হাওরে পানি কম বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে অধিকার’র মানববন্ধন ভাটির হাওরে ক্ষেতমজুররাই নব্য উৎপাদক শক্তি ডিজেলের দাম কমল লিটারে ২ টাকা, পেট্রল-অকটেনে ৩ টাকা দোয়ারায় বজ্রপাতে মারা গেলো তিন গরু রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা প্রশাসনের জব্দকৃত বালুভর্তি বাল্কহেড উধাও! তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় হাওরে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি নারীনেত্রী দিপালী চক্রবর্তী’র ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
​বেপরোয়া বালুখেকো চক্র

লুট হচ্ছে মাহারাম নদীর বালু

  • আপলোড সময় : ১০-০৮-২০২৪ ০১:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৮-২০২৪ ০১:৪৭:১৭ পূর্বাহ্ন
লুট হচ্ছে মাহারাম নদীর বালু

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নেমে আসা যাদুকাটা নদীর প্রশাখা মাহারাম নদী। গত কয়েক মাস ধরে চিহ্নিত বালুখেকো চক্রের সদস্যরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিদিন ও রাতে এই নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে কোটি কোটি টাকার বালু লুট করছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বালুখেকো চক্র যেন বালু লুটের মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীরবর্তী বসত বাড়ি, ফসলি জমি। কিন্তু বালুখেকো চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রাম সংলগ্ন মাহারাম নদীটির অবস্থান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাহারাম নদী থেকে স্থানীয় প্রভাশালী বালুখেকো চক্রটি দিনে ও রাতে নদীর উৎস মুখসহ নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকটি গ্রুপে দলবদ্ধ হয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে শতাধিক নৌকায় বালু উত্তোলন করছে। পরে বালুভর্তি নৌকা উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যা¤প সংলগ্ন পাটলাই নদীতে অপেক্ষমাণ বড় বড় বাল্কহেড ও স্টিলবডি নৌকায় করে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিচ্ছে। উত্তোলিত এসব বালু থেকে প্রভাবশালী চক্ররা রয়েলটির নামে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করছে। বালু উত্তোলন করা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিলে তাদের উপর হামলা চালায় বালুখেকো চক্রটি।

অবাধে বালু উত্তোলনে নদীতীরের বসতবাড়ি, ফলসি জমি ও প্রকৃতি-পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকায় বেপরোয়াভাবে লুটপাট চলছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, জুলাই মাসে পুলিশের সহযোগিতায় মাহারাম নদীতে অভিযান চালিয়ে সম্প্রতি বালু উত্তোলনের অভিযোগে বালুখেকো চক্রের একজনকে আটক করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামস সাদাত মাহমুদ উল্লাহ। পরে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পায় সে। এছাড়াও ট্যাকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই কালাম উদ্দিন ৪জনসহ বালুবোঝাই ২টি নৌকা আটক করে মামলা দায়ের করেছিলেন
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাহারাম নদীতে ১৯৮৮ সালের পূর্বে পানি আসলে উপজেলার মাটিয়ান, সমসাসহ ছোট-বড় ২৩টি হাওর পানিতে তলিয়ে যেত। তখন অকাল বন্যার হাতথেকে ফসল রক্ষার জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতা ও উপজেলা পরিষদ থেকে মাহারাম নদীতে বেড়িবাঁধ দেয়া হত। একপর্যায়ে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় পাহাড় থেকে নেমে আসা বালু ও নুড়িপাথরে মাহারাম নদীটি প্রাকৃতিকভাবে ভরাট হয়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবে বালুর বাঁধ সৃষ্টি হওয়ায় বিগত ৩৬ বছর ধরে মাহারাম নদীতে সরকারি খরচে আর বেড়ি বাঁধ দিতে হয় না। গত কয়েক বছর ধরে বালুখেকো চক্র মাহারাম নদীতে বালু উত্তোলন করায় প্রাকৃতিক বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

মাহারাম গ্রামের বাসিন্দা শামিম আহমেদ, কবির মিয়া, জসিম মিয়াসহ অনেকেই জানান, ফসলি জমিসহ নদী থেকে প্রতি রাতেই শতাধিক নৌকা দিয়ে বালু করে নিচ্ছে এই চক্র। গ্রামবাসী তাদের নিষেধ করলেও বালু উত্তোলন বন্ধ করছে না। উল্টো আরও মামলা ও হামলার হুমকি দিচ্ছে প্রভাবশালীরা।

বড়দল গ্রামের কৃষকনেতা সাঞ্জব উস্তার বলেন, এভাবে বালু উত্তোলন করতে থাকলে মাটিয়ান হাওরসহ উপজেলার সকল হাওরের ফসল অকাল বন্যায় তলিয়ে যাবে। মাহারাম নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সবাইকে নিয়ে হাওর, বসতবাড়ি রক্ষায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা পারভিন জানান, এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স