স্টাফ রিপোর্টার ::
আলোচিত কৃষক নেতা আজাদ মিয়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হলে জামিন না দিয়ে নুরুল হককে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার।
এদিকে, নুরুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে কারগারে প্রেরণে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন আজাদ মিয়ার পরিবার ও স্বজনরা। খবর শুনে মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
গত ১৪ মার্চ দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আজাদ মিয়া। এর ৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ মার্চ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই হত্যাকা-ের ঘটনায় মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুুরুল হক, ইউনিয়নের জালালপুরের বাসিন্দা উকিল আলী ও তার ছেলে পাভেল আহমদ, রিপন মিয়ার নাম উল্লেখসহ ১২ জনকে আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত আজাদের বড় ভাই আজিজ মিয়া। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি উকিল আলীকে তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করে পুলিশ। এই হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে পরবর্তীতে শহরের আরপিননগর এলাকার মাহবুব ও শ্রাবণ নামে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অন্যতম আসামি পাভেল ও রিপন মিয়া এখনো পলাতক রয়েছে।
অপরদিকে, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে গত ১৪ মে হাইকোর্ট থেকে ১ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নেন মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হক। মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থায়ী জামিনের জন্য হাজির হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
এসময় বাদীপক্ষের হয়ে আইনি সহযোগিতা ছিলেন অ্যাড. সৈয়দ শামছুল ইসলাম, অ্যাড. বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, অ্যাড. মল্লিক মইনুদ্দিন, অ্যাড. মাসুক আলম, অ্যাড. শেরেনূর আলী, অ্যাড. আব্দুল হক, অ্যাড. তৈয়বুর রহমান, অ্যাড. সৈয়দ জিয়াউল ইসলাম, অ্যাড. বুরহান উদ্দিন দোলন, অ্যাড. মণীষ কান্তি দে মিন্টু, অ্যাড. নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল, অ্যাড. শামছুল করিম হিরণ, অ্যাড. রমজান আলী, অ্যাড. বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, অ্যাড. আমিরুল হক, অ্যাড. হানিফ সুলেমান, অ্যাড. মতিয়া বেগম, আজমল হোসেনসহ প্রায় ২০ জন আইনজীবী।
এদিকে আদালতের এই আদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নিহত আজাদের পরিবার ও হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
মামলার বাদী মো. আজিজ মিয়া বলেন, আমরা আইনের প্রতি আস্থাশীল। হাওর দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হকসহ সংঘবদ্ধ চক্র আমার ভাইকে হত্যা করেছে। মামলার অন্যতম আসামি পাভেল আহমদ ও রিপন মিয়া এখনো পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে হত্যাকা-ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান তিনি।