শাল্লা উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য গৃহীত ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ২০টি প্রকল্পে বরাদ্দ এসেছে ৬৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৪নং শাল্লা ইউপিতে ৫টি প্রকল্পে ১৭৯ জন হত দরিদ্রদের জন্য ১৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই প্রকল্পগুলোতে চলছে অনিয়ম। ওই ইউপির সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য এবং পিআইসি’র সভাপতি মনিরা বেগমের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরীর (ফুল মিয়া) বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরী আমাকে সভাপতি বানিয়েছেন কিন্তু প্রকল্পে কতজন শ্রমিকের প্রয়োজন, কত টাকা বরাদ্দ এসেছে শ্রমিকদের জন্য, এ সম্পর্কে তিনি কিছুই অবগত করেননি।’ মনিরা বেগম আরো বলেন, ‘বাড়ির পাশে মাত্র কয়েক টুকরি মাটি ফেলা হয়েছে। এরপর থেকেই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরী আমাকে বারবার মাস্টার রোলের কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিতে চাপ দিচ্ছেন। তাছাড়া ইনাতাবাদ কালভার্ট হতে বাগের হাটি পাকা রাস্তায় মাটি ভরাট, হোসেনপুরের সাবুল মিয়া, নাইম মিয়ার বসতভিটার পাশে মাটি ভরাট এবং শ্রীহাইল কমিউনিটি ক্লিনিক পার্শ¦বর্তী মাটি ভরাট প্রকল্পে ৫০ জন শ্রমিকের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও সেসব জায়গায় যেমন কোনো শ্রমিক নেই, তেমনি এখন পর্যন্ত মাটি ভরাটের কাজও হয়নি।’
সীমের কান্দা পাকা রাস্তা হতে সিংগুয়ার হাওরের নুরুল আমিন মিয়ার জমি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার প্রকল্পটিতেও অনিয়মের শেষ নেই। ৩৩ জন শ্রমিকের জন্য ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও সেখানে কোনো শ্রমিক নেই। মনে হচ্ছে কয়েক টুকরি মাটি ফেলেই কাজের ইতি টানা হয়েছে। এ রাস্তার দায়িত্বে রয়েছেন সাজু মেম্বার। সাজু জানান, নিয়মানুযায়ী ৪০ দিনের কাজ হয়নি সত্য, তবে এভাবেই আমরা সবসময় ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ করছি।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হাই খানকে খুঁজেও পাওয়া যায়নি এমনকি তাঁর মুঠোফোনটি পর্যন্ত বন্ধ রেখেছেন।
এ ব্যাপারে শাল্লা ইউপিতে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে পরিদর্শক হিসেবে নিয়োজিত উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের সিএস মুজিবুর রহমানের সাথে আলাপ করলে তিনি প্রকল্পগুলোর কাজের বাস্তবায়ন বিষয়ে বলেন, ‘নিয়ম অনুসারে অনেক কিছুই হয়নি।’ এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি। এতো অনিয়ম আর দুর্নীতির মধ্যে শেষ হতে চলেছে শাল্লা উপজেলার ৪০ দিনের কর্মসূচির কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব ব্যাপারে দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজনবোধ মনে করছেন না। পুকুর চুরির মতো ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন সংশ্লিষ্টরা। আমরা চাই, এদের দুর্নীতি এখনই থামাতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।