বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে পৌরসভার পর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ছদ্মবেশে স্বতন্ত্র পরিচয়ে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যপদে প্রার্থী দিচ্ছে জামায়াত। স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়ার দৌড়ে এবারও পিছনে পড়েছে তারা। পৌরসভার পর ইউনিয়ন পরিষদেও সুবিধা করতে পারেনি জামায়াত। টানা নির্বাচনগুলোতে ভরাডুবি হচ্ছে তাদের।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষক এবং জামায়াতের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দলীয় প্রতীক না দেওয়ায় কেন্দ্রীয় কমিটি সরাসরি মাঠ পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনের বিষয়ে কোন স্পষ্ট ধারণা দেয়নি। তবে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তাদের বাধাও দেয়নি। বরং তার পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
জানা গেছে, ছাতকে অনুষ্ঠিত প্রথম দফা নির্বাচনে কালারুকা ইউনিয়নে জামায়াতের প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান সুফি আলম সোহেল এবার পরাজিত হয়েছেন। তার পক্ষে জেলা এবং সিলেট মহানগরের নেতাকর্মীরাও মাঠে কাজ করেছেন। জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি সুফি আলম সোহেল শেষ পর্যন্ত বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। ছাতকের ওই ইউনিয়নে জামায়াত কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করতে পারলেও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফা নির্বাচনে অন্য কয়েকটি ইউনিয়নে প্রার্থী দিলেও দাঁড়াতেই পারেনি। ভোটাররা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এবার ৫ম এবং ৬ষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে জামায়াতের বিভিন্ন সময়ের দায়িত্বশীল তিনজন নেতা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
জামালগঞ্জের ফেনারবাঁক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গেলবারের মতো এবারও প্রার্থী হয়েছেন জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি ও সুনামগঞ্জ পৌর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মো. সিরাজুল হক ওলি। সুনামগঞ্জ শহরে জামায়াতের কর্মসূচি পরিচালনায় যারা বর্তমানে নেতৃত্ব দেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নে জেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে জেলা জামায়াতের সহ সম্পাদক আবু হানিফ নোমান মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সুনামগঞ্জ শহরের আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে জামায়াত নেতা খায়রুল বাশার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দানের পর এই তিন নেতা নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে রাজনৈতিক পরিচয় করে ভোটভিক্ষা প্রার্থনা করলেও তাদের প্রচারণায় জামায়াত-শিবিরের নেতাদের যুক্ত করেছেন। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে ইউপি সদস্য পদেও পরিকল্পিতভাবে জামায়াত ‘ছদ্মবেশে’ প্রার্থী দিয়েছে। প্রায় ৩০জনের মতো সদস্যপ্রার্থী বর্তমানে ৫ম ও ৬ষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে সক্রিয় রয়েছেন বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদ খানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে এর আগে সাংবাদিকদের কাছে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোমতাজুল হাসান আবেদ স্বতন্ত্র পরিচয়ে তিন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন জমাদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ইউপি সদস্যপদেও দলীয় প্রার্থী দেওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।