হোসাইন আহমদ ::
দেখার হাওর, খাইর হাওর ও জামখলার হাওরের পর তলিয়ে গেল সাংহাইর হাওরের প্রায় ৩ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমির বোরো ফসল। কৃষক অসহায় তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলেন একে একে তলিয়ে যাওয়া জমির সোনালী ধান।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাংহাইর হাওরে ডুংরিয়া শিবপুর গ্রামের পূর্বে ব্রিজের নিচে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বরাদ্দ না দেয়ায় ওই জায়গায় কোন বাঁধ তৈরি হয়নি। যার ফলে সাংহাইর হাওরের প্রায় ৩ হাজার ৭৭০ হেক্টর বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়ে। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইবাদত হোসেন উক্ত স্থানে বাঁধ নির্মাণ করার জন্য জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাসুদ মিয়াকে তাগিদ দেন। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মো. মাসুদ মিয়া গত মঙ্গলবার শিবপুর গ্রামের শিবপুর গ্রামের পূর্বের ব্রিজের নিচে খালে বাঁধ তৈরি ও পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের জয়সিদ্ধি এলাকার শান্তিপুর গ্রাম সংলগ্ন ভঙ্গিরডর বাঁধে বাঁশ ও বস্তায় মাটি দিয়ে প্রায় শতাধিক শ্রমিককে মুজুরির ভিত্তিতে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বাঁধ নির্মাণ করেন। কিন্তু গত শুক্রবার রাতে পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের জয়সিদ্ধি এলাকার শান্তিপুর গ্রাম সংলগ্ন ভঙ্গিরডর বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে সাংহাইর হাওরের প্রায় ৩ হাজার ৭৭০ হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে গেছে।
এলাকার একাধিক কৃষক জানিয়েছেন, বৈশাখের প্রথমদিকে শিলা বৃষ্টিতে অর্ধেক ধানের শীষ থেকে পড়ে যায় এবং ধান কাটার শ্রমিক সংকট থাকায় সময়মতো ধান কাটা যায়নি। ফলে সাংহাইর হাওরের প্রায় ৯৫ ভাগ বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। এই দুর্যোগ মুহূর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মাঠ কর্মকর্তা, ইউপি সদস্য ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য (পিআইসি) ও ঠিকাদারদের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় কৃষকরা।
জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাসুদ মিয়া জানান, সাংহাইর হাওরের ফসল রক্ষার্থে শিবপুর গ্রামের পূর্বের খালে বাঁধ তৈরি করেছি এবং ভঙ্গিরডর বাঁধে মাটি ফেলে রক্ষার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে তলিয়েই গেছে সাংহাইর হাওর। আমরা সাধ্যের সবটুকু দিয়ে বোরো ফসল রক্ষার চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত আমরা হেরে গেছি।