কর্মস্থল রেখে বিদেশবপাড়ি
শতাধিক শিক্ষক চাকরিচ্যুত
- আপলোড সময় : ০৬-১১-২০২৪ ০২:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৬-১১-২০২৪ ০২:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন
পীর জুবায়ের ::
দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা এমন শতাধিক শিক্ষকদের প্রতি ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এর মধ্যে ১১১ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি, বিভাগীয় মামলা এবং কারণ দর্শানোর নোটিশও প্রদান করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকরাও রয়েছেন।
জানা গেছে, ছুটি নিয়ে বছরের পর বছর বিদেশে লাপাত্তা থাকা এবং কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় পাঠদানে বেগ পেতে হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। তবে বেশিরভাগ শিক্ষকই জমিয়েছেন বিদেশে পাড়ি। ফলে জেলার প্রাথমিক শিক্ষাখাতে দেখা দিয়েছে শিক্ষক সংকট।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনার পর থেকে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি বাড়লেও ২০২৩ সাল এবং চলতি বছরে এর হার ছিল বেশি।
সূত্র জানায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার সিচনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. নাজনীন ফেরদৌসী এবং সদর উপজেলার গুদিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই বিদেশে চলে গেছেন। ফলে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় তাদেরকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও ছাতক উপজেলার বাশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়াজ মোর্শেদ এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদরুন নাহারকেও দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তথ্য বলছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলার দীর্ঘদিন যাবৎ অনুপস্থিত থাকা ১১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮৩ জনই ২০২৩ সাল থেকে অনুপস্থিত। এর মধ্যে দুই জন প্রধান শিক্ষক ছাড়া সবাই সহকারী শিক্ষক। তবে তাদের মধ্যে ৬২জন নারী শিক্ষক রয়েছেন।
এদিকে, একই অভিযোগে চলতি বছরে ২৪জন নারী এবং ৪জন পুরুষ সহকারী শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ছাতক উপজেলার যুগলনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মৌলী রানী পাল এবং জগন্নাথপুর উপজেলার শিরূন আফরিন দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিত। ফলে তাদের পদ শূন্য দেখিয়ে বিভাগীয় মামলার পাশাপাশি বাকিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
অন্যদিকে, শিক্ষকের অনুপস্থিতে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, দেশ ছেড়ে যে সকল শিক্ষকেরা বিভিন্ন কারণে বিদেশে থেকে যাচ্ছেন তারা তো চাকরি ছেড়ে যাচ্ছেন না। ফলে তাদের পদগুলো ফাঁকা দেখানো যায় না। এতে অবশ্যই প্রাথমিকে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষানুরাগী আছাদুর রহমান আছাদ বলেন, শিক্ষার প্রথম স্থরটাই হচ্ছে প্রথমিক শিক্ষা। শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে এখানে যদি শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয় তাহলে তা পুরো জাতির জন্য নেতিবাচক দিক। আমরা আশা করবো অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের জায়গা পূরণ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহন লাল দাশ বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ অনুপস্থিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আমরা খুব কঠোর অবস্থানে রয়েছি। এরই মধ্যে অনেককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছি এবং বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ