সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আজ সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কৃষক শুকুর আলী হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ধর্মপাশায় অর্থনৈতিক শুমারি উপলক্ষে প্রশিক্ষণ কর্মশালা হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী আজ, নেই কোনও আয়োজন ১২০ টাকা খরচে পুলিশে চাকরি পেলেন ৭২ জন আ.লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে : মিজান চৌধুরী এসএ পরিবহনে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় পণ্য : আটক ৬ বিনা তদন্তে, পাইকারি হারে কাউকে গ্রেপ্তার করব না : আইজিপি দু-এক দিনের মধ্যে সুখবর আসছে জামায়াত আমির জগন্নাথপুরে ইউনিয়ন বিএনপির আনন্দ মিছিল জগন্নাথপুরে সাংবাদিকদের সাথে নবাগত ইউএনও’র মতবিনিময় তাহিরপুর থানা পুলিশের সম্প্রীতি সমাবেশ দোয়ারাবাজারে হেফাজতে ইসলামের সংবাদ সম্মেলন বাড়িঘর-দোকানপাট ভাঙচুর, ১ জন গ্রেফতার জামালগঞ্জে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মশালা অনুষ্ঠিত তাহিরপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত প্রধান শিক্ষকসহ দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রতিবন্ধী দিবসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দলকে শক্তিশালী করতে ত্যাগীদের মূল্যায়নের বিকল্প নেই

শিশুর অপুষ্টি দূর করতে বাংলাদেশে মার্কিন বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী গবেষণা

  • আপলোড সময় : ০৩-১১-২০২৪ ১২:৫৫:২৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-১১-২০২৪ ১২:৫৫:২৪ পূর্বাহ্ন
শিশুর অপুষ্টি দূর করতে বাংলাদেশে মার্কিন বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী গবেষণা
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: বাংলাদেশে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধিতে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটার তথা অণুজীবের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণা চালিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকেরা। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট মাইক্রোবায়োটার উপস্থিতি অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের শরীরের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এমন একটি বিশেষ খাদ্যতালিকা তৈরি করেছেন, যা এই গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোবায়োটার বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং এই তালিকা বাংলাদেশের কিছু অপুষ্ট শিশুদের ওপর প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছেন তাঁরা। গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স জার্নালে। বিজ্ঞানীরা ফ্যাকালিব্যাকটেরিয়াম প্রসনিটজি নামে একধরনের ব্যাকটেরিয়ায় ‘ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যামাইড হাইড্রোলেজ’ নামে একটি এনজাইম বা উৎসেচক পেয়েছে যা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যক্রমকে শক্তিশালী করে শারীরিক বৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় বায়োমলিকিউল বা জৈব অণু গঠনে ও ভাঙনে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে। গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন, অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমগুলো সংশ্লিষ্ট আশ্রয়দানকারীর (হোস্ট) শরীরে যে সংকেত আদান প্রদানকারী উপাদান আছে- সেগুলো তৈরি ও পরিবর্তন করতে পারে। এর ফলে ওই ব্যক্তির বিপাকক্রিয়া, মস্তিষ্কের কার্যকলাপ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মতো নানা জৈবিক কার্যক্রম ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়। অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ও হোস্টের মধ্যে এই পারস্পরিক সম্পর্ক বিশেষ করে মানব জীবনের প্রথম কয়েক বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, অপুষ্টি বাংলাদেশি শিশুদের অন্ত্রের অণুজীবের কার্যক্রম ব্যাহত করে। যার ফলে অন্ত্রের অণুজীব স্বাভাবিক পরিমাণ থাকে না এবং এটি সামগ্রিক বৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে একটি বিশেষ পরিপূরক খাদ্যতালিকা তৈরি করেছেন গবেষকেরা। যার নাম এমডিসিএফ-২। এই খাদ্যগুলো অপুষ্ট শিশুদের অন্ত্রের উপকারী অণুজীবের পরিমাণ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এমডিসিএফ-২-এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলো থেকে দেখা গেছে, এই খাদ্যতালিকা অনুসরণ করার পর অপুষ্ট শিশুদের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি, অন্ত্রের স্বাস্থ্যের মান উন্নতি এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা গেছে। এ ছাড়া এসব ট্রায়ালে দেখা গেছে, এমডিসিএফ-২-এর খাবার খাওয়ার পর অন্ত্রে ফ্যাকালিব্যাকটেরিয়াম প্রসনিটজির পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। যা ‘ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যামাইড হাইড্রোলেজ’ - নামক একটি এনজাইম ধারণ করে যা শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। এই গবেষণায় গবেষকেরা ‘ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যামাইড হাইড্রোলেজ’ এনজাইমের ভূমিকা আরও বিশদভাবে অনুসন্ধান করেছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা বোঝার চেষ্টা করেছেন, কীভাবে এমডিসিএফ-২ ডায়েট নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়ার কার্যকলাপ বৃদ্ধি করে এবং এমন সক্রিয় অণুজীব উৎপন্ন করে যা শিশুদের বৃদ্ধির জন্য উপকারী। তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, এমডিসিএফ-২ তালিকায় থাকা খাদ্য শিশুর অন্ত্রের রাসায়নিক গঠনে প্রভাব ফেলতে পারে। এই বিষয়টি ফ্যাকালিব্যাকটেরিয়াম প্রসনিটজি থেকে নিঃসৃত ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যামাইড হাইড্রোলেজ এনজাইমের কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্ত্রের এন-অ্যাসাইল অ্যামাইডস স্তরের ওপর প্রভাব ফেলে। গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, এই এনজাইমটি দুটি কাজ করে। বিশেষ করে, এটি এন-অ্যাসাইল অ্যামাইডসকে হাইড্রোলাইজ বা পানিযুক্ত করতে পারে এবং সংশ্লেষণ করতে পারে। অন্যদিকে, মানুষের ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যামাইড হাইড্রোলেজ এনজাইমের চেয়ে ফ্যাকালিব্যাকটেরিয়াম প্রসনিটজির এনজাইমটি অন্ত্রের বিভিন্ন স্তরের ওপর কার্যকর এবং অন্ত্রে যেসব এনজাইম উৎপাদনকারী অণুজীব আছে সেগুলোর প্রতি সংবেদনশীল নয়। এর ফলে, এটি খুব সহজেই অন্ত্রের সংকেত প্রদানকারী অণুগুলোর গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হিসেবে গড়ে তোলে। যা-ই হোক, এই গবেষণার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এমডিসিএফ-২ ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনার অধীনে যেসব শিশুরা ছিল, তাদের অন্ত্রে ওলিওলেথানোলামাইড (ওইএ) নামে একধরনের লিপিড স্তর কম ছিল- যা শিশুদের বিপাকক্রিয়া কমিয়ে দেয়, যার ফলে, তাদের বৃদ্ধির ত্বরান্বিত হয়েছে। ওলিওলেথানোলামাইডের এই হ্রাস সম্ভবত ফ্যাকালিব্যাকটেরিয়াম প্রসনিটজির থেকে নিঃসৃত এনজাইমের মাধ্যমে ঘটে এবং এটি অন্ত্রের অণুজীবগুলোর কার্যকলাপ ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে সম্পর্ককে তুলে ধরে। এ ছাড়া, এই এনজাইম ¯œায়ুতন্ত্রকে আরও সক্রিয় করে এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স