সাগর-রুনি হত্যায় সেনসিটিভ ব্যক্তি জড়িত : শিশির মনির
- আপলোড সময় : ১৪-১০-২০২৪ ০৮:৫৭:৪৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৪-১০-২০২৪ ০৯:২৯:৪০ পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার :: সাগর-রুনি হত্যা মামলায় একাধিক সেনসিটিভ ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রবিবার দুপুরে সুনামগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এই তথ্য জানান তিনি। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাগর-রুনির মামলার নথি আমার কাছে এসেছে। মামলার নথিটি প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা যায় এটি একটি সেনসিটিভ কেইস। সেনসিটিভ মানুষ এটার সাথে জড়িত। সেনসিটিভ মানুষের নাম আসামি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে এসেছে। এটি গোপনীয়, এখনো এটি চার্জশিট হয়নি, পাবলিক ডকুমেন্টস হয়নি। একজন দুইজন মানুষ আছেন, যারা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। গোপনে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। একজন আছেন রাজসাক্ষী হতে চাচ্ছেন। গোপনীয়তা থাকায় সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছেনা। তিনি বলেন, সরকার টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করেছে, এখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি রয়েছেন। তাদের আনুসন্ধানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আগামীকাল (আজ সোমবার) তাদের সাথে আমার একটি মিটিং রয়েছে। এক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মামলার ১২ বছর চলেগেছে যার অনেক তথ্য নষ্ট হয়েগেছে। কিছু ক্লু পাওয়া যাচ্ছে যার মূলকপি পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন সময়ে এটি নষ্ট হয়েগেছে। যাইহোক এগুলি এখনো বলা যাবে না। তবে ভালো কিছু হবে এটা প্রত্যাশা। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে উন্মুক্তভাবে স্বাধীনভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা পেয়েছেন। বিগত সরকারের আমলে সরকার গণমাধ্যকর্মীদের গলা চেপে ধরেছিল। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা নামে যে একটি কালো আইন তৈরি করা হয়েছিল, সেই আইনটি পুরোপুরি বাতিলের প্রচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের তদন্ত কাজ এখন শুরু হয়েছে। এতোদিন দেশে গণতন্ত্র, বাক-স্বাধীনতা ও আইনের শাসন ছিল না। ফলে দেশে ব্যাভিচার, অনাচার, অত্যাচার আর জুলুমের স্বর্গরাজ্যে ছিল। এই সমস্ত মন-মানসিকতা পরিহার করে আগামীতে যারা রাজনীতি করবেন তাদের প্রত্যেককে সৎ এবং জনদরদী হতে হবে। নতুবা আইনের শাসনের যেমন ব্যত্যয় হবে, তেমনি জনগণের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সাধিত হবে না। তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিচার বিভাগকে আলাদা করে তাদের স্বায়ত্ব শাসন দিয়ে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা গেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হলে জনগণ অন্তত ন্যায়বিচার পাবে এ জন্য সকল ধরনের কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যদি আমাকে সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা) আসনে নির্বাচন করার অনুমতি দেন, তাহলে তিনি প্রার্থী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং সুনামগঞ্জের সকল গণমাধ্যমকর্মীদের সকল ধরনের সহযোগিতা করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স¤পর্কে শিশির মনির বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বিষয়ে সরকার আমাদের মতামত চেয়েছিল, আমার বলেছি এটি স¤পূর্ণরূপে বাদ দেয়ার জন্যে। কোনো সভ্য সমাজে এমন আইন থাকতে পারে না। মানুষের যদি কথা বলার স্বাধীনতা থাকে না তাহলে মুক্ত সাংবাদিক, গণতন্ত্র ও মানুষের বাকস্বাধীনতা থাকবে না। এই আইন সম্পূর্ণরূপে বাদ হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শামস উদ্দিন, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রওনক আহমদ বখত, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান পীর, সুনামগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কুলেন্দু শেখর দাস তালুকদার, বাসস প্রতিনিধি আল হেলাল, বাংলা ভিশনের প্রতিনিধি মাসুম হেলাল, সাংবাদিক কুদরত পাশা, আরটিভি প্রতিনিধি শহীদ নুর আহমদ, আমিনুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মাসুক মিয়া, শাহজাহান চৌধুরী, একুশে টিভির প্রতিনিধি মো. আব্দুস সালাম, দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিনিধি হাসান চৌধুরী, সাংবাদিক আমির হোসাইনসহ আরো অনেকেই। সাংবাদিক জসিম উদ্দিন, সেলিম আহমদ তালুকদার ও সোহেল আলম সভা সঞ্চালনা করেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ