সুনামগঞ্জ , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা প্রশাসনের জব্দকৃত বালুভর্তি বাল্কহেড উধাও! তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় হাওরে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি নারীনেত্রী দিপালী চক্রবর্তী’র ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ভারী বর্ষণ ও ঢলে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বড় বন্যার আশঙ্কা নেই সাবেক প্রেমিকাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতের পর আত্মহত্যার চেষ্টা ছাত্রলীগ নেতার রঙ্গারচরে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণ জেলা প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগ : সবুজের সন্ধানে নতুন যাত্রা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন : তারেক রহমান গণতন্ত্র পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া তাহিরপুরের ৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই জনবল সংকট, চরম ভোগান্তিতে মানুষ সুনামগঞ্জসহ ৬ জেলায় বন্যার শঙ্কা দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ এবার সুনামগঞ্জ সীমান্তে ১৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ : সতর্ক অবস্থানে বিজিবি ঠিকাদারের দখলে বিদ্যালয়ের মাঠ, প্রায় তিন বছর ধরে খেলাধুলা বন্ধ সুনামগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনে উন্নয়ন ও সংস্কারে নানা উদ্যোগ গৃহীত সহকারী শিক্ষকের নানা ‘অপকর্মের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ দোয়ারাবাজার সীমান্তে ৩ অনুপ্রবেশকারী আটক ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উদ্যোগে দরিদ্র রোগীদের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন

আদ্যাশক্তি মহামায়া শ্রীদুর্গা

  • আপলোড সময় : ০৯-১০-২০২৪ ১২:২২:০৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-১০-২০২৪ ১২:২২:০৫ পূর্বাহ্ন
আদ্যাশক্তি মহামায়া শ্রীদুর্গা
অরূপ রতন চৌধুরী দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ, ভয় ও শত্রুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা। যে দেবী অগম্যা বা যাকে সহজে পাওয়া যায় না, তিনিই মা দুর্গা। চ-ীর বর্ণনা অনুযায়ী, দুর্গম নামের অসুরকে বধ করায় মায়ের নাম হয়েছে দুর্গা। দুর্গম অসুরের কাজ ছিল জীবকে দুর্গতিতে ফেলা। দুর্গমকে বধ করে যিনি স্বর্গ থেকে বিতাড়িত দেবগণকে হৃত রাজ্য ফিরিয়ে দেন এবং জীবজগৎকে দুর্গতির হাত থেকে রক্ষা করেন, তিনিই মা দুর্গা। যুগে যুগে বিভিন্ন সংকটের সময় তিনি মর্ত্যধামে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভিন্ন রূপে, বিভিন্ন নামে। তিনি তাই আদ্যাশক্তি মহামায়া, ব্রহ্মসনাতনী। হিন্দুধর্মের শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবী দুর্গা ‘দুর্গতিনাশিনী’ বা সব দুঃখ-দুর্দশার বিনাশকারিণী। দেবী দুর্গা হলেন শক্তির রূপ, তিনি পরব্রহ্ম। দশভুজা মায়ের দশটি হাত দশ দিকের প্রতীক। অর্থাৎ বিশ্বব্রহ্মা-ের সব জায়গায়ই ঈশ্বর বিরাজমান। মা দাঁড়িয়ে আছেন ত্রিভঙ্গ ভঙ্গিমায়। তা হলো সৃজনী, পালনীত ও সংহারী শক্তির প্রতীক। যিনি ব্রহ্মারূপে সৃষ্টি করেন, বিষ্ণুরূপে পালন করেন, শিবরূপে তিনিই বিশ্ব প্রসারিণী, মাতৃরূপিণী শ্রীশ্রী দুর্গা। দেবী দুর্গা নিগুর্ণ অবস্থায় এ জগৎসংসারে বিরাজ করেন। তাঁর জন্ম হয় না, আবির্ভাব ঘটে। আমাদের দেশে জাতীয়ভাবে এ উৎসবকে সর্বজনীন দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হিসেবে অভিহিত করা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে একে শরৎকালের বার্ষিক মহোৎসব হিসেবে ধরা হয় বলে একে শারদীয় উৎসবও বলা হয়। সনাতন পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) করে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আসবেন। ফিরেও যাবেন ঘোটকে। যার ফল হচ্ছে-ফসল ও শস্যহানি। কার্তিক মাসের দ্বিতীয় দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত এ উৎসবকে মহালয়া, ষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও দশমী নামে পালন করা হয়। অকালে বা অসময়ে দেবীর আগমন বা জাগরণ বলে বসন্তকালের এ উৎসবকে বাসন্তী পূজা বা অকালবোধনও বলা হয়। দেবী মা দুর্গা ব্রহ্মশক্তিস্বরূপিণী। তিনি বিভাসিতা মাতৃশক্তি, তিনি জগজ্জননীরূপে সর্বভূতে বিরাজমান। তিনি সব প্রাণীতে চেতনা রূপে, বুদ্ধি রূপে, শক্তি রূপে, শান্তি রূপে, শ্রদ্ধা রূপে, দয়া ইত্যাদি রূপে বিরাজিতা। মায়ের পদতলে মহিষাসুর অশুভ এবং অহংকারের প্রতীক, যা জগতের অমঙ্গলের হেতু। ত্রিনয়নী মহাদেবী দুষ্টের দমনে, শিষ্টের পালনে আবিভূর্তা। এ পূজার মূর্তি কল্পনায় ফুটে ওঠে শৌর্য, বীর্য (কার্তিক), জ্ঞান-ভক্তি (সরস্বতী), সিদ্ধি (গণেশ), সম্পদ (লক্ষ্মী)। ষষ্ঠীতে সন্ধ্যাকালে দেবীর বোধন হয়। পূজার ষষ্ঠীতে দেবীর ষষ্ঠাদিকল্প, অর্থাৎ আবাহন, বোধন, আমন্ত্রণ, অধিবাস প্রভৃতি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিমায় দেবীর অর্চনা করা হয়ে থাকে। সপ্তমীতে অন্যতম অনুষ্ঠান নবপত্রিকা প্রবেশ কদলী বৃক্ষসহ আটটি উদ্ভিদ এবং জোড়া বেল একসঙ্গে বেঁধে শাড়ি পরিয়ে বধূর আকৃতির মতো তৈরি করে দেবীর পাশে বসানো হয়। একে বলে কলাবউ। পূজার অষ্টমীতে বিশেষ অনুষ্ঠান অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিতে দেবীর বিশেষ পূজা হয়, যার নাম ‘সন্ধিপূজা’। প্রতিবছর দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী পূজার শেষে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে নবমী পূজার দিনও এ পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে। পুরাণমতে, দেবগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যের কুমারীপূজার প্রচলন শুরু। কুমারীপূজা হলো ১৬ বছরের কম বয়সী অরজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা। শারদীয় দুর্গাপূজার অংশ হিসেবে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দুর্গা যেন পুরো জগতের প্রতীক। দুর্গাপূজা সমাজের সব বর্ণ, শ্রেণি ও পেশার মানুষের মিলনমেলা ও উৎসব। সবার কল্যাণ ভাবনা ও প্রেরণার উৎস। মায়ের ডান পাশে রয়েছেন লক্ষ্মী ও গণেশ, বাঁ পাশে সরস্বতী ও কার্তিক। লক্ষ্মী ঐশ্বর্য ও সম্পদের, গণেশ সিদ্ধিদাতা ও গণ-ঐক্যের, সরস্বতী জ্ঞানের, কার্তিক শৌর্য-বীর্যের প্রতীক। মাতৃরূপিণী মহাশক্তির শরণাপন্ন হলে মা সন্তানের জন্য কল্যাণকর যথার্থ অভীষ্ট প্রদান করেন। শ্রীশ্রী চ-ীতে তাঁর স্তুতি করে বলা হয়েছে, ‘হে দেবী, তুমি স্বর্গ ও মুক্তিদায়িনী। মা, শত্রু বিনাশ করে তুমি আমাদের বিপদ হইতে এত দিন বাঁচিয়েছ, তেমনি ত্রিভুবনের সব দুঃখ, বিপদও তুমিই সব সময় দূর করিও। এই আমাদের প্রার্থনা।’ মা দুর্গা জগৎজুড়ে আছেন। সব ধরনের, অকল্যাণের হাত থেকে তিনি আমাদের, অর্থাৎ তাঁর সন্তানদের রক্ষা করে থাকেন। শাস্ত্রমতে, দেবতা ও অসুরদের সংগ্রামে শরণাগত শুভবুদ্ধি ও কল্যাণকামী দেবতাদের তিনি সব সময় বরাভয় দান করেছেন। তিনিই সব শক্তি ও গুণের আধারস্বরূপিণী। [লেখক : অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরী প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস)]

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা

রুট পাল্টে নৌপথে সক্রিয় চোরাকারবারিরা