সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এবার নয়, পরের নির্বাচনে ফিরছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাড়ছে ‘টার্গেট কিলিং’, অস্ত্রের উৎস নিয়ে শঙ্কা সুনামগঞ্জের ৩টি আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন, মাঠ ছাড়ছেন না বঞ্চিত নেতারা স্থানীয়দের পরামর্শ নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষায় কাজ করবো : পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একাধিক হোটেল ও রেস্তোরাঁকে জরিমানা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন,কারো প্ররোচনায় ভুল করবেন না: আনিসুল হক অসুস্থ মানিকের পাশে দাঁড়ালেন বিশ্বম্ভরপুরের ইউএনও মেরিন দেবনাথ ‘মব ভায়োলেন্স’ থেকে সরে আসতে হবে : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ডিসিদের রদবদল করা হচ্ছে : গোলাম পরওয়ার পর্যটকদের ফেলা প্লাস্টিক-পলিথিন-কাঁচের বোতলে ভরেছে হাওর, ব্যাহত কৃষিকাজ সবাই মিলে টাঙ্গুয়ার হাওরকে সংরক্ষণ করতে হবে ছাতকে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১৫ সনাক-ইয়েস-এসিজি’র অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা কমরেড শ্রীকান্ত দাশের জীবনাদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় তাহিরপুরে ১১শ কৃষককে বিনামূল্যে বোরো ধানের বীজ ও সার বিতরণ নজির হোসেনের দুর্গ নিয়ে দুই শিষ্যের কাড়াকাড়ি, মনোনয়নে আনিসুল, জনপ্রিয়তায় এগিয়ে কামরুল প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে জটিলতা, আপিল করবে মন্ত্রণালয় ৩০ একর জায়গা দখল করে মৎস্য নিধনের অভিযোগ ১০ মাসে ঢাকায় ১৯৮ হত্যাকান্ড সদর হাসপাতালের কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আদ্যাশক্তি মহামায়া শ্রীদুর্গা

  • আপলোড সময় : ০৯-১০-২০২৪ ১২:২২:০৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৯-১০-২০২৪ ১২:২২:০৫ পূর্বাহ্ন
আদ্যাশক্তি মহামায়া শ্রীদুর্গা
অরূপ রতন চৌধুরী দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ, ভয় ও শত্রুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা। যে দেবী অগম্যা বা যাকে সহজে পাওয়া যায় না, তিনিই মা দুর্গা। চ-ীর বর্ণনা অনুযায়ী, দুর্গম নামের অসুরকে বধ করায় মায়ের নাম হয়েছে দুর্গা। দুর্গম অসুরের কাজ ছিল জীবকে দুর্গতিতে ফেলা। দুর্গমকে বধ করে যিনি স্বর্গ থেকে বিতাড়িত দেবগণকে হৃত রাজ্য ফিরিয়ে দেন এবং জীবজগৎকে দুর্গতির হাত থেকে রক্ষা করেন, তিনিই মা দুর্গা। যুগে যুগে বিভিন্ন সংকটের সময় তিনি মর্ত্যধামে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভিন্ন রূপে, বিভিন্ন নামে। তিনি তাই আদ্যাশক্তি মহামায়া, ব্রহ্মসনাতনী। হিন্দুধর্মের শাস্ত্র অনুযায়ী, দেবী দুর্গা ‘দুর্গতিনাশিনী’ বা সব দুঃখ-দুর্দশার বিনাশকারিণী। দেবী দুর্গা হলেন শক্তির রূপ, তিনি পরব্রহ্ম। দশভুজা মায়ের দশটি হাত দশ দিকের প্রতীক। অর্থাৎ বিশ্বব্রহ্মা-ের সব জায়গায়ই ঈশ্বর বিরাজমান। মা দাঁড়িয়ে আছেন ত্রিভঙ্গ ভঙ্গিমায়। তা হলো সৃজনী, পালনীত ও সংহারী শক্তির প্রতীক। যিনি ব্রহ্মারূপে সৃষ্টি করেন, বিষ্ণুরূপে পালন করেন, শিবরূপে তিনিই বিশ্ব প্রসারিণী, মাতৃরূপিণী শ্রীশ্রী দুর্গা। দেবী দুর্গা নিগুর্ণ অবস্থায় এ জগৎসংসারে বিরাজ করেন। তাঁর জন্ম হয় না, আবির্ভাব ঘটে। আমাদের দেশে জাতীয়ভাবে এ উৎসবকে সর্বজনীন দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হিসেবে অভিহিত করা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে একে শরৎকালের বার্ষিক মহোৎসব হিসেবে ধরা হয় বলে একে শারদীয় উৎসবও বলা হয়। সনাতন পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়া) করে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আসবেন। ফিরেও যাবেন ঘোটকে। যার ফল হচ্ছে-ফসল ও শস্যহানি। কার্তিক মাসের দ্বিতীয় দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত এ উৎসবকে মহালয়া, ষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও দশমী নামে পালন করা হয়। অকালে বা অসময়ে দেবীর আগমন বা জাগরণ বলে বসন্তকালের এ উৎসবকে বাসন্তী পূজা বা অকালবোধনও বলা হয়। দেবী মা দুর্গা ব্রহ্মশক্তিস্বরূপিণী। তিনি বিভাসিতা মাতৃশক্তি, তিনি জগজ্জননীরূপে সর্বভূতে বিরাজমান। তিনি সব প্রাণীতে চেতনা রূপে, বুদ্ধি রূপে, শক্তি রূপে, শান্তি রূপে, শ্রদ্ধা রূপে, দয়া ইত্যাদি রূপে বিরাজিতা। মায়ের পদতলে মহিষাসুর অশুভ এবং অহংকারের প্রতীক, যা জগতের অমঙ্গলের হেতু। ত্রিনয়নী মহাদেবী দুষ্টের দমনে, শিষ্টের পালনে আবিভূর্তা। এ পূজার মূর্তি কল্পনায় ফুটে ওঠে শৌর্য, বীর্য (কার্তিক), জ্ঞান-ভক্তি (সরস্বতী), সিদ্ধি (গণেশ), সম্পদ (লক্ষ্মী)। ষষ্ঠীতে সন্ধ্যাকালে দেবীর বোধন হয়। পূজার ষষ্ঠীতে দেবীর ষষ্ঠাদিকল্প, অর্থাৎ আবাহন, বোধন, আমন্ত্রণ, অধিবাস প্রভৃতি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিমায় দেবীর অর্চনা করা হয়ে থাকে। সপ্তমীতে অন্যতম অনুষ্ঠান নবপত্রিকা প্রবেশ কদলী বৃক্ষসহ আটটি উদ্ভিদ এবং জোড়া বেল একসঙ্গে বেঁধে শাড়ি পরিয়ে বধূর আকৃতির মতো তৈরি করে দেবীর পাশে বসানো হয়। একে বলে কলাবউ। পূজার অষ্টমীতে বিশেষ অনুষ্ঠান অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিতে দেবীর বিশেষ পূজা হয়, যার নাম ‘সন্ধিপূজা’। প্রতিবছর দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী পূজার শেষে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে নবমী পূজার দিনও এ পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে। পুরাণমতে, দেবগণের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যের কুমারীপূজার প্রচলন শুরু। কুমারীপূজা হলো ১৬ বছরের কম বয়সী অরজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা। শারদীয় দুর্গাপূজার অংশ হিসেবে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দুর্গা যেন পুরো জগতের প্রতীক। দুর্গাপূজা সমাজের সব বর্ণ, শ্রেণি ও পেশার মানুষের মিলনমেলা ও উৎসব। সবার কল্যাণ ভাবনা ও প্রেরণার উৎস। মায়ের ডান পাশে রয়েছেন লক্ষ্মী ও গণেশ, বাঁ পাশে সরস্বতী ও কার্তিক। লক্ষ্মী ঐশ্বর্য ও সম্পদের, গণেশ সিদ্ধিদাতা ও গণ-ঐক্যের, সরস্বতী জ্ঞানের, কার্তিক শৌর্য-বীর্যের প্রতীক। মাতৃরূপিণী মহাশক্তির শরণাপন্ন হলে মা সন্তানের জন্য কল্যাণকর যথার্থ অভীষ্ট প্রদান করেন। শ্রীশ্রী চ-ীতে তাঁর স্তুতি করে বলা হয়েছে, ‘হে দেবী, তুমি স্বর্গ ও মুক্তিদায়িনী। মা, শত্রু বিনাশ করে তুমি আমাদের বিপদ হইতে এত দিন বাঁচিয়েছ, তেমনি ত্রিভুবনের সব দুঃখ, বিপদও তুমিই সব সময় দূর করিও। এই আমাদের প্রার্থনা।’ মা দুর্গা জগৎজুড়ে আছেন। সব ধরনের, অকল্যাণের হাত থেকে তিনি আমাদের, অর্থাৎ তাঁর সন্তানদের রক্ষা করে থাকেন। শাস্ত্রমতে, দেবতা ও অসুরদের সংগ্রামে শরণাগত শুভবুদ্ধি ও কল্যাণকামী দেবতাদের তিনি সব সময় বরাভয় দান করেছেন। তিনিই সব শক্তি ও গুণের আধারস্বরূপিণী। [লেখক : অধ্যাপক ডা. অরূপরতন চৌধুরী প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস)]

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
এবার নয়, পরের নির্বাচনে ফিরছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা

এবার নয়, পরের নির্বাচনে ফিরছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা