সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামি চিন্তাবিদদের করণীয় শীর্ষক ‘জাতীয় পরামর্শ সভা’ রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন শায়েখ আল্লামা মাহমুদুল হাসান। শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান মাওলানা একেএম আশরাফুল হক। তিনি জানান, শনিবার দুপুরে বৈঠকটি হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ২০২৪ সাল আমাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বছর। গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের একটি পট পরিবর্তন ঘটেছে। যার মূলশক্তি ছিল সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। দেশবাসী এক হলে বড় কিছু করা যায়। এ সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার সঙ্গে ওলামায়ে কেরামের ঐক্য ছিল লক্ষণীয়। এ পর্যায়ে অভূতপূর্ব জাতীয় ঐক্য সংহতিরও নজির সৃষ্টি হয়েছে। এক পর্যায়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা রাষ্ট্রসহ মৌলিক অনেক পর্যায়ে সংস্কার করবেন বলে উদ্যোগী হয়েছেন। এ সংস্কার কাজে ইসলামি আদর্শ ও মূল্যবোধ এবং দেশ ও জাতির স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা, সেটা দেখা ওলামায়ে কেরামের দায়িত্ব। নতুন গঠিত প্রতিটি কমিশনে শতকরা ৯২ ভাগ মুসলমানের স্বার্থ দেখার দায়িত্ব ওলামায়ে কেরামের। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনও পদক্ষেপ যেন না নেওয়া হয়, সেটা পর্যবেক্ষণ করা এবং সংবিধানসহ প্রতিটি কমিশনে ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামি চিন্তাবিদদের অংশীদারত্ব বহাল রাখা একটি কর্তব্য।
জাতীয় পরামর্শ সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুফতি রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ৫৩ বছরে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ আসেনি। ভিন্নমত তো থাকবেই, কিন্তু পরামর্শের ভিত্তিতেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এই সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের যে কোনও সৎ পরামর্শ আমরা মেনে নিতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা এ কে এম আশরাফুল হক বলেন, নেজামে ইসলাম পার্টি ১৯৫৪ সনে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে ঐক্যের মাইলফলক সৃষ্টি করেছিল। পরবর্তীতে আইডিয়াল ও ইত্তেহাদুল উম্মাহও প্রতিষ্ঠায় নেজামে ইসলাম পার্টি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আজকের এইদিনেও দেশ, জাতি ও উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের ছোটখাট সকল মতভেদ ভুলে তিনি ‘সম্মিলিত ইসলামী ফোরাম’ গঠনের প্রস্তাব করেন।
ফয়জুল করীমের নতুন প্রস্তাব :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, আগে সমমনা আকিদার ওলামায়ে কেরামের মধ্যে ঐক্য হতে হবে। পরে তারাই নির্ধারণ করবে কাদের সঙ্গে ঐক্য হওয়া উচিত।
এছাড়াও এসময় আরও বক্তব্য রাখেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হক রায়পুরী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, মুফতি মিজানুর রহমান সাইদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল কাদের, ইমাম সমাজ বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মিনহাজ উদ্দিন ও মাওলানা মুশতাকুন্নবী প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা শওকাত হোসেন সরকার, মুফতি জাফর আহমদ, খেলাফত আন্দোলনের একাংশের আমির মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, ইসলামী আন্দোলনের অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ ও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন ইকরাম, চট্টগ্রামের মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজা, মুফতি বুরহান উদ্দিন রব্বানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সহ-সভাপতি মাওলানা কবির আহমদ আড়াইহাজারী, খুলনার মুফতি গোলাম রহমান প্রমুখ। -বাংলা ট্রিবিউন