সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে অনুরোধ করে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) নোটিশটি পাঠান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানির কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আইনি নোটিশে পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নোটিশে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ইলিশ একটি সামুদ্রিক মাছ। এই ইলিশ বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায়। এই ইলিশ যখন সমুদ্র থেকে নদীতে বিশেষ করে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে আসে, তখন এই ইলিশ মাছ অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ে উঠে। এই কারণে সামুদ্রিক ইলিশের চেয়ে পদ্মার ইলিশ অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু। প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিশাল ও বিস্তৃত সমুদ্র সীমা রয়েছে। ভারতের জলসীমায় ব্যাপকভাবে ইলিশ উৎপাদন হয়। এই বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ইলিশ আমদানির কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু ভারত মূলত বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশে ভারতীয় এজেন্টরা ও মাছ রপ্তানিকারকরা সারা বছর ধরে পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ মজুদ করে রাখে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করে। বাংলাদেশের পদ্মা নদীর সব ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি ও পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশের জনগণ বাজারে গিয়ে পদ্মার নদীর ইলিশ পায় না। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণকে সামুদ্রিক ইলিশ খেতে হয়, যা পদ্মার ইলিশের মতো সুস্বাদু নয়।
এ আইনজীবী আরও জানান, বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে যে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়, তা বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যথেষ্ট নয়। এমতাবস্থায় যদি পদ্মার সব ইলিশ ভারতে চলে যায় তাহলে বাংলাদেশের জনগণ এই পদ্মার ইলিশ খেতে পারবে না। এভাবে বাংলাদেশের জনগণকে পদ্মার ইলিশ থেকে বঞ্চিত করে ভারতের জনগণকে পদ্মার ইলিশ খাওয়ানো বাংলাদেশের সরকারের জন্য সমীচীন নয়। এ কথা সত্য যে, বাংলাদেশ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র ভারত থেকে আমদানি করে থাকে কিন্তু ভারত সরকার কখনোই তার নিজের দেশের জনগনের চাহিদা না মিটিয়ে বাংলাদেশে কোন পণ্য রপ্তানি করে না। বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানি যোগ্য কোন মাছ নয়। এমতাবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন।