সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
এক বছরে বন্দরের কাজের অগ্রগতি বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ। ঢিমেতালে চলছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ। ২০২৩ সালে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজের অগ্রগতি ছিল ২২ শতাংশ। একবছর পরে এসে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশে। অর্থাৎ এক বছরে কাজের অগ্রগতি বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় সরকার। প্রথম দফায় ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের মেয়াদ ধরা হয়। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট প্রকল্পের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ (বিইউসিজি)। কিন্তু কাজ শুরুর পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ে। কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ইয়োসিন-হিরিম জেবি দিয়ে করানো সেই ভুল নকশায় কাজ হলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির সক্ষমতা আরও কমে যাবে। পণ্য পরিবহনেও দীর্ঘদিনের জটিলতাসহ পোহাতে হবে নানা ভোগান্তি। তাই নতুন করে নকশা পরিকল্পনা করে কাজের মেয়াদ আরও বাড়ায় বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। দুই দফা বাড়িয়ে এর মেয়াদ ধরা হয় ২০২৩ সালের ২৭ মে পর্যন্ত। তবুও শেষ হয়নি। তৃতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
কিন্তু প্রকল্পের নতুন মেয়াদের একবছর পরে এসে কাজের অগ্রগতি বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ। এ অবস্থায় শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কাজের অগ্রগতি দেখতে সিলেটে আসেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। পরিদর্শনকালে তিনি প্রকল্পটির সুপারভিশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতিবিনিময় করেন তিনি।
এসময় বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ২০২০ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির কাজ এখন পর্যন্ত ২২.৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এটি আশাব্যঞ্জক সত্যি। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৫ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আশা করা হচ্ছে এই সময়ের মধ্যে পুরোদমে টিমওয়ার্ক করলে কাজ শেষ হয়ে যাবে। বড়জোর আরও ছয় মাস বেশি লাগতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতা আমাদের একটি নতুন দেশের স্বপ্ন দেখিয়েছে। আশা করছি এখন আমরা সবাই মিলে অনেক কিছু করতে পারবো, দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে বড় বড় প্রকল্পের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা শুরু করছি। এরমধ্যে একটি ওসমানী বিমানবন্দরের কাজ। আমি আগে দায়িত্বে ছিলাম না। তাই আগে কী হয়েছে সে বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছি না। তবে এবার এই কাজের জবাবদিহিতা থাকবে।
বিমানবন্দরের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, বিমানবন্দরের আশপাশের কিছু জমি এখনো আমাদের হাতে আসেনি। জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। নকশায়ও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রকল্পের কাজটি শেষ হয়ে গেলে উন্নত দেশগুলোর মতো এটি একটি অত্যাধুনিক বিমানবন্দরে রূপ নেবে।
মেয়াদ বাড়ায় প্রকল্প ব্যয় বাড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগে যে বাজেট দিয়েছে, এখন সেই বাজটে থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। সময় বেড়েছে বাজেটও কিছুটা বাড়তে পারে। তবে কী পরিমাণ ব্যয় বাড়বে তা এখনো সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।