ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলা জয়শ্রী ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ও বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা রুনা আক্তার (৩০), তাঁর স্বামী রইস উদ্দিন (৪০) ও তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রী জাহানারা বেগম (৪০) কে মারধর করা হয়েছে।। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বৃহ¯পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ১০টার মধ্যে বাখরপুর গ্রামের সামনের সড়কে এই ঘটনা ঘটে। আহত ওই তিনজন ওইদিন দুপুরে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী আবারক হোসেন তালুকদারের ছেলে অপূর্ব তালুকাদার (২০)। তিনি এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়–য়া ছাত্রীদের অনুমতি না নিয়ে প্রকাশ্যে তাদের ছবি তোলাসহ দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে ইভটিজিং করে আসছেন। ইভটিজিং করা নিয়ে বেশ কয়েকবার বাখরপুর গ্রামে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। ছাত্রীদের ইভটিজিং করা নিয়ে গত বুধবার সন্ধ্যায় বাখরপুর গ্রামের সামনের সড়কে অপূর্বের সঙ্গে একই গ্রামের আরিফ মিয়ার (২২) তর্ক-বিতর্ক হয়। এ সময় সেখানে যান একই গ্রামের বাসিন্দা রইস উদ্দিন (৪০)। তিনি অপূর্বের উদ্দেশ্যে বলেন, ভবিষ্যতে আর কোনো মেয়ের সঙ্গে ইভটিজিং করলে এর পরিণাম ভালো হবে না। আরিফ ও অপূর্ব তখন নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান। গতকাল বৃহ¯পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রইস উদ্দিন নিজ গ্রামের সামনে থাকা ডহর গাং জলাশয়ে মাছ কিনতে রওয়ানা হন। অপূর্বদের বাড়ির সামনের সড়কে আসা মাত্রই ক্যাবলের তার দিয়ে অপূর্ব (২০) ও তার ছোটভাই অভি তালুকদার (১৮) রইস উদ্দিনকে মারধর করেন। খবর পেয়ে রইস উদ্দিনের ভাবী জাহানারা সেখানে গেলে তাকেও ক্যাবলের তার দিয়ে তারা মারধর করে। পরে ঘটনাস্থলে যান সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রুনা আক্তার। কেন তাদেরকে অযথা মারধর করা হলো এর কারণ স¤পর্কে তিনি জানতে চান। পিছু পিছু বাঁশের লাঠি নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন অপূর্ব ও অভির মা শিউলী আক্তার (৪০)। তিনি নারী ইউপি সদস্যের পিঠে লাঠি দিয়ে আঘাত করে সেখান থেকে তারা নিজ বাড়িতে চলে যান।
অপূর্ব ও অভির মা শিউলী আক্তার বলেন, আমার ছেলে অপূর্ব ইভটিজিং করেনি। আমরা কাউকে মারধর করিনি। এগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট।
আহত ইউপি সদস্য রানু আক্তার বলেন, উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমি নিজেও মারধরের শিকার হয়েছি। অপূর্ব ইভটিজিং করার কারণে আমাদের গ্রামের বেশ কয়েকজন হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুলে পড়–য়া ৮/১০ জন ছাত্রীরা গত দুই মাস ধরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত করলে এর সত্যতা পাওয়া যাবে। মারধরের ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করব।
উপজেলার জয়শ্রী ইউপি চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী বলেন, অপূর্বের কাছে আমার ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের কোনো মেয়েই নিরাপদ নয়। কিছুদিন আগেও উত্ত্যক্ত করা নিয়ে থানায় মামলা করতে চেয়েছিল এক স্কুল ছাত্রীর বাবা। পরে অপূর্বের স্বজনদের অনুরোধ এবং ভবিষ্যতে আর কোনো মেয়েকে উত্ত্যক্ত করবে না বলে অঙ্গীকার করায় ঘটনাটি মামলা পর্যন্ত এগোয়নি।
ধর্মপাশা থানার ওসি এনামুল হক বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।