গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে জানা যায় : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়, ১৪ আগস্ট সালমান এফ রহমান গ্রেফতার হওয়ার পরে ১ সেপ্টেম্বর বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এবং ২২ আগস্ট সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এখানে একই সঙ্গে দুইটি সরকারি সংস্থার ব্যর্থতার বিষয় উঁকি মারছে। গণঅভ্যুত্থানের আগে অর্থ পাচারের বিষয়টির অনুসন্ধান কেন শুরু করতে পারেনি সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এবং সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জানা কথা, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মে পণ্য রপ্তানি হওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে রপ্তানি আয় দেশে আনতে হয়। আর তা না হলে অর্থ পাচার আইনে ওই রপ্তানিকারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বেক্সিমকোর ক্ষেত্রে নিয়মানুসারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আরও জানা গেছে, গত ১২ বছর ধরে পণ্য রপ্তানি করে সেই আয় দেশে না আনা হয়নি। এটি একটি বড় ধরণের অনিয়ম ও অপরাধ, যে-অনিয়ম ও অপরাধটি করা হয়েছে রাষ্ট্র-ব্যবস্থার ভেতর থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বাগিয়ে নিয়ে। এর পেছনে অর্থ পাচারের উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনও কারণ ছিল না। বিদেশ থেকে রপ্তানির অর্থ না আসার পরও জনতা ব্যাংক প্রতষ্ঠানটিকে যে-ভাবে অর্থ দিয়ে গেছে, ব্যাংকের বিরুদ্ধে সেটিও একটি অপরাধ।
আমরা মনে করি, এই অপরাধ রাজনীতিক, আমলা ও ব্যবসায়ী এই তিন শ্রেণির যোগসাজশে সম্পন্ন হয়েছে। এই কারণে রাষ্ট্রব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার চাই, এমন একটি সংস্কার, যা রাষ্ট্রব্যবস্থার ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা এইরকম দুর্নীতিবাজদের সমূলে নির্মূল করতে পারে। এই অপরাধের সঙ্গে বেক্সিমকো ও ব্যাংকের যাঁরা যাঁরা জড়িত, তাঁদের শাস্তি হওয়াা উচিত। প্রয়োজনে বেক্সিমকোর সম্পদ বিক্রি করে হলেও অর্থ আদায়ে কার্যকর সব ধরণের ব্যবস্থা নিতে হবে, তা না হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আকাক্সক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে বৈষম্য কেবল বাড়িয়েই তোলবে।