স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের এক জীর্ণ কুঁড়েঘরে প্রতিদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত জামাল উদ্দিন (৪৫)। মরহুম ফয়েজ আহমদের ছেলে জামাল দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। চিকিৎসা তো দূরের কথা, নিয়মিত ওষুধ কেনার সামর্থ্যও নেই তার পরিবারের।
জামাল উদ্দিনের সংসারে রয়েছে স্ত্রী ও তিনটি অবুঝ ছোট সন্তান। উপার্জনক্ষম একমাত্র মানুষটি যখন অসহায়ভাবে বিছানায় পড়ে আছেন, তখন পরিবারটিও পড়েছে চরম মানবেতর জীবনে। স্থানীয়দের সহানুভূতিশীল সহযোগিতায় কোনোভাবে দিন কাটলেও প্রতিদিনের আহার জোটে না অনেক সময়। অন্ন-বস্ত্রহীন এই পরিবারটি একটি জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরেই আশ্রয় নিয়েছে।
অসুস্থ শরীর নিয়েই সম্প্রতি প্রতিবেশীদের সহায়তায় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে সরকারি অনুদানের জন্য আবেদন করেন জামাল উদ্দিন। এদিকে, চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটাতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে নেওয়া ঋণের চাপে মাথাগোঁজার শেষ আশ্রয়টুকুও হারাতে বসেছে পরিবারটি।
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জামাল উদ্দিনের একমাত্র চাওয়া জীবিত থাকতেই সমাজসেবার অনুদান হাতে পাওয়া। কারণ তিনি জানেন, তারপরে এই অসহায় সন্তানদের দেখার মতো আর কেউ নেই।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জামাল উদ্দিন বলেন, আমি আমার পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারিনি। অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো ওষুধও খেতে পারছি না। জানি, আমি আর বাঁচবো না। কিন্তু আমার চোখের সামনে যখন আমার ছোট ছোট সন্তানরা না খেয়ে থাকে, তখন বুক ফেটে যায়। আমি মারা গেলে ওদের কে দেখবে? আমি শুধু চাই, আমার সন্তানরা যেন অন্তত অন্নবস্ত্র পেয়ে মানুষ হতে পারে। সরকারের অনুদানটাই আমার শেষ আশা।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুচিত্রা রায় জানান, আগামী ১৭ ডিসেম্বর সভায় বিষয়টি অনুমোদন হলে জামাল উদ্দিনকে অনুদান প্রদান করা হবে।