গত শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪) গণমাধ্যমান্তরে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “গাবতলী টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণে দরপত্র ‘কারসাজি’র চেষ্টা বিএনপির নেতাকর্মীদের”। এমন নানাবিধ প্রচেষ্টা বিভিন্ন পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশও হচ্ছে সেসব খবর। যেমন হাসিনা সরকারের পতনের পরের মুহূর্তেই হাত বদল হয়েছে চাঁদাবাজির বিশেষ বিশেষ এলাকা, চর-নদী দখলের মতো দখল হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পদ-পদবি ও আধিকারিত্ব। অনেকে মনে করেন, সরকারি চাকরিতে চলমান পদায়নের বিষয়টিও তার বহির্ভূত নয়। আর্থাৎ ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানোত্তর সময়ের পরিসরে অন্তর্বর্তী সরকারের ভালোভাবে গুছিয়ে বসার আগের নাজুক সময়কে ব্যবহার করে প্রায় প্রতিটি আর্থনীতিক, সমাজিক ও সাংস্কৃতিক খাত-স্তর-পর্যায়ে এমন দখল-নিয়ন্ত্রণ-আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এটি মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা একটি স্বার্থান্বেষী প্রবণতা। ব্যক্তিমালিকানার ভিতের উপর টিকে থাকা পুঁজিবাদী আর্থসামাজিক ব্যবস্থার পরিসরে সমাজের সকল মানুষের ভেতরে যা স্বাভাবিকভাবেই উৎপন্ন হয়ে প্রকারান্তরে মানুষের শ্রেণিচেতনার নিরিখে ব্যক্তিকে গড়ে তোলে এবং পরিণতিতে সমাজে শ্রেণিবৈষম্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শ্রেণিবৈষম্যকে টিকিয়ে রেখে কোনও সমাজকে বৈষম্যহীন সমাজে পর্যবসিত করা যায় না, অন্তত আর্থনীতিক দিক থেকে তো নয়ই। বৈষম্যহীন সমাজ বানানোর জন্য চাই সমাজ থেকে ধনী-দরিদ্র্যের ব্যবধান ঘুচিয়ে দেওয়া এবং সেটা নিশ্চিত করতে চাই মানুষে মানুষে বিদ্যমান সম্পদবৈষম্য দূর করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাজনীতিক আন্দোলন, যে আন্দোলন সমাজ থেকে আর্থনীতিক বৈষম্য দূর করার সূত্রপাত করবে ও সামাজিক রাজনীতিক বৈষম্য নিরসন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানোত্তর দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এখনও অব্যাহত আছে। এই আন্দোলনকে রাজনীতিক আদর্শে আদর্শায়িত হয়ে অব্যাহত গতি দিলেই কেবল চলবে না, তাকে তার রাজনীতিক লক্ষ্য অর্জনে অচিরেই একটি শক্তিশালী সংগঠনে পর্যবসিত হতে হবে। সব কথার সারকথা, এই মুহূর্তে আমাদের আর্থনীতিক অবস্থার পরিবর্তন চাই, যে-পরিবর্তন দেশে বৈষম্যনিরসনের সূচনা করবে, রাজনীতির মঞ্চে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন কিংবা পদায়নকে বাস্তব করে তোলবে। তা হলেই কেবল, “গত ৫ আগস্টের পর টার্মিনালের বিভিন্ন খাত থেকে খাস আদায়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা” এবংবিধ বিভিন্ন অভিযোগ সংবাদ আকারে গণমাধ্যমান্তরে প্রকাশিত হবে না।