সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
শোকজ, বহিষ্কার ও মামলা দেওয়ার পরও থামানো যাচ্ছে না বিশৃঙ্খলা। বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠছে। অনেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল ও আওয়ামী সুবিধাভোগীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এসবের তালিকা করে দলের অপকর্মকারীদের ফিরিস্তি পাঠানো হচ্ছে লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। একই সঙ্গে যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিগত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তাদের তালিকাও করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের নেতারা এসব তালিকা করছেন। যেখানে বেশিরভাগ বড় পদধারী নেতাদের নামে বিস্তর অভিযোগ উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্যের সত্যতা স¤পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও দখলদারিসহ নানা অপকর্মে জড়িতদের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে বিশেষ সেল করেছে বিএনপি। সেলের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে যত ঘটনা ঘটেছে তার কোনোটিই প্রশ্রয় দেয়নি বিএনপি। যাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে তাদেরকেই দল থেকে শোকজ, ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক না হলে করা হয়েছে বহিষ্কার। আবার কারও কারও বিরুদ্ধে বিএনপির পক্ষ থেকেই করা হয়েছে মামলা। ইতিমধ্যে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০টি এজাহারও দায়ের করা হয়েছে। দলের নাম ব্যবহার করে অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার কিংবা পদ স্থগিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া অনেককে শোকজ করা হয়েছে। এ তালিকায় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক স¤পাদক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছেন। সবশেষ গত বৃহ¯পতিবার সাধারণ মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রুহুল আমিন দুলালকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক স¤পাদক এখলাছুজ্জামান ভূঁইয়া ও যুবদলের তিন নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সু¯পষ্ট বার্তা-কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, অনৈতিক, অপকর্ম, উচ্ছৃঙ্খল কর্মকা- বরদাস্ত করা হবে না। সে দলের যে কোনো পর্যায়ের নেতাই হোক না কেন। যারাই অপকর্মে জড়িত হবে তাদের বিরুদ্ধে দলের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু শোকজ আর বহিষ্কারই নয়, সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি নেওয়া হচ্ছে আইনি পদক্ষেপও।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজকারীরা আওয়ামী লীগ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী। এখনও বিএনপির নামে এই চাঁদাবাজি, বিভিন্নরকম কথা আসছে। আমরা ¯পষ্ট করে বলতে চাই, এরা কিন্তু বিএনপি নামে অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন লোকজন। এখন নতুন কাউকে দলে প্রবেশ না করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ এরা আওয়ামী লীগের, এরা এখন দলে ঢোকার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাংগঠনিক সফরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা পরিহার করতে বলা হয়েছে। সে সঙ্গে রঙিন ব্যানার-ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনের ওপরে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। এরপর থেকে এলাকায় এলাকায় এমন চিত্র কমতে শুরু করেছে।