কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তাহিরপুরে বহালের দাবিতে স্মারকলিপি

আপলোড সময় : ০১-১২-২০২৫ ১১:৩৭:৪৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০১-১২-২০২৫ ১১:৩৭:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: তাহিরপুর উপজেলায় অনুমোদিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) তাহিরপুরেই বহালের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর প্রকল্প পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন তাহিরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) বাস্তবায়ন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। রবিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার কার্যালয়ে গিয়ে তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাহিরপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব সুহেল আলম, বিএনপি নেতা দ্বীন মোহাম্মদ, হাওর বাঁচাও আন্দোলন তাহিরপুর শাখার সভাপতি মুসাহেল আহমদ, সাধারণ সম্পাদক তুজাম্মিল হক নাসরুম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান রাজু প্রমুখ। এর আগে গত শনিবার সকালে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে হাওর বাঁচাও আন্দোলন, তাহিরপুর ও সচেতন তাহিরপুরবাসীর উদ্যোগে তাহিরপুরে কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র বহালের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত এক প্রত্যন্ত জনপদের নাম তাহিরপুর। ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলার সদর ইউনিয়ন ছাড়া অন্য কোনো ইউনিয়নের সাথে নেই সরাসরি সড়ক যোগাযোগ। প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষের উপজেলায় নেই কোনো ¯œাতকোত্তর প্রতিষ্ঠান। দুটি কলেজে মাত্র ¯œাতক (পাস) কোর্স চালু রয়েছে। একটি সরকারি স্কুল থাকলেও এখানে থাকতে চান না, কোনো শিক্ষক। দুটি আলিম ও দুটি দাখিল মাদরাসা রয়েছে, নেই ফাজিল, কামিল মাদরাসা। নেই সরকারি বা বেসরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র। এ উপজেলার সিংহভাগ জনগণের পেশা কৃষি। বছরে একটি মাত্র ফসল হয়। এই ফসলের উপরই ভরসা হাওরবেষ্টিত উপজেলাবাসীর। ধান রোপণ ও ফসল কাটার সময় কিছুটা কাজের সুযোগ পায় শ্রমিকরা। এছাড়া বালু ও কয়লা শ্রমিকেরাও নানা কারণে বছরের বেশিরভাগ সময় কর্মহীন থাকেন। পেট চালানো যেখানে দায় সেখানে সন্তানদেরকে জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে লেখাপড়া করানোর সাধ্য তাদের হয়ে উঠে না। কাজ না থাকলে, তাদেরকে পরিবার-পরিজন নিয়ে শহরে গিয়ে রিকশা চালানো কিংবা পোশাক কারখানায় ছুটতে হয়। এতে করে শিশুদের পড়াশোনায় চরম ব্যাঘাত ঘটে। ফলে এই উপজেলায় গড় শিক্ষার হার মাত্র ৩১.২ ভাগ। বঞ্চিত তাহিরপুরবাসীর বেকার সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রাখতে তৎকালীন সরকার, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট একনেকে পাশ হওয়া ৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পে, তাহিরপুর উপজেলার নাম রেখেছিল। এতে আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম যে এবার তাহিরপুরের যুবক-যুবতীরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। সেই সাথে দূর হবে বেকারত্ব নামক অভিশাপ। বেকার সমস্যা দূর হলে, অভিভাবকগণ একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন। এরপর গত ১৪ আগস্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে ভূমি মালিকদের চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আমরা জানতে পারি, প্রকল্প থেকে তাহিরপুর উপজেলার নাম কর্তন করে সেটি নাকি জগন্নাথপুর উপজেলায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এ খবর পাবার পর থেকে হওরপাড়ের উপজেলাবাসী খুবই মর্মাহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যমে নিজেদের বঞ্চিত হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসহ নাগরিক নানা সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত, পিছিয়ে থাকা আমাদের তাহিরপুরবাসীর স্বপ্নটুকু কেড়ে না নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। জগন্নাথপুর থেকে খুব সহজে বিভাগীর শহর সিলেটে গিয়ে প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সহজ, যা তাহিরপুর উপজেলার দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত জনগণের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ অবস্থায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি তাহিরপুরে বহালের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট, একনেকে দেশের ৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলাও ছিল। ৩ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এ প্রকল্পগুলো, ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাহিরপুরে আর টিটিসি নির্মিত হচ্ছে না। এই টিটিসি কেন্দ্রটি, জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় স্থানান্তরের প্রস্তাব চূড়ান্ত করে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে ভবন নির্মাণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com