স্টাফ রিপোর্টার ::
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টায় শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড. বিমান কান্তি রায়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, সুখেন্দু সেন, দেবব্রত দাস, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি অ্যাড. গৌরাঙ্গপদ দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. রাধাকান্ত সূত্রধর, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ স¤পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, পূজা বিষয়ক সম্পাদক নারায়ণ চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য শুভব্রত বসু, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি প্রণব কান্তি দাশ, সাধারণ স¤পাদক বিপ্রেশ কুমার রায় বাপ্পী, প্রদীপ কুমার চৌধুরী আঁচল, সাবেক পৌর কাউন্সিলর কলি তালুকদার আরতি, ঝন্টু তালুকদার।
সভা সঞ্চালনা করেন জেলা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিমল বণিক।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার লোহ, রানু দাস, স্বাধীন চৌধুরী, রিপন তালুকদার, স্বপন কুমার বর্মণ, অরুণ অধিকারী, অজিত কুমার রায়, সাবেক পৌর কমিশনার মতি লাল চন্দ, কালীপদ দাস, মিন্টু চৌধুরী, অ্যাড. দীপংকর বণিক, মধু রায়, মহিতোষ চৌধুরী, কর্ণ বাবু দাস, মানিক লাল রায়। সভার শুরুতে গীতা থেকে পাঠ করেন অমিত চক্রবর্তী।
বক্তারা বলেন, দুর্গাপূজা চলাকালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবারের মতো আমরা নির্ভয়ে পূজা করতে চাই, এটা নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, পূজাম-পে অনাকাক্সিক্ষত কোনো বিষয় ফেসবুকে প্রচার করতে পারবে না। পূজাম-পের যেকোনো সমস্যা ম-পের নির্দিষ্ট লোককে প্রথমেই জানাতে হবে। তারা আরও বলেন, মসজিদের নামাজের সময় সূচি আমরা প্রতিটি ম-পে সাঁটিয়ে রাখবো। ওই সময়টুকু আমরা সাময়িকভাবে বাদ্যযন্ত্র বন্ধ রাখবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, সবকিছু নিরাপদ রাখতে গুজবকে প্রতিরোধ করতে হবে। গুজব একটি আতঙ্ক। গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পূজাম-পে যদি কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়, সাথে সাথে পূজাম-পের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে জানাবেন। তারা সমস্যা সমাধান করতে না পারলে আমাদেরকে ডাকবেন। আপনাদের পাশে সার্বক্ষণিক পুলিশ আছে। আপনারা নির্ভয়ে পূজা অনুষ্ঠান পরিচালনা করুন, কোনো সমস্যা নেই।
সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনার আলোকে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সকল পূজা কমিটির করণীয় বিষয় পাঠ করা হয়। এতে বলা হয়েছে- ১। প্রতিমা তৈরি থেকে পূজা সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি পূজা ম-পে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক/পাহারাদারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন। ২। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন করুন। ৩। পূজাম-পে নারী ও পুরুষের পৃথক যাতায়াত ব্যবস্থা রাখুন। ৪। কোনরূপ আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং অতিরিক্ত আলোকসজ্জা থেকে বিরত থাকুন। ৫। পূজাম-পে আবশ্যিকভাবে সিসি ক্যামেরা সংযোগের ব্যবস্থা করুন এবং ফুটেজ সংরক্ষণ করুন। ৬। ভক্তিমূলক সংগীত ব্যতীত অন্য সংগীত বাজানো থেকে বিরত থাকুন এবং উচ্চ শব্দের পি.এ সেট ও ডিজে ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, এ ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং আযান ও নামাজের সময়সূচির প্রতি মনযোগী থাকতে হবে। ৭। পূজাম-প সংলগ্ন এলাকায় এবং বিসর্জনস্থলে পর্যাপ্ত আলোর (জেনারেটরসহ) ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখুন। ৮। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আলাপ আলোচনা করে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান ও সময় নির্ধারণ করুন। প্রতিমা নিরঞ্জনে শোভাযাত্রা পরিহার করুন। ৯। পূজা চলাকালীন রাত ১১.৩০ ঘটিকায় পূজাম-প বন্ধ করুন। ১০। কোন প্রকার গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে অনাকাক্সিক্ষত যেকোন ঘটনার সংবাদ তাৎক্ষণিকভাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ/জেলা প্রশাসন ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বহিনীকে অবহিত করুন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা/উপজেলা/পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সহিত যোগাযোগসহ জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে জানানো হয়।
সভা শেষে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় বিমল বণিককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ।