শহীদনূর আহমেদ::
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী হাওয়া বইছে হাওর জেলা সুনামগঞ্জে।
গত ৩ নভেম্বর ২৩৭টি আসনের সাথে সুনামগঞ্জের ৫টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে ৩টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি)। প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে জেলার ৩টি আসনেই প্রকাশ্যে আসছে বিএনপির বিভক্তি। প্রতিটি আসনেই দল মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন না জানিয়ে পৃথকভাবে করছেন সভা, সমাবেশ, মিছিল করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত একাধিক প্রার্থী। চূড়ান্ত মনোনয়নের আশায় দলের হাইকমান্ডে লবিং জোরদার করেছেন অনেকে।
দলীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ক্ষমতার পালা বদলে বিএনপি অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে একাধিক বলয়। ফলে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি নির্বাচনী আসনে দলের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী একাধিক প্রার্থী। বিএনপির প্রার্থিতা ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বনাম স্থানীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দ্বন্দ্বও সংগঠনে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরও চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলের নেতাতর্মীরা দ্বিধা-বিভক্ত রয়েছেন। তাই নিজেকে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগী নেতা হিসেবে দাবি করে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে পালন করছেন নানা কর্মসূচি। বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ হলে তারা জানান, জেলার প্রতিটি আসনেই রয়েছেন বিএনপির একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের রয়েছে নিজস্ব বলয়। তাই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে মনোনয়ন বঞ্চিতদের কেউ কেউ বিদ্রোহী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-মধ্যনগর) বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক। মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনী এলাকা প্রচারণায় চষে বেড়াচ্ছন তিনি। সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও শোডাউনের মাধ্যমে ভোটারদের জানান দিচ্ছেন নিজের অবস্থান। অপরদিকে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন না জানিয়ে পৃথকভাবে সমাবেশ করছেন একই আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, কেন্দ্রীয় যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান।
চূড়ান্ত মনোনয়নে মূল্যায়ন পতে সভা, সমাবেশ ও শোডাউনের মাধ্যমে দলের হাইকমান্ডকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা। ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনে দু’জনের কেউ একজন হতে পারে বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, তিনি দলের জন্য কাজ করছেন। চূড়ান্ত মনোনয়নে নিজের প্রার্থিতা দাবি করে কর্মসূচি করলে দলের বিপক্ষে কোনো ভূমিকা রাখেননি বলে জানান তিনি।
এদিকে দলের বিজয় নিশ্চিতে সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এই আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। ধারণা করা হচ্ছে আসনটি জোটের জন্য ছাড় দেয়া হতে পালে। যদিও বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা চূড়ান্ত মনোনয়নে সুনামগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী দিবে। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন চারজন প্রার্থী।
তারা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাছির উদ্দীন চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী রুমি ও যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ।
জোট কিংবা দলীয় প্রার্থী প্রত্যাশিত না হলে এই আসনেও বিদ্রোহী প্রার্থীর আভাস মিলছে। সুনামগঞ্জ-৩ (শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কয়ছর এম আহমদ। মনোনয়ন ঘোষণার পর পর দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ব্যারিস্টার আনোয়ান হোসেন।
তিনি বলেন, আমি জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মানুষের চাপ আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। এছাড়াও চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা না আসা পর্যন্ত নির্বাচনী আসনে পৃথকভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নাদীর আহমদ। তবে চূড়ান্ত তালিকায় দল যে সিদ্ধান্ত দিবে তাই মানবেন বলে জানান তিনি।
অপরদিকে, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে নিজেদের কোনো প্রার্থী ঘোষণা না দেয়ায় অস্থিরতা বিরাজ করছে বিএনপি নেতাকর্মীর মাঝে। দলের একাধিক হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় বেড়েছে বিভেদ। নিজ বলয়ে প্রতিদিনই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন অন্তত ৫ জন। তারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, অ্যাডভোকেট আব্দুল হক ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নূরুল ইসলাম নূরুল, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল হক আছপিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার আবিদুল হক আবিদ ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল মনসুর মো. শওকত।
তারা প্রত্যেকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন পর্যন্ত নিজেকে এগিয়ে রাখছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলীয় কোন্দল সক্রিয় থাকায় ধারণা করা হচ্ছে মনোনয়নবঞ্চিত যে কেউ এই আসনে হতে পারেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে সেটি দলের প্রার্থিতার উপর নির্ভর করবে বলে জানাগেছে।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড. নূরুল ইসলাম নূরুল জানান, সদর-বিশ্বম্ভরপুর হচ্ছে জেলার সদর দপ্তর। অতীতের সকল আন্দোলন এখান থেকে নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। তৃণমূল বিএনপির প্রত্যাশা সদর আসন থেকে দলের ত্যাগী ও যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিবে হাইকমান্ড। আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং দলের জন্য কাজ করছি। আমার বিশ্বাস দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) আসনে বিনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক তিন বারের সংসদ সদস্য, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। বিগত সময়ে দলকে নেতৃত্ব দেয়া ও আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখায় মিলনকে মূল্যায়ন করা হলেও ক্ষুব্ধ এই আসনে দলের একমাত্র হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরীর অনুসারীরা।
২০১৮ সালের কঠিন সময়ে দলের মনোনয়ন পেলেও এবার মিজানকে মূল্যায়ন না করায় হতাশ তার সমর্থকরা। ইতোমধ্যে প্রার্থিতার দাবিতে গোবিন্দগঞ্জ-সিলেট সড়কে বিক্ষোভ ও শোডাউন করেছেন মিজানের অনুসারীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে নিজের প্রার্থিতা পুনঃমূল্যায়ন করতে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মিজানুর রহমান চৌধুরী।
চূড়ান্ত মনোনয়নে প্রার্থিতা বঞ্চিত হলে মিজান বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা না দিলেও তার অনুসারীরা মনে করেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এদিকে, মান-অভিমান ভুলে দলের পক্ষে কাজ করতে মিজানকে আহ্বান জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রাপ্ত কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী হাওয়া বইছে হাওর জেলা সুনামগঞ্জে।
গত ৩ নভেম্বর ২৩৭টি আসনের সাথে সুনামগঞ্জের ৫টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে ৩টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণা করে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি)। প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে জেলার ৩টি আসনেই প্রকাশ্যে আসছে বিএনপির বিভক্তি। প্রতিটি আসনেই দল মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন না জানিয়ে পৃথকভাবে করছেন সভা, সমাবেশ, মিছিল করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত একাধিক প্রার্থী। চূড়ান্ত মনোনয়নের আশায় দলের হাইকমান্ডে লবিং জোরদার করেছেন অনেকে।
দলীয় সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ক্ষমতার পালা বদলে বিএনপি অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে একাধিক বলয়। ফলে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি নির্বাচনী আসনে দলের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী একাধিক প্রার্থী। বিএনপির প্রার্থিতা ঘোষণার পর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বনাম স্থানীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দ্বন্দ্বও সংগঠনে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরও চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলের নেতাতর্মীরা দ্বিধা-বিভক্ত রয়েছেন। তাই নিজেকে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগী নেতা হিসেবে দাবি করে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে পালন করছেন নানা কর্মসূচি। বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ হলে তারা জানান, জেলার প্রতিটি আসনেই রয়েছেন বিএনপির একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের রয়েছে নিজস্ব বলয়। তাই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপরীতে মনোনয়ন বঞ্চিতদের কেউ কেউ বিদ্রোহী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-মধ্যনগর) বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক। মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনী এলাকা প্রচারণায় চষে বেড়াচ্ছন তিনি। সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও শোডাউনের মাধ্যমে ভোটারদের জানান দিচ্ছেন নিজের অবস্থান। অপরদিকে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন না জানিয়ে পৃথকভাবে সমাবেশ করছেন একই আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, কেন্দ্রীয় যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান।
চূড়ান্ত মনোনয়নে মূল্যায়ন পতে সভা, সমাবেশ ও শোডাউনের মাধ্যমে দলের হাইকমান্ডকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা। ধারণা করা হচ্ছে নির্বাচনে দু’জনের কেউ একজন হতে পারে বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, তিনি দলের জন্য কাজ করছেন। চূড়ান্ত মনোনয়নে নিজের প্রার্থিতা দাবি করে কর্মসূচি করলে দলের বিপক্ষে কোনো ভূমিকা রাখেননি বলে জানান তিনি।
এদিকে দলের বিজয় নিশ্চিতে সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান এই আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাহবুবুর রহমান।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে বিএনপি কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। ধারণা করা হচ্ছে আসনটি জোটের জন্য ছাড় দেয়া হতে পালে। যদিও বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা চূড়ান্ত মনোনয়নে সুনামগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী দিবে। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন চারজন প্রার্থী।
তারা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাছির উদ্দীন চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী রুমি ও যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ।
জোট কিংবা দলীয় প্রার্থী প্রত্যাশিত না হলে এই আসনেও বিদ্রোহী প্রার্থীর আভাস মিলছে। সুনামগঞ্জ-৩ (শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কয়ছর এম আহমদ। মনোনয়ন ঘোষণার পর পর দলীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ব্যারিস্টার আনোয়ান হোসেন।
তিনি বলেন, আমি জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মানুষের চাপ আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। এছাড়াও চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা না আসা পর্যন্ত নির্বাচনী আসনে পৃথকভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি নাদীর আহমদ। তবে চূড়ান্ত তালিকায় দল যে সিদ্ধান্ত দিবে তাই মানবেন বলে জানান তিনি।
অপরদিকে, সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে নিজেদের কোনো প্রার্থী ঘোষণা না দেয়ায় অস্থিরতা বিরাজ করছে বিএনপি নেতাকর্মীর মাঝে। দলের একাধিক হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় বেড়েছে বিভেদ। নিজ বলয়ে প্রতিদিনই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন অন্তত ৫ জন। তারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, অ্যাডভোকেট আব্দুল হক ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নূরুল ইসলাম নূরুল, সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুল হক আছপিয়ার ছেলে ব্যারিস্টার আবিদুল হক আবিদ ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল মনসুর মো. শওকত।
তারা প্রত্যেকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন পর্যন্ত নিজেকে এগিয়ে রাখছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলীয় কোন্দল সক্রিয় থাকায় ধারণা করা হচ্ছে মনোনয়নবঞ্চিত যে কেউ এই আসনে হতে পারেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে সেটি দলের প্রার্থিতার উপর নির্ভর করবে বলে জানাগেছে।
সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী অ্যাড. নূরুল ইসলাম নূরুল জানান, সদর-বিশ্বম্ভরপুর হচ্ছে জেলার সদর দপ্তর। অতীতের সকল আন্দোলন এখান থেকে নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। তৃণমূল বিএনপির প্রত্যাশা সদর আসন থেকে দলের ত্যাগী ও যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিবে হাইকমান্ড। আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং দলের জন্য কাজ করছি। আমার বিশ্বাস দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) আসনে বিনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক তিন বারের সংসদ সদস্য, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। বিগত সময়ে দলকে নেতৃত্ব দেয়া ও আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রাখায় মিলনকে মূল্যায়ন করা হলেও ক্ষুব্ধ এই আসনে দলের একমাত্র হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরীর অনুসারীরা।
২০১৮ সালের কঠিন সময়ে দলের মনোনয়ন পেলেও এবার মিজানকে মূল্যায়ন না করায় হতাশ তার সমর্থকরা। ইতোমধ্যে প্রার্থিতার দাবিতে গোবিন্দগঞ্জ-সিলেট সড়কে বিক্ষোভ ও শোডাউন করেছেন মিজানের অনুসারীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে নিজের প্রার্থিতা পুনঃমূল্যায়ন করতে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মিজানুর রহমান চৌধুরী।
চূড়ান্ত মনোনয়নে প্রার্থিতা বঞ্চিত হলে মিজান বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা না দিলেও তার অনুসারীরা মনে করেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এদিকে, মান-অভিমান ভুলে দলের পক্ষে কাজ করতে মিজানকে আহ্বান জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রাপ্ত কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন।